সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : চাঁদপুরের কচুয়ায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে চালক ফারুক হোসেনকে (৩৩) হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে চালকের মোবাইল ফোন ও অটোরিকশা।
শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।
হত্যার শিকার চালক ফারুক হোসেন কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি হত্যার শিকার ফারুক যাত্রী বহনের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। রাত ১০টায় বাড়িতে না আসলে এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় স্ত্রী কচুয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে কচুয়া থানার এসআই কামরুল হাসান একটি দল নিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে তদন্তকারী দল অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন।
তারই ধারবাহিকতায় ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসামি ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি আরিফের দেয়া তথ্য মতে মোবাইল ফোন ও অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আরিফ জানায়, তিনি একজন পেশাদার মাদক কারবারি ও মাদক সেবক। এক সময় ঢাকায় সাউন্ড সিস্টেমের দোকানে কাজ করত। কয়েক বছর আগে নিজ বাড়িতে চলে আসে। জীবিকা নির্বাহের জন্য সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালাতেন। ঘটনার সময় তিনি বেকার ও সংসার চালাতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত ছিল।
অপরদিকে হত্যার শিকার ফারুক অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি মাদক কারবারে জড়িত। ঘটনার দিন ৪ ফেব্রুয়ারি আরিফ হোসেন ফারুকের কাছ থেকে ২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট কেনেন এবং টাকা না থাকায় তার নিজের ব্যবহৃত মোবাইলফোন ব্যবহারের জন্য দিয়ে দেয়।
এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পুনরায় আরিফ তার বাড়ি ফাঁকা আছে এবং ইয়াবা নিয়ে ফারুককে তার বাড়িতে আসার জন্য বলে। ওই বাড়ির বাগানে তারা দুজন ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করে। ফারুক ইয়াবার টাকা চাইলে আরিফ ঘরে গিয়ে একটি নাইলনের দড়ি নিয়ে আসে এবং হঠাৎ ফারুককে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ফারুকের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ নিকটবর্তী ভবানিপুর-পায়ালগাছা সড়কের পাশে ফেলে মোবাইল ও অটোরিকশা নিয়ে আরিফ চলে যায়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পায়ালগাছা সড়কের পাশে জনৈক হালিম পাটওয়ারীর ফসলি জমি সংলগ্ন স্থানে ফারুকের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। জেলা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি মরদেহ শনাক্ত, সুরতহাল প্রস্তুতসহ মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরবর্তীতে ছায়েরা বেগম নামে এক নারী তার স্বামী ফারুকের মরদেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতার আসামিদের চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে। ঘটনায় জড়িতরা কুমিল্লা জেলার হলেও ঘটনাস্থল চাঁদপুরের অংশ।