মোমবাতি কীভাবে জ্বলে, বিজ্ঞান কী বলে?

প্রতীকী ছবি

মোমবাতি অতিপরিচিত একটি বস্তু। বিভিন্ন কারনে মোমবাতি জ্বালানোর প্রয়োজন পড়ে আমাদের। কিন্তু কীভাবে জ্বলে এই মোমবাতি?

 

মোমবাতির জ্বলন আমাদের কাছে খুবই  সাধারণ ঘটনা মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কার্যকারণ।

 

মোমবাতি তৈরি করা হয় মোম দিয়ে। মোমের মধ্যে রয়েছে হাইড্রোকার্বন নামে একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ। 

হাইড্রোজন ও কার্বন- এই দুটি মৌলিক পদার্থের সংযোগে গঠিত হয় হাইড্রোকার্বন। মোমবাতির ভেতরে সুতার তৈরি একটি সলতে থাকে। এতে আগুন ধরিয়ে মোমবাতি কে জ্বালানো হয়। তবে এর জ্বালানিটা হলো মোম নিজেই।

 

মোমবাতিতে আগুন দেওয়ার সাথে সাথে কী হবে? প্রথমে কঠিন মোম গলে গিয়ে তরল হবে। তারপর তরল মোম রুপান্তিরত হবে বাষ্পতে— যে বাষ্প জ্বলতে পারে।

কিন্তু মোমের বাষ্প জ্বলে কেন? 

মোমের বাষ্প মূলত দাহ্য বাতাসের সংমিশ্রনে তৈরি। হাইড্রোজনকে দাহ্য বাতাস বলা হয়।

 

দাহ্য বাতাস বা দাহ্য পদার্থগুলো আগুনের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে জ্বলে ওঠে। মোমবাতির সলতের মাথায় ওই তরল মোম উঠে আসে ম্যাজিকের মতো। তবে এটি আসলে ম্যাজিক নয়। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ক্যাপিলারি অ্যাকশন। এর ফলে কোনো তরলের সংকীর্ণ পথে প্রবাহিত হওয়ার ক্ষমতা।

 

মোমবাতির হাইড্রোকার্বনের দাহ্য বাষ্প পোড়ার ফলেই ওতে আগুন জ্বলে। বাতাসের অক্সিজেনের সাথে তরল মোম থেকে তৈরি মোমবাতির বাষ্পের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। তখন মোমবাতি থেকে আলো ও তাপ দুটোই পাওয়া যায়।

সত্যিই কী মোমের বাষ্প পোড়ার ফলেই মোমবাতির আগুন পাওয়া যায়?

 

জলন্ত মোমবাতি ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিন। তার সঙ্গে সঙ্গে একটা জ্বলন্ত দেশলাই এর কাঠি সলতের এক ইঞ্জি ওপরে ধরলে সেটা আবার দপ করে জ্বলে উঠবে। কারণ তখন মোমবাতির পলতের ওপরের দাহ্য বাষ্পে আগুন ধরে যায়। সেইসঙ্গে সলতেতেও আগুন জ্বলে উঠে। এতেই প্রমাণ হয় মোমের বাষ্প পোড়ার ফলেই মোমবাতির আগুন পাওয়া যায়।

আবার মোমবাতির আগুনের শিখায় কাচের প্লেট ধরলে দেখা যাবে প্লেটের গায়ে কালো রঙের দাগ। মোমের ভেতরে যে কার্বন রয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। মোমের ভেতরের হাইড্রোজেন বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে পুড়ে পানি তৈরি করে। সেই সাথে কার্বন আর অক্সিজেনের বিক্রিয়াতে কার্বন- ডাই- অক্সাইড গ্যাসও তৈরি হয়।

সূত্র: রসায়ন বিজ্ঞান,  বাংলাদেশ প্রতিদিন

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা হাসনাতের

» আমরা যারা ফ্যাসিস্ট বিরোধী দল আছি, তারা যেন ঐক্য ধরে রাখি: সারজিস

» সরকারের ইশারাতেই আবদুল হামিদ দেশ ছাড়েন : ভিপি নুর

» পলাশ থানা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন আলম মোল্লা

» ভোটের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চাই: মির্জা ফখরুল

» রাষ্ট্রপতির দেশ ত্যাগের দায় উপদেষ্টাদের নিতে হবে- ওসমান হাদী

» আমাদের লড়াইয়ের মূল বিষয় গণতন্ত্রের সংস্কার, যা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়ছি :মির্জা ফখরুল

» ৯ মাস পরে আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, এটা সরকারের বড় ব্যর্থতা : সারজিস

» দলের নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে এনসিপি, জানালেন নাহিদ ইসলাম

» জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও পদ ছাড়লেন স্নিগ্ধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মোমবাতি কীভাবে জ্বলে, বিজ্ঞান কী বলে?

প্রতীকী ছবি

মোমবাতি অতিপরিচিত একটি বস্তু। বিভিন্ন কারনে মোমবাতি জ্বালানোর প্রয়োজন পড়ে আমাদের। কিন্তু কীভাবে জ্বলে এই মোমবাতি?

 

মোমবাতির জ্বলন আমাদের কাছে খুবই  সাধারণ ঘটনা মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কার্যকারণ।

 

মোমবাতি তৈরি করা হয় মোম দিয়ে। মোমের মধ্যে রয়েছে হাইড্রোকার্বন নামে একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ। 

হাইড্রোজন ও কার্বন- এই দুটি মৌলিক পদার্থের সংযোগে গঠিত হয় হাইড্রোকার্বন। মোমবাতির ভেতরে সুতার তৈরি একটি সলতে থাকে। এতে আগুন ধরিয়ে মোমবাতি কে জ্বালানো হয়। তবে এর জ্বালানিটা হলো মোম নিজেই।

 

মোমবাতিতে আগুন দেওয়ার সাথে সাথে কী হবে? প্রথমে কঠিন মোম গলে গিয়ে তরল হবে। তারপর তরল মোম রুপান্তিরত হবে বাষ্পতে— যে বাষ্প জ্বলতে পারে।

কিন্তু মোমের বাষ্প জ্বলে কেন? 

মোমের বাষ্প মূলত দাহ্য বাতাসের সংমিশ্রনে তৈরি। হাইড্রোজনকে দাহ্য বাতাস বলা হয়।

 

দাহ্য বাতাস বা দাহ্য পদার্থগুলো আগুনের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে জ্বলে ওঠে। মোমবাতির সলতের মাথায় ওই তরল মোম উঠে আসে ম্যাজিকের মতো। তবে এটি আসলে ম্যাজিক নয়। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ক্যাপিলারি অ্যাকশন। এর ফলে কোনো তরলের সংকীর্ণ পথে প্রবাহিত হওয়ার ক্ষমতা।

 

মোমবাতির হাইড্রোকার্বনের দাহ্য বাষ্প পোড়ার ফলেই ওতে আগুন জ্বলে। বাতাসের অক্সিজেনের সাথে তরল মোম থেকে তৈরি মোমবাতির বাষ্পের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। তখন মোমবাতি থেকে আলো ও তাপ দুটোই পাওয়া যায়।

সত্যিই কী মোমের বাষ্প পোড়ার ফলেই মোমবাতির আগুন পাওয়া যায়?

 

জলন্ত মোমবাতি ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিন। তার সঙ্গে সঙ্গে একটা জ্বলন্ত দেশলাই এর কাঠি সলতের এক ইঞ্জি ওপরে ধরলে সেটা আবার দপ করে জ্বলে উঠবে। কারণ তখন মোমবাতির পলতের ওপরের দাহ্য বাষ্পে আগুন ধরে যায়। সেইসঙ্গে সলতেতেও আগুন জ্বলে উঠে। এতেই প্রমাণ হয় মোমের বাষ্প পোড়ার ফলেই মোমবাতির আগুন পাওয়া যায়।

আবার মোমবাতির আগুনের শিখায় কাচের প্লেট ধরলে দেখা যাবে প্লেটের গায়ে কালো রঙের দাগ। মোমের ভেতরে যে কার্বন রয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। মোমের ভেতরের হাইড্রোজেন বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে পুড়ে পানি তৈরি করে। সেই সাথে কার্বন আর অক্সিজেনের বিক্রিয়াতে কার্বন- ডাই- অক্সাইড গ্যাসও তৈরি হয়।

সূত্র: রসায়ন বিজ্ঞান,  বাংলাদেশ প্রতিদিন

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com