ছবি সংগৃহীত
মেক্সিকোর জঙ্গলে শতাব্দী ধরে লুকিয়ে থাকা বিশাল মায়া সভ্যতার একটি শহরের সন্ধান মিলেছে। ‘ভ্যালেরিয়ানা’ নামে পরিচিত এই শহরে পিরামিড, খেলার মাঠ, প্রশস্ত পথ এবং অ্যাম্ফিথিয়েটারসহ বিভিন্ন স্থাপনা পাওয়া গেছে। এ আবিষ্কারটি মেক্সিকোর সাউথইস্টার্ন ক্যাম্পেচে রাজ্যে অবস্থিত এবং এটি এলাকা অনুযায়ী প্রাচীন ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ মায়া শহরগুলোর মধ্যে ক্যালাকমুলের পরে দ্বিতীয়। খবর বিবিসির।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শহরটির সন্ধান মেলে লিডার প্রযুক্তির মাধ্যমে। টুলেন ইউনিভার্সিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী লুক অউল্ড-থমাস তাঁর ইন্টারনেটে ডেটা ব্রাউজ করার সময় শহরটির সন্ধান পান। লিডার প্রযুক্তির মাধ্যমে জঙ্গলের নিচে থাকা বস্তুর ম্যাপ তৈরি করে তিনি ওই বিশাল প্রাচীন শহরের ছবি দেখতে পান। এই প্রযুক্তি জঙ্গল ও গাছপালার আড়ালে লুকানো কাঠামো চিহ্নিত করতে সক্ষম। গবেষকরা শহরটির নাম রেখেছেন ‘ভ্যালেরিয়ানা’ একটি নিকটবর্তী হ্রদের নামে।
গবেষকরা মনে করছেন, এটি প্রাচীন লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম মায়া শহর কালাকমুলের পরেই দ্বিতীয় বৃহৎ শহর।
গবেষণার তথ্যমতে, শহরটিতে মায়া সভ্যতার স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন পাওয়া গেছে। শহরটির পরিসর ছিল প্রায় ১৬.৬ বর্গকিলোমিটার এবং এতে দুইটি প্রধান কেন্দ্র ছিল যা একে অপর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে মন্দির, পিরামিড, খেলাধুলার জন্য কোর্ট এবং প্রাচীন সম্পদের সম্ভার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শহরটিতে ৩০-৫০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, শহরটি খ্রিস্টীয় ৭৫০ থেকে ৮৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সবচেয়ে জনবহুল ছিল। তবে পরবর্তী সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ এবং স্প্যানিশ বিজেতাদের আগমনের কারণে শহরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এই আবিষ্কারটি প্রমাণ করছে, প্রাচীন লাতিন আমেরিকায় গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলেও উন্নত ও জটিল সংস্কৃতির বিকাশ হয়েছিল।
উল্লেখ্য, মি. অউল্ড-থমাস এবং তার দল প্রাচীন মায়া সভ্যতার আরও গোপন শহরের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা মনে করছেন, এখনও আরও বহু শহর জঙ্গলের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে।