খ্যাতনামা লেখক হাসনাত আবদুল হাই পেলেন ‘আজীবন সম্মাননা পুরস্কার’
ঢাকা, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫: বাংলা সাহিত্যের প্রসার ও লেখকদের অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে লেখক ও সাহিত্যিকদের সম্মাননা দিয়ে আসছে ব্র্যাক ব্যাংক ও দৈনিক সমকাল।
তেরতম সাহিত্য পুরস্কারের এই আসরে দেশের খ্যাতনামা লেখক, ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক হাসনাত আবদুল হাই-কে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। তৃতীয়বারের মতো এবার দেওয়া হলো ‘আজীবন সম্মাননা পুরস্কার’। অন্য তিন শ্রেণিতে আমিনুল ইসলাম ভুইয়া, ধ্রুব এষ এবং উম্মে ফারহানা জিতে নিয়েছেন ‘ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩’।
আমিনুল ইসলাম ভুইয়া ‘প্লেটো প্রবেশিকা’ গ্রন্থের জন্য প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ শ্রেণিতে; ধ্রুব এষ ‘আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রি’ গ্রন্থের জন্য কবিতা ও কথাসাহিত্য শ্রেণিতে এবং উম্মে ফারহানা ‘টক টু মি’ গ্রন্থের জন্য ‘তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার’ শ্রেণিতে বিজয়ী হন।
৪ জুলাই ২০২৫ ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক এবং বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। আরও উপস্থিত ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারপারসন ফারুক মঈনউদ্দীন আহমেদ, ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিএফও এম মাসুদ রানা এফসিএ, ও দৈনিক সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী। দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গও এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
‘আজীবন সম্মাননা পুরস্কার’ বিজয়ীকে পুরস্কার হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা; ‘প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ’ ও ‘কবিতা ও কথাসাহিত্য’ এ দুই শ্রেণিতে প্রত্যেক বিজয়ী পুরস্কার হিসেবে দুই লাখ টাকা করে পান এবং ‘তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার’ বিজয়ী পান এক লাখ টাকা। প্রত্যেক বিজয়ীকে ক্রেস্ট ও সম্মননাপত্রও প্রদান করা হয়।
এই পুরস্কার বাংলাদেশের সাহিত্যিক, পাঠক ও প্রকাশক মহলে অনেক আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তিন শ্রেণিতে ৪৬৭টি বই জমা পড়েছিল। সাহিত্যিক বেগম আকতার কামাল, গবেষক ও প্রাবন্ধিক ড. ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, কবি আবিদ আনোয়ার এবং প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক খালিকুজ্জামান ইলিয়াসের সমন্বয়ে গঠিত জুরি বোর্ড ২০২৩ সালে প্রকাশিত সেরা তিনটি বই নির্বাচন করেন।
সাহিত্য প্রসারের এ উদ্যোগ সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারপারসন ফারুক মঈনউদ্দীন আহমেদ বলেন, “এই পুরস্কার ইতিমধ্যে দেশের সাহিত্য জগতে একটি অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ স্থান অর্জন করেছে। এই পুরস্কার দেশের লেখক ও সাহিত্যিকদের, বিশেষ করে তরুণ লেখকদের অনুপ্রাণিত করছে। আর পাঠকরা পাচ্ছেন রুচিশীল বই পড়ার সুযোগ। দেশের তরুণ উদীয়মান এবং প্রতিভাবান লেখকদের সৃষ্টিশীল কাজের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এ পুরস্কার। আমরা এই সাহিত্য পুরস্কারের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে গর্বিত।”
সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী বলেন, “সমকাল বরাবরই দেশীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্যচর্চাকে উৎসাহিত করে এসেছে। আমরা মনে করি ভালো সাংবাদিকতার চর্চায় সাহিত্য ও সংস্কৃতি বড় ভূমিকা রাখে। সমকাল সবসময় সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নেবে।‘’
হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, ‘‘এই সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শুধু একটি সাংস্কৃতিক আয়োজনই নয়। এটি আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতারও অংশ। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে। ভবিষ্যতে এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এবং সবার সহযোগিতা নিয়ে আরো বিস্তৃত হবে।’’