মামলার রায়ের ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে : শওকত মাহমুদ

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট :২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অনেকে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেছেন নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ এর মহাসচিব এবং বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ।

 

নির্বাচনে নিজের অংশগ্রহণের কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তুলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে যে ৭০টি মামলা, সেই মামলার একটির রায় ঘোষণা করা হবে- এমন ভয় দেখিয়ে তাকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শওকত মাহমুদ এ সব কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, ২০২৪ সালে নির্বাচনে যাওয়া আর ২০১৮ সালে নির্বাচনে যাওয়ার মধ্যে তিনি কোনো পার্থক্য দেখেন না। ’২৪ সালের নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করছেন। কিন্তু একই সঙ্গে যারা ’১৮ সালে নির্বাচনে গেছেন এবং নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন, তাদেরও দুঃখ প্রকাশ করা উচিত।

 

শওকত মাহমুদ বলেন, ওই সময়ে সরকারের নিপীড়ন এমনই ছিল যে, তাদের অনেককে তখন নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আপনারা এটাও লক্ষ্য করবেন, ছাত্র সমন্বয়কদের আন্দোলন যখন সুতীব্র হয়, সেই সুতীব্র আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয়কদের ডিবিতে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারের চাপে তারা তখন আন্দোলনের কর্মসূচি পর্যন্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিল অর্থাৎ ব্যক্তি বাঁচতে এ রকম পদক্ষেপ নিতে তাদের বাধ্য হতে হয়েছে।

 

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে একটি দল নির্বাচনে গেছে তাদের নিবন্ধন বাঁচাতে। তিনি মনে করেন, এখন যে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান এসেছে- যারা ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে গণহত্যায় অংশ নিয়েছে, মানুষের ওপর জুলুম করেছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে সেই নতুন ঐক্য গড়তে বাকি সবাইকে লাগবে।

 

দলীয় ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে’ লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ শওকত মাহমুদকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ দলের সব পদ থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়। বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার কারণ তুলে ধরে শওকত মাহমুদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত দূরত্ব হয়েছে এজন্য যে, তারা বেগম খালেদা জিয়ার অনুমতিতে ২০১২ সালে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটি যখন তারা পুরুজ্জীবন করেন, তখন বলেছিলেন যে, ইনসাফ কায়েম কমিটি একটা গণঅভ্যুত্থান করতে চায়, যেই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। তাদের এই আহ্বানকে বিএনপির কোনো কোনো নেতা ভুল বুঝেছিলেন। মনে করেছিলেন যে, তারা দলকে বোধহয় ভাঙতে চায়। সেই কারণে তার সঙ্গে বিএনপির একটা বিচ্ছেদ ঘটে।

 

তিনি আরও বলেন, বাস্তবে সাধারণ মানুষ যে গণঅভ্যুত্থান চেয়েছিল বা রাজনৈতিক দলগুলো যে গণঅভ্যুত্থানের কথা বলেছিল, সেই গণঅভ্যুত্থানটি অরাজনৈতিক গণঅভ্যুত্থান বা অরাজনৈতিক ছাত্রদের নেতৃত্বেই সম্পন্ন হয়েছে। এখানে বিএনপির কাউকে দোষ দেবার কিছু নেই, তার কিছু বলার নেই। তিনি আশা করেন, সবাই উপলব্ধি করবেন গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে যখন নতুন জাতীয় ঐক্যের আহ্বান এসেছে এবং প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, এমন অবস্থায় তিনি নতুন দল করেছেন। তাদের ভেতরে কতগুলো উপলব্ধি আছে, সেই উপলব্ধির সঙ্গে বিএনপির হয়তো খানিকটা দূরত্ব থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ এবং আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা- এগুলোর ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব নেই।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরে প্রকাশ্যে মেঘনা নদীতে জাটকা নিধন

» শিক্ষক ও সাংবাদিক শংকর মজুমদার: এক জীবন্ত ইতিহাস

» বাগেরহাটের চিতলমারীতে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

» সুন্দরবনের উপকূলে উচ্চফলনশীল ব্রি ধান চাষে কৃষকের সাফল্য

» রাবিতে ভর্তি পরীক্ষার এ ইউনিটের ফল প্রকাশ

» বিচারপতি খায়রুল হকের বিচার দাবি রিজভীর

» প্রধান উপদেষ্টাকে মামুনুল হকের হুঁশিয়ারি

» আ.লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয় সরকার : সারজিস

» ‘অনির্বাচিত সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় থাকলে অনেক দিকে ক্ষতির শঙ্কা আছে’ : নুর

» মামলার রায়ের ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে : শওকত মাহমুদ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মামলার রায়ের ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে : শওকত মাহমুদ

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট :২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অনেকে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেছেন নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ এর মহাসচিব এবং বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ।

 

নির্বাচনে নিজের অংশগ্রহণের কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা তুলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে যে ৭০টি মামলা, সেই মামলার একটির রায় ঘোষণা করা হবে- এমন ভয় দেখিয়ে তাকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শওকত মাহমুদ এ সব কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, ২০২৪ সালে নির্বাচনে যাওয়া আর ২০১৮ সালে নির্বাচনে যাওয়ার মধ্যে তিনি কোনো পার্থক্য দেখেন না। ’২৪ সালের নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করছেন। কিন্তু একই সঙ্গে যারা ’১৮ সালে নির্বাচনে গেছেন এবং নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন, তাদেরও দুঃখ প্রকাশ করা উচিত।

 

শওকত মাহমুদ বলেন, ওই সময়ে সরকারের নিপীড়ন এমনই ছিল যে, তাদের অনেককে তখন নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আপনারা এটাও লক্ষ্য করবেন, ছাত্র সমন্বয়কদের আন্দোলন যখন সুতীব্র হয়, সেই সুতীব্র আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয়কদের ডিবিতে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারের চাপে তারা তখন আন্দোলনের কর্মসূচি পর্যন্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিল অর্থাৎ ব্যক্তি বাঁচতে এ রকম পদক্ষেপ নিতে তাদের বাধ্য হতে হয়েছে।

 

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে একটি দল নির্বাচনে গেছে তাদের নিবন্ধন বাঁচাতে। তিনি মনে করেন, এখন যে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান এসেছে- যারা ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে গণহত্যায় অংশ নিয়েছে, মানুষের ওপর জুলুম করেছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে সেই নতুন ঐক্য গড়তে বাকি সবাইকে লাগবে।

 

দলীয় ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে’ লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ শওকত মাহমুদকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ দলের সব পদ থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়। বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার কারণ তুলে ধরে শওকত মাহমুদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত দূরত্ব হয়েছে এজন্য যে, তারা বেগম খালেদা জিয়ার অনুমতিতে ২০১২ সালে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটি যখন তারা পুরুজ্জীবন করেন, তখন বলেছিলেন যে, ইনসাফ কায়েম কমিটি একটা গণঅভ্যুত্থান করতে চায়, যেই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। তাদের এই আহ্বানকে বিএনপির কোনো কোনো নেতা ভুল বুঝেছিলেন। মনে করেছিলেন যে, তারা দলকে বোধহয় ভাঙতে চায়। সেই কারণে তার সঙ্গে বিএনপির একটা বিচ্ছেদ ঘটে।

 

তিনি আরও বলেন, বাস্তবে সাধারণ মানুষ যে গণঅভ্যুত্থান চেয়েছিল বা রাজনৈতিক দলগুলো যে গণঅভ্যুত্থানের কথা বলেছিল, সেই গণঅভ্যুত্থানটি অরাজনৈতিক গণঅভ্যুত্থান বা অরাজনৈতিক ছাত্রদের নেতৃত্বেই সম্পন্ন হয়েছে। এখানে বিএনপির কাউকে দোষ দেবার কিছু নেই, তার কিছু বলার নেই। তিনি আশা করেন, সবাই উপলব্ধি করবেন গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে যখন নতুন জাতীয় ঐক্যের আহ্বান এসেছে এবং প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, এমন অবস্থায় তিনি নতুন দল করেছেন। তাদের ভেতরে কতগুলো উপলব্ধি আছে, সেই উপলব্ধির সঙ্গে বিএনপির হয়তো খানিকটা দূরত্ব থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ এবং আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা- এগুলোর ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব নেই।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com