ফারহা মৌরিন মৌ :
অতঃপর দেবী মর্ত্যে নেমে এলেন।
পূজারীর সম্মুখে দাঁড়িয়ে বললেন –
তুমি উপাসনা করেছো,
পূজা-অর্চনা করেছো,
এতে আমি সন্তুষ্ট হয়েছি।
তোমার প্রেম, ভক্তি,
আমায় বিগলিত করেছে!
কী চাও তুমি আমার কাছে ?
কান্না ভেজা বহুকালের বন্দনায়
আচ্ছন্ন চোখ দুটি,
ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে
দেবীর মুখপানে চাইলো ।
রক্ত মাংসে গড়া দেহ!
এ যে অবিকল আমাদের মত মানুষ!
অপরূপ অবয়বে, মোহনীয় মুগ্ধতায়
পূজারী বিহ্বল !
কিছুপর হঠাৎ –
পূজারীর
দু’চোখে জেগে উঠলো
চকচকে কামাতুর দৃষ্টি!
দেবীর অপার করুণার মর্মভেদ করতে
অপারগ সেই পূজারী,
অজান্তেই জ্বলে ওঠে তার দু চোখে ,
মনে –
কামনার আগুন!
অকৃতজ্ঞ পূজারী,
যাকে মা বলে নামিয়ে এনেছে
মর্ত্যলোকে –
তাকে হঠাৎই এতো নিকটে পেয়ে
যেন বিহ্বল হয়ে ওঠে,
দিশাহীন হয়ে ওঠে!
তার পূজা-অর্চনার এতো জোর,
এতো ক্ষমতা!
তবে তো দেবীকে
আটকে রাখার ক্ষমতাও তার আছে!
আছে তাকে আস্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখবার!
পূজারী হাত বাড়ায়…
দেবী হেসে ওঠে অট্টহাসি !!!
মিলিয়ে যায় হাওয়ায়!
মনুষ্য ঈশ্বরের অস্তিত্বকে
কখনোই ধারণ করতে পারবে না!
মনুষ্যের ধারণার অতীত সেই কায়া।
তাইতো-
মনুষ্যরূপে আবির্ভূত হলেন দেবী!
পূজারী এই আশ্চর্যকর বিষয়
ধারণ করতে অক্ষম!
দেবী স্মিত হাসে –
ঈশ্বরকে সহ্য করা
সাধারণের কম্মো নয় গো!
কামনা, বাসনা, চাহিদার মাপকাঠিতে
বিচার করা যায় না তাকে…
এক সমুদ্র ভক্তিতে
এক ফোঁটা কামনা গুলিয়ে দিলেই
তোমার ভক্তি অচল! ত্রুটিযুক্ত!
ঈশ্বরকে পেতে হলে
তোমাকেও হতে হবে তার যোগ্য অনুসারী।
ঈশ্বরের অদৃশ্য বিরাজমান সিংহাসন
না দেখতে পেলেও,
তার করুণাকে অনুভব করো!
ভেতরে ধারণ করো –
ঈশ্বরের সর্বব্যাপী অস্তিত্ব ।।
Facebook Comments Box