‘বিচার বাকি আবুবকরের’ মনে আছে বিশ্বজিৎ… ফিরবে না আবরার : আসিফ নজরুল

ছবি সংগৃহীত

 

হত্যা-নির্যাতনসহ নানা বিতর্কিত কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এরপরই ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আলোচিত তিনজনের ছবি পোস্ট করে স্ট্যাটাস দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

 

গতকাল বুধবার রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশর বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ, পুরান ঢাকার বিশ্বজিৎ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী আবু বকরের ছবি নিজের ফেসবুকে আলাদা আলাদা স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পোস্ট করেন আসিফ নজরুল।

 

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের হাতে নিহত আবরার ফাহাদের ছবি প্রথমে পোস্ট করেন তিনি। সেখানে আসিফ নজরুল লিখেন, ‘কোনো দিন ফিরবে না, আমাদের আবরার!’

 

বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবরার। তাকে শিবির আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে ওই হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড আর ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত।

 

এরপরই পোস্ট করেন ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় দরজি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নৃশংসভাবে কোপানোর একটি ছবি। আসিফ নজরুল লেখেন, ‘মনে আছে বিশ্বজিৎ!’

 

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলার সময় ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দিনে দুপুরে খুন হন বিশ্বজিৎ দাস। তাকেও শিবির আখ্যা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

 

ওই হত্যার একবছর পর ঢাকার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ জনের মধ্যে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছিল। পরে, সেই মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে, ছয়জনকে রেহাই দেন। মামলা থেকে খালাস দেয়া হয় চারজনকে। ওই মামলার আসামিদের মধ্যে এখনও পলাতক ১৩ জন।

 

সবশেষ পোস্ট করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বকরের ছবি। ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে স্যার এ এফ রহমান হলে সিট দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় আহত হয়ে এক দিন পর মারা যান তিনি।

 

আসিফ নজরুল লেখেন, ‘এই বিচার বাকি আছে। হৃদয়ে আবু বকর।’

 

২০১৭ সালেই আবু বকর হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের সাবেক ১০ নেতা-কর্মীর সবাই বেকসুর খালাস পান। সব আসামি খালাস পাওয়ায় কে বা কারা আবু বকরকে খুন করেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি, রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিলও করেনি। ফলে বিচার ছাড়া ওই মামলা সেখানেই শেষ হয়।

সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিনিধি

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মাদকাসক্ত ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ছোট বোন নিহত

» সিটিটিসি কার্যালয় পরিদর্শন করলেন ডিএমপি কমিশনার

» ১৬টি পয়েন্ট তুলে ধরে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে বললেন তারেক রহমান

» সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন ভারতের উচিত তার দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: তথ্য উপদেষ্টা

» আলেম ও মুসলিম নেতৃবৃন্দের প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ উপদেষ্টা মাহফুজের

» ব্র্যাক ব্যাংকের এমপ্লয়ি ব্যাংকিং সুবিধা পাবে সিগাল হোটেলস

» কেমন হলো ভিভো ভি৪০ লাইট এর এআই ফিচার

» ইসলামপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণ ও চেক বিতরণ

» ইসলামপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৫

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘বিচার বাকি আবুবকরের’ মনে আছে বিশ্বজিৎ… ফিরবে না আবরার : আসিফ নজরুল

ছবি সংগৃহীত

 

হত্যা-নির্যাতনসহ নানা বিতর্কিত কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এরপরই ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আলোচিত তিনজনের ছবি পোস্ট করে স্ট্যাটাস দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

 

গতকাল বুধবার রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশর বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ, পুরান ঢাকার বিশ্বজিৎ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী আবু বকরের ছবি নিজের ফেসবুকে আলাদা আলাদা স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পোস্ট করেন আসিফ নজরুল।

 

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের হাতে নিহত আবরার ফাহাদের ছবি প্রথমে পোস্ট করেন তিনি। সেখানে আসিফ নজরুল লিখেন, ‘কোনো দিন ফিরবে না, আমাদের আবরার!’

 

বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবরার। তাকে শিবির আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে ওই হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড আর ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত।

 

এরপরই পোস্ট করেন ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় দরজি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নৃশংসভাবে কোপানোর একটি ছবি। আসিফ নজরুল লেখেন, ‘মনে আছে বিশ্বজিৎ!’

 

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলার সময় ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দিনে দুপুরে খুন হন বিশ্বজিৎ দাস। তাকেও শিবির আখ্যা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

 

ওই হত্যার একবছর পর ঢাকার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ জনের মধ্যে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছিল। পরে, সেই মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে, ছয়জনকে রেহাই দেন। মামলা থেকে খালাস দেয়া হয় চারজনকে। ওই মামলার আসামিদের মধ্যে এখনও পলাতক ১৩ জন।

 

সবশেষ পোস্ট করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু বকরের ছবি। ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে স্যার এ এফ রহমান হলে সিট দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় আহত হয়ে এক দিন পর মারা যান তিনি।

 

আসিফ নজরুল লেখেন, ‘এই বিচার বাকি আছে। হৃদয়ে আবু বকর।’

 

২০১৭ সালেই আবু বকর হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের সাবেক ১০ নেতা-কর্মীর সবাই বেকসুর খালাস পান। সব আসামি খালাস পাওয়ায় কে বা কারা আবু বকরকে খুন করেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি, রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিলও করেনি। ফলে বিচার ছাড়া ওই মামলা সেখানেই শেষ হয়।

সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিনিধি

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com