মেঘনা আলমের হানি ট্র্যাপ : রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশি মডেল মেঘনা আলমের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে তার হানি ট্রাপের চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। মেঘনা সিন্ডিকেট সৌদি আরবের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে ট্র্যাপে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবি করছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। দেশ ছাড়ার আগে সৌদি রাষ্ট্রদূত অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একই ধরনের অভিযোগ করে বলেছেন, মেঘনা আলম এবং তার একটি সংঘবদ্ধ চক্র তাকে হানি ট্র্যাপের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিল। এরপরই পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের পর তাকে একমাসের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। মেঘনা আলমের এমন অপতৎপরতাকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

সূত্র জানায়, মেঘনা আলমের কাজ ছিল বিভিন্ন কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা এবং তা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেওয়া। সেইসঙ্গে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়াও ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, তারা বিদেশি কোনো গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করে। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে এমন হানিট্র্যাপ করা হয়েছিলো কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, মেঘনা আলমের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও হানি ট্র্যাপ সিন্ডিকেটের সহযোগী মো. দেওয়ান সমিরকে (৫৮) গ্রেফতারের পর চাঁদাবাজির মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

 

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী সাংবাদিকদের জানান, নারীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে আসছেন আসামি দেওয়ান সমির। তার বিরুদ্ধে সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গত শুক্রবার ভাটারা থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের একটি বিশাল অংশ আসে সৌদি প্রবাসীদের কাছ থেকে। আর বাংলাদেশের যেকোনো সংকটে সৌদি আরব সবসময়ই পাশে থেকেছে। তবে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে সৌদির সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত এবং মডেল পরিচয়ধারী মেঘনা আলমকে ঘিরে। মেঘনা সিন্ডিকেট সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ট্র্যাপে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবি করছিল। এই অভিযোগ থেকেই বেরিয়ে আসে বিস্ময়কর সব তথ্য।

 

সূত্র জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের যে বিশাল সংখ্যক (৬০ লক্ষাধিক) প্রবাসী রয়েছেন তার অর্ধেকের বেশিই সৌদি আরবে কর্মরত আছেন। সৌদি আরব থেকে বৈধ চ্যানেলে বছরে প্রায় চার বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এবং অবৈধ চ্যানেলে অনুরূপ রেমিট্যান্স আসে। এছাড়া, রাজনৈতিক, অর্থনীতিক, ধর্মীয় সম্পর্ক বিচারে বাংলাদেশের কূটনীতিতে খুবই গুরুত্ব পূর্ণ একটি দেশ সৌদি আরব।

 

সূত্র জানায়, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের সঙ্গেও মেঘনার ঘনিষ্ঠতার কথা জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক, আব্দুল মোমেন ও ওয়বায়দুল কাদেরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ছাড়াও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলের সঙ্গে মেঘনার ঘনিষ্ঠতার তথ্য-প্রমাণ এখন গোয়েন্দাদের হাতে।

 

জানা গেছে, মেঘনা আলম সেলিব্রিটি শোয়ের কথা বলে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনৈতিক পাড়ার বিভিন্ন উচ্চমহলের সঙ্গে মিশতেন। আর সেই মেশার সূত্র ধরে বিভিন্নভাবে নারী সরবরাহ ও দেহ ব্যবসার একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন তিনি। ফলে আর্থিক সুবিধা, তথ্য পাচার, ভিসা তদবির এমনকি আদম পাচারের মতোও কাজও করত মেঘনা সিন্ডিকেট। সেজন্য প্রয়োজনে হাইপ্রোফাইল লোককে ব্ল্যাকমেইল করতেও দ্বিধা করতেন না মেঘনা আলম।

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা এবং অর্থনৈতিকভাবে দেশের ক্ষতি সাধনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মেঘনাকে আটক করা হয়েছে।

 

পুলিশের সূত্র জানায়, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে পরিচিতি ও সখ্যতা গড়ে তুলে ছবি তুলতেন মেঘলা। পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করে ওই রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে নানা প্রস্তাব নিয়ে সাক্ষাৎ করতেন। এ সময় আর্থিক সুবিধা, ভিসা করিয়ে দিয়ে টাকা নেওয়া এবং বিদেশে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের নামে একাধিক তরুণীর ভিসা ও আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করত মেঘনা সিন্ডিকেট।

 

অন্যদিকে, মেঘনা আলমের পূর্বপরিচিত ও হানি ট্র্যাপ সিন্ডিকেটের সদস্য ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরকে চাঁদাবাজির মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। দেওয়ান সমির বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক মডেল মেঘনা আলমের পূর্বপরিচিত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেওয়ান সমিরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দেওয়ান সমিরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

 

পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, আসামি গত জানুয়ারি থেকে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আল দুহাইলানের কাছ থেকে টাকা আদায়ে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি হুমকির সম্মুখীন হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগের দিন রাতে তাকে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগরের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রায় ‘৩৬ জুলাই’

» জুলাই বিপ্লবকে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি সমভাবে ধারণ করছে না: নাহিদ

» আনন্দ শোভাযাত্রায় ‘পানি লাগবে পানি’

» চুরির অপবাদে শিশুকে মারধর, চুল কাটা হলো দুই নারীর

» সুমি শহরে রুশ হামলায় নিহত ৩৪, ‘ভয়াবহ ঘটনা’ বললেন ট্রাম্প

» মা-বাবার যে আচরণ ‍শিশুকে মন খুলে কথা বলতে সাহায্য করে

» নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা দ্রুত ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া : রিজভী

» প্রথম আলোকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে : জামায়াত আমির

» বাংলা নববর্ষ ঘিরে সিডনি প্রবাসীদের নানান আয়োজন

» দাম কমলেও এখনো নাগালের বাইরে ইলিশ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মেঘনা আলমের হানি ট্র্যাপ : রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশি মডেল মেঘনা আলমের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে তার হানি ট্রাপের চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। মেঘনা সিন্ডিকেট সৌদি আরবের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে ট্র্যাপে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবি করছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। দেশ ছাড়ার আগে সৌদি রাষ্ট্রদূত অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একই ধরনের অভিযোগ করে বলেছেন, মেঘনা আলম এবং তার একটি সংঘবদ্ধ চক্র তাকে হানি ট্র্যাপের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিল। এরপরই পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের পর তাকে একমাসের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। মেঘনা আলমের এমন অপতৎপরতাকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

সূত্র জানায়, মেঘনা আলমের কাজ ছিল বিভিন্ন কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা এবং তা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেওয়া। সেইসঙ্গে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়াও ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, তারা বিদেশি কোনো গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করে। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে এমন হানিট্র্যাপ করা হয়েছিলো কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, মেঘনা আলমের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও হানি ট্র্যাপ সিন্ডিকেটের সহযোগী মো. দেওয়ান সমিরকে (৫৮) গ্রেফতারের পর চাঁদাবাজির মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

 

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী সাংবাদিকদের জানান, নারীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে আসছেন আসামি দেওয়ান সমির। তার বিরুদ্ধে সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গত শুক্রবার ভাটারা থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের একটি বিশাল অংশ আসে সৌদি প্রবাসীদের কাছ থেকে। আর বাংলাদেশের যেকোনো সংকটে সৌদি আরব সবসময়ই পাশে থেকেছে। তবে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে সৌদির সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত এবং মডেল পরিচয়ধারী মেঘনা আলমকে ঘিরে। মেঘনা সিন্ডিকেট সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ট্র্যাপে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবি করছিল। এই অভিযোগ থেকেই বেরিয়ে আসে বিস্ময়কর সব তথ্য।

 

সূত্র জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের যে বিশাল সংখ্যক (৬০ লক্ষাধিক) প্রবাসী রয়েছেন তার অর্ধেকের বেশিই সৌদি আরবে কর্মরত আছেন। সৌদি আরব থেকে বৈধ চ্যানেলে বছরে প্রায় চার বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এবং অবৈধ চ্যানেলে অনুরূপ রেমিট্যান্স আসে। এছাড়া, রাজনৈতিক, অর্থনীতিক, ধর্মীয় সম্পর্ক বিচারে বাংলাদেশের কূটনীতিতে খুবই গুরুত্ব পূর্ণ একটি দেশ সৌদি আরব।

 

সূত্র জানায়, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের সঙ্গেও মেঘনার ঘনিষ্ঠতার কথা জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক, আব্দুল মোমেন ও ওয়বায়দুল কাদেরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ছাড়াও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলের সঙ্গে মেঘনার ঘনিষ্ঠতার তথ্য-প্রমাণ এখন গোয়েন্দাদের হাতে।

 

জানা গেছে, মেঘনা আলম সেলিব্রিটি শোয়ের কথা বলে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনৈতিক পাড়ার বিভিন্ন উচ্চমহলের সঙ্গে মিশতেন। আর সেই মেশার সূত্র ধরে বিভিন্নভাবে নারী সরবরাহ ও দেহ ব্যবসার একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন তিনি। ফলে আর্থিক সুবিধা, তথ্য পাচার, ভিসা তদবির এমনকি আদম পাচারের মতোও কাজও করত মেঘনা সিন্ডিকেট। সেজন্য প্রয়োজনে হাইপ্রোফাইল লোককে ব্ল্যাকমেইল করতেও দ্বিধা করতেন না মেঘনা আলম।

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা এবং অর্থনৈতিকভাবে দেশের ক্ষতি সাধনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মেঘনাকে আটক করা হয়েছে।

 

পুলিশের সূত্র জানায়, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে পরিচিতি ও সখ্যতা গড়ে তুলে ছবি তুলতেন মেঘলা। পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করে ওই রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে নানা প্রস্তাব নিয়ে সাক্ষাৎ করতেন। এ সময় আর্থিক সুবিধা, ভিসা করিয়ে দিয়ে টাকা নেওয়া এবং বিদেশে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের নামে একাধিক তরুণীর ভিসা ও আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করত মেঘনা সিন্ডিকেট।

 

অন্যদিকে, মেঘনা আলমের পূর্বপরিচিত ও হানি ট্র্যাপ সিন্ডিকেটের সদস্য ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরকে চাঁদাবাজির মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। দেওয়ান সমির বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক মডেল মেঘনা আলমের পূর্বপরিচিত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেওয়ান সমিরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দেওয়ান সমিরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

 

পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, আসামি গত জানুয়ারি থেকে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আল দুহাইলানের কাছ থেকে টাকা আদায়ে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি হুমকির সম্মুখীন হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগের দিন রাতে তাকে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগরের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com