ভিআইপি টিকিট যায় কোথায়

খুলনা থেকে ঢাকাগামী সকাল ৯টায় চিত্রা এক্সপ্রেস (নং-৭৬৩) ট্রেনের টিকিট থাকে মোট ৯৮৭টি। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়। বাকি ৪৯৩টি টিকিট বিক্রি হয় খুলনাসহ বিভিন্ন রেলস্টেশন কাউন্টারে। অভিযোগ রয়েছে, খুলনার রেলস্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে ভিআইপিদের নামে টিকিট বরাদ্দ দেখিয়ে পরে তা উচ্চমূল্যে কালোবাজারে বিক্রি করা হয়। রেলের কর্মচারীরা জানান, করোনার কারণে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছে। এখন শুধু রেলের কর্মচারীদের জন্য দুই শতাংশ কোটা থাকলেও ভিআইপি নামে খুলনা স্টেশনে অতিরিক্ত টিকিট বরাদ্দ রাখা হয়। যাদের অধিকাংশই ট্রেনে ভ্রমণ করেন না।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৫ মে খুলনা রেলস্টেশনে ভিআইপিদের নামে টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪২টি। এর মধ্যে রেলওয়ে শ্রমিক নেতা (টিএক্সআর) বায়তুল ইসলামের নামে তিনটি এসি চেয়ার, ট্রাফিক অফিসের জনৈক মো. রাসেলের নামে তিনটি এসি চেয়ার, অ্যাটেনডেন্ট তাজুলের নামে তিনটি এসি চেয়ার, খুলনা শ্রমিক লীগ সভাপতির নামে তিনটি এসি চেয়ার, ওসি জিআরপির নামে চারটি এসি চেয়ারসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার কর্মকর্তার নামে টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক দিন পর ১৭ মে ওসি জিআরপির নামে আরও দুটি এসি চেয়ার, রেল কর্মচারী পপিদুর রহমানের নামে তিনটি এসি চেয়ার, যুবলীগ নেতার নামে চার সিটের একটি সিঙ্গেল কেবিন, যমুনা ব্যাংকের কর্মকর্তার নামে চারটি শোভন চেয়ারসহ ২৪টি টিকিট বরাদ্দ রাখা হয়।

 

একইভাবে ৯ মে রাত সোয়া ১০টায় ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে টিকিটের বরাদ্দ রাখা হয় ৪৫টি। এখানে শ্রমিক নেতা (টিএক্সআর) বায়তুল ইসলামের নামে তিনটি এসি চেয়ার, শ্রমিক লীগ সভাপতির নামে তিনটি শোভন চেয়ারসহ সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, ইডেন কলেজের শিক্ষিকাসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে টিকিটের বরাদ্দ দেখানো হয়েছে।

 

এদিকে ভিআইপি তালিকায় নাম থাকা রেলওয়ে শ্রমিকনেতা (টিএক্সআর) বায়তুল ইসলাম বলেন, ‘রেলের কর্মরত মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের জন্য মাঝেমধ্যে টিকিট নেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের প্রয়োজনে আমার নামেই টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হতো। কারণ অনেক সময় স্টেশন মাস্টারকে সিটে পাওয়া যায় না। তবে এ টিকিট আমার আত্মীয়স্বজন বা কালোবাজারিতে বিক্রির জন্য নেওয়া হয়নি।

 

খুলনা জিআরপি থানার ওসি মোল্লা মোহাম্মদ খবির আহমেদ বলেন, ‘আমাকে বিভিন্ন লোক অনুরোধ করলে আমি একটা-দুইটা টিকিটের জন্য স্টেশন মাস্টারকে বলতাম। আমি নিজে কখনো ট্রেনে যাইনি। আর টিকিট সব সময় পাওয়াও যায় না।

 

তিনটা টিকিট চাইলে একটা হয়তো পাওয়া যায়। ১৫ ও ১৭ মে আমার নামে টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এটা আমি খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না।’সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিতর্কিত তিন নির্বাচন আয়োজনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি হচ্ছে

» যখন প্রবাসীদের ভোটের প্রশ্ন আসে, তখন মুখে কুলুপ কেন? জানতে চান সারজিস

» ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত পুতিন-এরদোয়ান

» সেনাপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

» সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে নির্বাচন দিতে হবে: ড. শফিকুল ইসলাম

» মেয়র ইস্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ কোনো আইন ভঙ্গ করেনি: আসিফ মাহমুদ

» সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

» পলাশে ছাত্রদলের ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল  অভিযুক্ত জুয়েল বাহিনীকে গ্রেপ্তার দাবি

» প্রাইম ব্যাংক ও সার্টো ও স্যুট এক্সপ্রেস-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

» বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে : মঈন খান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ভিআইপি টিকিট যায় কোথায়

খুলনা থেকে ঢাকাগামী সকাল ৯টায় চিত্রা এক্সপ্রেস (নং-৭৬৩) ট্রেনের টিকিট থাকে মোট ৯৮৭টি। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়। বাকি ৪৯৩টি টিকিট বিক্রি হয় খুলনাসহ বিভিন্ন রেলস্টেশন কাউন্টারে। অভিযোগ রয়েছে, খুলনার রেলস্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে ভিআইপিদের নামে টিকিট বরাদ্দ দেখিয়ে পরে তা উচ্চমূল্যে কালোবাজারে বিক্রি করা হয়। রেলের কর্মচারীরা জানান, করোনার কারণে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছে। এখন শুধু রেলের কর্মচারীদের জন্য দুই শতাংশ কোটা থাকলেও ভিআইপি নামে খুলনা স্টেশনে অতিরিক্ত টিকিট বরাদ্দ রাখা হয়। যাদের অধিকাংশই ট্রেনে ভ্রমণ করেন না।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৫ মে খুলনা রেলস্টেশনে ভিআইপিদের নামে টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪২টি। এর মধ্যে রেলওয়ে শ্রমিক নেতা (টিএক্সআর) বায়তুল ইসলামের নামে তিনটি এসি চেয়ার, ট্রাফিক অফিসের জনৈক মো. রাসেলের নামে তিনটি এসি চেয়ার, অ্যাটেনডেন্ট তাজুলের নামে তিনটি এসি চেয়ার, খুলনা শ্রমিক লীগ সভাপতির নামে তিনটি এসি চেয়ার, ওসি জিআরপির নামে চারটি এসি চেয়ারসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার কর্মকর্তার নামে টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক দিন পর ১৭ মে ওসি জিআরপির নামে আরও দুটি এসি চেয়ার, রেল কর্মচারী পপিদুর রহমানের নামে তিনটি এসি চেয়ার, যুবলীগ নেতার নামে চার সিটের একটি সিঙ্গেল কেবিন, যমুনা ব্যাংকের কর্মকর্তার নামে চারটি শোভন চেয়ারসহ ২৪টি টিকিট বরাদ্দ রাখা হয়।

 

একইভাবে ৯ মে রাত সোয়া ১০টায় ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে টিকিটের বরাদ্দ রাখা হয় ৪৫টি। এখানে শ্রমিক নেতা (টিএক্সআর) বায়তুল ইসলামের নামে তিনটি এসি চেয়ার, শ্রমিক লীগ সভাপতির নামে তিনটি শোভন চেয়ারসহ সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, ইডেন কলেজের শিক্ষিকাসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে টিকিটের বরাদ্দ দেখানো হয়েছে।

 

এদিকে ভিআইপি তালিকায় নাম থাকা রেলওয়ে শ্রমিকনেতা (টিএক্সআর) বায়তুল ইসলাম বলেন, ‘রেলের কর্মরত মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের জন্য মাঝেমধ্যে টিকিট নেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের প্রয়োজনে আমার নামেই টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হতো। কারণ অনেক সময় স্টেশন মাস্টারকে সিটে পাওয়া যায় না। তবে এ টিকিট আমার আত্মীয়স্বজন বা কালোবাজারিতে বিক্রির জন্য নেওয়া হয়নি।

 

খুলনা জিআরপি থানার ওসি মোল্লা মোহাম্মদ খবির আহমেদ বলেন, ‘আমাকে বিভিন্ন লোক অনুরোধ করলে আমি একটা-দুইটা টিকিটের জন্য স্টেশন মাস্টারকে বলতাম। আমি নিজে কখনো ট্রেনে যাইনি। আর টিকিট সব সময় পাওয়াও যায় না।

 

তিনটা টিকিট চাইলে একটা হয়তো পাওয়া যায়। ১৫ ও ১৭ মে আমার নামে টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এটা আমি খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না।’সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com