‘মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা’

সংগৃহীত ছবি

 

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রূপালী ব্যাংকের জিনঞ্জিরা শাখায় ডাকাতি করতে আসা দুই কিশোরসহ তিন ডাকাতের বরাত দিয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ বলেছেন, মৃত্যুপথযাত্রী একজন কিডনি রোগীকে বাঁচানোর জন্য তারা টাকা সংগ্রহ করতে ব্যাংকে ডাকাতিতে এসেছিল।

 

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি। এসপি বলেন, ব্যাংকের কোনো টাকা বা জনগণের আমানত খোয়া যায়নি, এবং আগামী রোববার থেকে ব্যাংকটি আগের মতো লেনদেন চালু করবে।

 

এসপি মুঈদ আরও বলেন, ডাকাতরা মুভি দেখে এই ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল বলে মনে হচ্ছে। তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীকে বাঁচানোর জন্যই ব্যাংকে ডাকাতি করতে এসেছিল। তবে তারা যে রোগীর ঠিকানা দিয়েছে, সেটি এখন যাচাই-বাছাই চলছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তাদের অপরাধী বলা যায় না। তারা হয়তো ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিল। তারা হয়তো একটি অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজে এই ডাকাতির চেষ্টা করেছিল।

 

অভিযান সম্পর্কে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার শুরু থেকেই আইজিপি স্যার আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেছিলেন, কোনো হতাহতের ঘটনা যেন না ঘটে। এজন্য আমরা ডাকাতদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি এবং তাদের আইজিপি স্যারের সঙ্গেও কথা বলানো হয়েছিল।

 

পুলিশ সুপার বলেন, ডাকাতদের তিনজন ছাড়া তাদের সঙ্গে আর কেউ ছিল না। তবে তারা প্রথমে আমাদের জানিয়েছিল যে, বাইরে তাদের আরও লোক রয়েছে, যা পুলিশকে ভয় দেখানোর জন্য তারা বলেছিল।

 

ডাকাতির সময় ব্যাংকে ছয়জন গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন, এবং তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন। এছাড়া ব্যাংকের সাতজন কর্মকর্তা, একজন অফিস সহকারী এবং দুজন ফায়ার গার্ডও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, এবং তারা সবাই সুস্থ আছেন। ব্যাংকের টাকা গুনে দেখা হয়েছে, এক টাকাও খোয়া যায়নি।

 

এসপি মুঈদ বলেন, ডাকাতরা অস্ত্র দিয়ে ম্যানেজারকে জিম্মি করে টাকা লুট করার চেষ্টা করেছিলেন। তারা গ্রাহক সেজে ব্যাংকে প্রবেশ করেছিলেন।

 

ঘটনার কিছু সময় আগে, দুপুর ২টার দিকে ডাকাতরা ব্যাংকে প্রবেশ করলে পাশের মসজিদের মাইক থেকে বিষয়টি জানানো হয়। এতে আশপাশের কয়েকশ লোক দ্রুত ব্যাংকটি ঘেরাও করে। এরপর পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে পৌঁছায়।

 

পুলিশ সুপার জানান, ডাকাতির ঘটনার পর স্থানীয়রা ব্যাংকটি বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে আসা তিন ডাকাতকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে। তাদের নাম হল শারাফাত, শিফাত এবং নিরব। এর মধ্যে দুজন কিশোর (১৬ বছর) এবং একজন তরুণ (২২ বছর) ছিল।

সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান: ডিএমপি কমিশনার

» গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করে শেষ মুহূর্তে ‘শাটডাউন’ এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

» বাসে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় তৈরি পাইপ গানসহ দুই যাত্রী গ্রেপ্তার

» সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাসান আরিফের জানাজা সম্পন্ন

» উত্তর ভারতের প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামানো হচ্ছে ‘পুষ্পা-২’

» ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ কনসার্ট ঘিরে যান চলাচলে নির্দেশনা

» সাগরে নিম্নচাপ, দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি শুরু

» বেইলি ব্রিজ ভেঙে তুরাগ ন‌দে ট্রাক, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ

» সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতি বন্ধ হয়নি: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

» ক‍্যানবেরায় ১২ প্রবাসীকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের অ‍্যাওয়ার্ড প্রদান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা’

সংগৃহীত ছবি

 

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রূপালী ব্যাংকের জিনঞ্জিরা শাখায় ডাকাতি করতে আসা দুই কিশোরসহ তিন ডাকাতের বরাত দিয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ বলেছেন, মৃত্যুপথযাত্রী একজন কিডনি রোগীকে বাঁচানোর জন্য তারা টাকা সংগ্রহ করতে ব্যাংকে ডাকাতিতে এসেছিল।

 

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি। এসপি বলেন, ব্যাংকের কোনো টাকা বা জনগণের আমানত খোয়া যায়নি, এবং আগামী রোববার থেকে ব্যাংকটি আগের মতো লেনদেন চালু করবে।

 

এসপি মুঈদ আরও বলেন, ডাকাতরা মুভি দেখে এই ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল বলে মনে হচ্ছে। তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীকে বাঁচানোর জন্যই ব্যাংকে ডাকাতি করতে এসেছিল। তবে তারা যে রোগীর ঠিকানা দিয়েছে, সেটি এখন যাচাই-বাছাই চলছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তাদের অপরাধী বলা যায় না। তারা হয়তো ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিল। তারা হয়তো একটি অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজে এই ডাকাতির চেষ্টা করেছিল।

 

অভিযান সম্পর্কে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার শুরু থেকেই আইজিপি স্যার আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেছিলেন, কোনো হতাহতের ঘটনা যেন না ঘটে। এজন্য আমরা ডাকাতদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি এবং তাদের আইজিপি স্যারের সঙ্গেও কথা বলানো হয়েছিল।

 

পুলিশ সুপার বলেন, ডাকাতদের তিনজন ছাড়া তাদের সঙ্গে আর কেউ ছিল না। তবে তারা প্রথমে আমাদের জানিয়েছিল যে, বাইরে তাদের আরও লোক রয়েছে, যা পুলিশকে ভয় দেখানোর জন্য তারা বলেছিল।

 

ডাকাতির সময় ব্যাংকে ছয়জন গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন, এবং তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন। এছাড়া ব্যাংকের সাতজন কর্মকর্তা, একজন অফিস সহকারী এবং দুজন ফায়ার গার্ডও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, এবং তারা সবাই সুস্থ আছেন। ব্যাংকের টাকা গুনে দেখা হয়েছে, এক টাকাও খোয়া যায়নি।

 

এসপি মুঈদ বলেন, ডাকাতরা অস্ত্র দিয়ে ম্যানেজারকে জিম্মি করে টাকা লুট করার চেষ্টা করেছিলেন। তারা গ্রাহক সেজে ব্যাংকে প্রবেশ করেছিলেন।

 

ঘটনার কিছু সময় আগে, দুপুর ২টার দিকে ডাকাতরা ব্যাংকে প্রবেশ করলে পাশের মসজিদের মাইক থেকে বিষয়টি জানানো হয়। এতে আশপাশের কয়েকশ লোক দ্রুত ব্যাংকটি ঘেরাও করে। এরপর পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে পৌঁছায়।

 

পুলিশ সুপার জানান, ডাকাতির ঘটনার পর স্থানীয়রা ব্যাংকটি বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে আসা তিন ডাকাতকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে। তাদের নাম হল শারাফাত, শিফাত এবং নিরব। এর মধ্যে দুজন কিশোর (১৬ বছর) এবং একজন তরুণ (২২ বছর) ছিল।

সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com