বিবিসি বাংলাকে ড. ইউনূস পলাতক দলটি দেশকে অস্থিতিশীল করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : একটা পলাতক দল (আওয়ামী লীগ) দেশ ছেড়ে চলে গেছে, তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। এখন তারা দেশটাকে অস্থিতিশীল করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এ মন্তব্য করেন। সোমবার (৩ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।

 

আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গেছে বলে মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, সরকার যখন গঠন হলো, আমার কোনো চিন্তা ছিল না যে আমি হঠাৎ করে একটা সরকারের প্রধান হবো। সেই দেশ, এমন দেশ, যেখানে সব তছনছ হয়ে গেছে। কোনো জিনিস আর ঠিকমতো কাজ করছে না। যা কিছু আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে।

কাজেই আমার প্রথম চেষ্টা ছিল সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। সেই চেষ্টাটার মধ্যে ছিলাম। তারপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতটা কী হবে, সেটার জন্য চিন্তা করা – কোনদিকে আমরা অগ্রসর হবো।

প্রথম চিন্তা এলো যে একটা সংস্কার দরকার আমাদের। কারণ যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেলো, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিসরুল– সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনবো। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।

 

ড. ইউনূস বলেন, যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে, আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের উপর আস্থা স্থাপন করেছে। শুধু আস্থা স্থাপন করেছে না, বিপুলভাবে করেছে। তারা বলছে আমরা অতীতে যা করি নাই তারচেয়ে বেশি করবো এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। সেজন্য তারা বলছে। কাজেই এটা একটাতো বড় প্রমাণ। যখনই আপনি দেশের সারিগুলা দেখবেন- প্রত্যেকটা দেশ নিজে এসে বলেছে, আমরা তোমাদের সমর্থন করছি। তোমাদের যা দরকার আমরা দেবো। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।

 

ছাত্ররা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, এ নিয়ে তিনি বলেন, যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?

 

আওয়ামী লীগ কি নিষিদ্ধ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমাদেরকে এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিৎ, তার বিচার হতে হবে।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» প্রাথমিকে তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত ৬৫৩১ শিক্ষকের যোগদানের তারিখ ঘোষণা

» মঙ্গলবার দুই কর্মসূচি দিল জাতীয় নাগরিক পার্টি

» আগামী নির্বাচনে যে কোন মূল্যে ইসলামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম চাই: মামুনুল হক

» সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি : রিজভী

» রাজধানীতে ছিঁচকে চুরি-ছিনতাই নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র সচিব

» বিলুপ্ত বন্যপ্রাণী ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার : পরিবেশ উপদেষ্টা

» রোহিঙ্গাদের জন্য ৬৮ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে ইইউ

» ‘ক্ষমতা পেলেই লুটেপুটে খাওয়ার মানসিকতা থেকে সরে আসতে হবে’

» সাবঅর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ৭০০ কোটি টাকা মূলধন বাড়ালো ব্র্যাক ব্যাংক

» জিপিস্টার গ্রাহকদের জন্য এপেক্স-এ আকর্ষণীয় ঈদ অফার

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিবিসি বাংলাকে ড. ইউনূস পলাতক দলটি দেশকে অস্থিতিশীল করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : একটা পলাতক দল (আওয়ামী লীগ) দেশ ছেড়ে চলে গেছে, তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। এখন তারা দেশটাকে অস্থিতিশীল করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এ মন্তব্য করেন। সোমবার (৩ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।

 

আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গেছে বলে মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, সরকার যখন গঠন হলো, আমার কোনো চিন্তা ছিল না যে আমি হঠাৎ করে একটা সরকারের প্রধান হবো। সেই দেশ, এমন দেশ, যেখানে সব তছনছ হয়ে গেছে। কোনো জিনিস আর ঠিকমতো কাজ করছে না। যা কিছু আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে।

কাজেই আমার প্রথম চেষ্টা ছিল সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। সেই চেষ্টাটার মধ্যে ছিলাম। তারপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতটা কী হবে, সেটার জন্য চিন্তা করা – কোনদিকে আমরা অগ্রসর হবো।

প্রথম চিন্তা এলো যে একটা সংস্কার দরকার আমাদের। কারণ যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেলো, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিসরুল– সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনবো। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।

 

ড. ইউনূস বলেন, যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে, আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের উপর আস্থা স্থাপন করেছে। শুধু আস্থা স্থাপন করেছে না, বিপুলভাবে করেছে। তারা বলছে আমরা অতীতে যা করি নাই তারচেয়ে বেশি করবো এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। সেজন্য তারা বলছে। কাজেই এটা একটাতো বড় প্রমাণ। যখনই আপনি দেশের সারিগুলা দেখবেন- প্রত্যেকটা দেশ নিজে এসে বলেছে, আমরা তোমাদের সমর্থন করছি। তোমাদের যা দরকার আমরা দেবো। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।

 

ছাত্ররা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, এ নিয়ে তিনি বলেন, যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?

 

আওয়ামী লীগ কি নিষিদ্ধ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমাদেরকে এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিৎ, তার বিচার হতে হবে।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com