বিচারপতি ওবায়দুল হাসান: পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছেন যাঁরা অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসেন এবং এ ধরনের কাজ করতে পছন্দ করেন। আবার অন্যের সাহায্যের প্রতিদানও দেন। পরোপকার মানুষের একটি অন্যতম গুণ। সব ধর্মেই পরোপকারের বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরোপকারী মানুষকে সৃষ্টিকর্তা মহান রব্বুল আলামিন পরকালে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করবেন বলে বিভিন্ন হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। অন্যান্য ধর্মেও এ রকম কথাই বলা হয়। পরোপকারী একজন ছোট চাকরিজীবীর কথা নিয়েই আমার আজকের লেখা।
১৯৭০-এর ডিসেম্বর, সারা পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের আসনসমূহে নির্বাচন হয়ে গেল। জাতীয় পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে ছিল ১৬২ আর পশ্চিম পাকিস্তানে ১৩৮টি। ১৩টি আসন ছিল মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ১৬০টি এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের মধ্যে সাতটি। মোট ৩১৩টির মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। পশ্চিম পাকিস্তানের ১৩৮ আসনের মধ্যে জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৮১টিতে জয়লাভ করে এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের মধ্যে জাতীয় পরিষদের সদস্য সংখ্যানুপাতে পাঁচটি আসন পায়।
পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সদস্য সংখ্যার হিসাবে আওয়ামী লীগ পায় ১৬৭, পিপলস পার্টি ৮৬ এবং পাকিস্তানের অন্য সব সংগঠন মিলে সাধারণ আসন পায় ৫৭টি, সংরক্ষিত আসন পায় একটি। প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৮৮টিতে জয়লাভ করে, অন্যদিকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) এবং অন্যান্য দল মিলে পায় ১২টি আসন। পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু একচ্ছত্র নেতা হিসেবে পরিগণিত হন। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে ৯৬% শতাংশ আসনে জয়লাভ করে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। ভুট্টোর পিপলস পার্টি পশ্চিম পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও বেলুচিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় ওয়ালী খানের ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি।
পাকিস্তানের রাজনীতি দিনের পর দিন অস্থিরতার দিকে এগোতে থাকে। ছয় দফার ভিত্তিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর চিন্তা যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, এ অস্থিরতা বঙ্গবন্ধুর ভাষায় বাঙালির ঊসধহপরঢ়ধঃরড়হ-এর দাবিকে ততই ত্বরান্বিত করছিল। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে ইয়াহিয়া খান যেভাবে আলাপ-আলোচনার ছলনায় ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছিল, এতে ভুট্টো পেছন থেকে সব নীলনকশা তৈরি করছিলেন। বঙ্গবন্ধু বিষয়টি আগেই আঁচ করেছিলেন বলে অকস্মাৎ আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পরপরই ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ৭ মার্চ রেসকোর্সের জনসভায় বঙ্গবন্ধু যেসব নির্দেশনা দিয়েছিলেন বাঙালি তা ভোলেনি। ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় প্রতিরোধযুদ্ধ। মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি নির্দেশ পালন করতে জীবনপণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
’৭০-এর নির্বাচনে আমার বাবা তৎকালীন নেত্রকোনা মহকুমার মোহনগঞ্জ-বারহাট্টা আসন থেকে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২৬ মার্চ থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্র-যুবকদের মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে উদ্বুদ্ধ করেন। এপ্রিলের মাঝামাঝি পাক সেনারা ময়মনসিংহ শহরে প্রবেশ করলে বাবা আমাদের নিয়ে মোহনগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জ রেল যোগাযোগ থাকার সুবাদে সহজেই পাক সেনারা মোহনগঞ্জে পৌঁছে যেতে পারে এ আশঙ্কায় আমাদের গ্রামে চলে যাওয়া। বাবা মে মাসের প্রথম দিকেই আটপাড়ার এমপি আবদুল খালেককে নিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলার অধীন মহেশখলা ক্যাম্পে যোগ দেন। দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত সেখানে থেকেই ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেন। বাবা ভারতে আর আমরা রয়ে গেলাম দেশে। এক অনিশ্চিত অবস্থা তখন বিরাজ করছে। সবার মনে একই প্রশ্ন- দেশ স্বাধীন হবে কি না, হলেও কত দিন লাগবে ইত্যাদি। আমরাও সবার মতো একই রকম চিন্তা করতে থাকি। তবে আমাদের মধ্যে একটি বাড়তি আশঙ্কা ছিল বাবার সঙ্গে আমাদের আর দেখা হবে কি না! হলেও তা কত দিন পর ইত্যাদি।
মায়ের সঙ্গে আমরা গ্রামের বাড়ি হাটনাইয়ায় আছি। লোকমুখে খবর পেলাম, স্থানীয় রাজাকাররা আমাদের মোহনগঞ্জের বাসা লুট করেছে। জিনিসপত্র ও আসবাবপত্র লুটের পর পাক সেনারা বাসাটি বোমা মেরে ভেঙে দিতে চেয়েছিল বলে শুনেছিলাম। পরে কেন যেন তা না করে বাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং তা-ও আবার কিছু সময় পর তাদেরই নির্দেশে রাজাকাররা নিভিয়ে দেয়। তখন তো আর কোনো নির্ভরযোগ্য খবর পাওয়ার অবস্থা ছিল না। মোহনগঞ্জ থানা সদর তখন আজকের মতো অতটা উন্নত হয়নি। সারা থানা সদরে হাতে গোনা দু-চারটি দালানবাড়ি ছিল। আমাদের বাড়িটি থানা থেকে এক/দেড় শ গজ পশ্চিমে। এক তলার চার কক্ষবিশিষ্ট একটি দালানবাড়ি। ১৯৬৮ সালে বাবা বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন তাঁর ডাক্তারি পেশার আয় থেকে। জানতে পারি কোনো একজন পুলিশ অফিসারের আপত্তিতে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পাক সেনারা পিছিয়ে যায়। অগ্নিসংযোগের পর একই পুলিশ অফিসারের হস্তক্ষেপেই আগুন নেভানো হয়। যদিও ততক্ষণে দালানঘরটির দরজা-জানালা সব পুড়ে গেছে। পাকিস্তান আমলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকতেন পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর। স্বাধীনতার পরও অনেক বছর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সাব-ইন্সপেক্টররাই থাকতেন। সারা মহকুমায় দু-তিনটি সার্কেল ছিল। একেকটি সার্কেলের অধীনে একাধিক থানা থাকত এবং ওই সার্কেলের দায়িত্বে একজন করে পুলিশ ইন্সপেক্টর থাকতেন, একেকটি সার্কেলের অধীনে একাধিক থানা থাকত এবং ওই সার্কেলের দায়িত্বে একজন করে ইন্সপেক্টর থাকতেন।
আমাদের বাসাটি বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে পরবর্তীতে সম্পূর্ণভাবে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন এ রকম একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর। আব্বা পুলিশ ইন্সপেক্টরের নামটি বলেছিলেন কিন্তু আজ আর আমার মনে নেই। সম্ভবত সেই পরোপকারী মানুষটিও আজ বেঁচে নেই। আমার বাবাও গত হয়েছেন প্রায় সাড়ে নয় বছর হলো।
১৯৬৮-৬৯ সালের কোনো একদিন ওই পুলিশ ইন্সপেক্টর মোহনগঞ্জ থানা পরিদর্শনে এসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। থানা সদরে অবস্থিত জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাতে পেটের ব্যথায় তিনি কাতরাচ্ছিলেন। আমার বাবা পেশায় ছিলেন ডাক্তার। তখনকার সময় থানা সদরে ডাক্তারও ছিলেন হাতে গোনা দু-এক জন। থানার ওসি বাবাকে ইন্সপেক্টরের অসুস্থতার খবর দিয়ে তাঁকে দেখার অনুরোধ করেন। বাবা ওই রাতে সঙ্গে সঙ্গেই ডাকবাংলোয় যান এবং তাঁর চিকিৎসা করেন। বাবার কাছে শুনেছিলাম ওই ইন্সপেক্টরের প্রচণ্ড রকমের ফুড পয়জনিং হয়েছিল। ইনজেকশন দিয়ে পেটের ব্যথা কমিয়ে বাবা তাঁকে কিছু ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেন এবং পরদিন সকালের ট্রেনেই নেত্রকোনা চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। যথারীতি তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে পরদিন সকালে মোহনগঞ্জ থেকে চলে যান। ডাক্তাররা যত রোগী দেখেন কতজনের নামধামই বা তারা মনে রাখেন।
১৯৭১ সালের আগস্টে মা-সহ সপরিবারে আমরাও মেঘালয়ের মহেশখলায় আশ্রয় নিই। একটি অনিশ্চয়তা আমাদের কাটল, বাবার সঙ্গে মিলিত হতে পারলাম। বাঁচি আর মরি একসঙ্গেই থাকব। এটা তাৎক্ষণিক আমাদের স্বস্তি দিলেও দেশ স্বাধীন হবে কি না, হলে কবে হবে এ অনিশ্চয়তা আমাদের সব সময় আচ্ছন্ন করে রাখত।
মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোয় জনপদের পর জনপদ জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর যখন আসছিল, লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুসংবাদ আমাদের বাসা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছিল। দেশ স্বাধীন হলো, আমরা দেশে ফিরে এলাম। ওঠলাম এক আত্মীয়ের বাসায়। যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সরকারের চাকরি করেছিলেন, দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া তাদের প্রায় সবাই বাংলাদেশ সরকারের চাকরিতে রয়ে গেলেন। ঠিক এভাবেই নেত্রকোনার সেই পুলিশ ইন্সপেক্টরও চাকরি করেছেন। ভিতরে ভয় ও সংকোচ নিয়ে পুলিশ ইন্সপেক্টর বাবার সঙ্গে দেখা করলেন, জানতে চাইলেন তিনি কী করবেন বা যারা পাকিস্তান সরকারের অধীন চাকরি করেছিলেন তাদের কী করা উচিত। গুরুগম্ভীর ভাষায় আব্বা বলেছিলেন, আমাদের সরকার গঠিত হয়েছে। খানিক পরই বাবা কিছুটা কৌতূহলবশত তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি কোথায় আছেন। চেহারাটা তাঁর কাছে পরিচিত মনে হওয়ায় তিনি ইন্সপেক্টরের কাছে আরও জানতে চান তাকে তিনি কখনো চিকিৎসা করেছেন কি না বা দেখেছেন কি না। প্রত্যুত্তরে ইন্সপেক্টর যা বলেছিলেন সেটাই ওপরে তুলে ধরলাম। ঘটনাটি বাবার কাছ থেকেই আমার শোনা।
ইন্সপেক্টর আমার বাবার প্রতি কিছুটা কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই সেদিন পাক সেনাদের বুঝিয়েছিলেন যে বাসাটি গুঁড়িয়ে এবং পুড়িয়ে না ফেলে তা পাক সেনাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। সেনারা তাঁর কথায় বিশ্বাস করে বাসাটি ধ্বংস না করে সেটিতে তারা তাদের ও রাজাকারদের জন্য ক্যাম্প তৈরি করেছিল। স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে আমরা যখন আমাদের বাসাটি দেখতে যাই, সেখানে রাজাকার ও মিলিশিয়াদের ব্যবহৃত পোশাক, জুতা, বেল্ট ইত্যাদি দেখতে পাই এবং দরজা-জানালা পুড়ে অঙ্গার হয়ে আছে।
বাবাকে ইন্সপেক্টর আরও বলেছিলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল দেশ স্বাধীন হবে এবং আপনারা দেশে ফিরবেন। আপনার বাড়িটি থাকলে দেশে ফিরে হয়তো বা আবার ওই বাড়িতে বসবাস করতে পারবেন।’
বাবার প্রশ্নোত্তরে ওই ভদ্রলোক বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে যোগ না দিয়ে তিনি ভুল করেছেন। চার-পাঁচটি ছেলেমেয়ের সংসারে তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। যা-ই হোক অনেক সরকারি কর্মকর্তার মতো ওই ইন্সপেক্টর আরও দুই-আড়াই বছর বাংলাদেশ সরকারের চাকরি করে অবসরে গিয়েছিলেন।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বিষয়টির অবতারণা করলাম এ কারণে যে আজকাল তো মানুষের কৃতজ্ঞতাবোধ একেবারেই কমে গেছে। ইন্সপেক্টর যে মানসিকতা নিয়ে আমাদের বাসাটি রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন, তা যদি পাক সেনারা সেদিন বুঝতে পারত তাহলে নিশ্চয় ওই ইন্সপেক্টরের জন্য বড় বিপদের কারণ হতে পারত।
একজন চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা দিয়ে তাঁকে সারিয়ে তুলেছিলেন বলেই ওই চিকিৎসকের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে তিনি বাসাটি রক্ষা করেছিলেন নাকি মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠকের বাসা বলে তা রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন তা তিনিই জানেন। তবে যে কাজটি তিনি করেছেন তা স্মরণ করার মতো এবং আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি বলে যদি তাঁর সত্যিই অনুশোচনা হয় তাহলে তাঁর প্রতি সাধুবাদ সত্য বলার জন্য।
লেখক : বিচারপতি, আপিল বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন