ছবি সংগৃহীত
ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের সংসদে পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াকফ বিল বাতিল ও মুসলিম নিধন বন্ধের দাবিতে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল নিয়ে রওনা হয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ২টা ২৩ মিনিটে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর পাদদেশ থেকে এ গণমিছিল শুরু হয়। গণমিছিলের নেতৃত্ব দেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। এতো হাজারো মুসল্লি অংশ নিয়েছেন।
এক লিফলেটে খেলাফত মজলিস জানিয়েছে, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রায় ২৫ কোটি মুসলমানের বসবাস। ১৯৪৭-এ দেশভাগের পর থেকেই ভারতে মুসলমানদের বঞ্চনা শুরু। মুসলমানের বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়নের এই উন্মত্ততা ধীরে ধীরে গোটা ভারতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। হিন্দু উগ্রবাদী বিজিপি সরকারের অধীনে এই নির্যাতন বহুমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। অব্যাহত ধ্বংসযজ্ঞ, দখল, অবৈধ অধিগ্রহণকে আইনি বৈধতা দিতে সম্প্রতি ভারতের সংসদে নিবর্তনমূলক বিতর্কিত ‘ওয়াকফ আইন সংশোধনী বিল ২০২৫’ পাস হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পত্তি (মসজিদ, কবরস্থান, মাদরাসা, খানকা ইত্যাদি) রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের আওতায় চলে যাচ্ছে। এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ যাতে মুসলিম সমাজকে ধ্বংস করা যায়। নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন, অমুসলিমদের (মূলত হিন্দুদের) সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা, কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ বলে বিবেচিত হবে কোনটা হবে না সরকারকে তা নির্ধারণের কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ ওয়াকফ সম্পদ পরিচালনা ও ভোগের একমাত্র হকদার মুসলমামরা। ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে প্রায় ৯ লাখ স্থাপনা রয়েছে, জমির পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ একর। এসব সম্পদের দাম আনুমানিক দেড় হাজার কোটি মার্কিন ডলার। সবমিলিয়ে হিসেব করলে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও রেলওয়ের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ ভূমির মালিক হচ্ছে মুসলমানদের ওয়াকফ প্রতিষ্ঠান।
তারা আরো জানায়, ভারত সরকারের অব্যাহত মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো ভূমিকা দৃশ্যমান নয়। অথচ ভারত সরকার ও তার হলুদ-মিডিয়াগুলো অব্যাহতভাবে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের গোয়েবলসীয় প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে নির্যাতিত ভারতীয় মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। ভারতে মুসলমানদের উপর চলমান নিপীড়ন-নিধন, মসজিদ ভাঙ্গা ও নামাজে বাধা, মুসলিমদের উপর দাঙ্গা, হত্যা ও গণপিটুনি, হিজাব নিষিদ্ধকরণ, মিথ্যা মামলায় মুসলিম যুবকদের গ্রেপ্তার, মুসলমানদের ব্যবসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টার্গেট করা এবং এই বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল-২০২৫ এর ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশের মুসলমান হিসেবে কীভাবে চুপ থাকতে পারি।
গণমিছিলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির, নায়েবে আমির, মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত আছেন