এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট:বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া -বারইখালী ইউনিয়নের হোগলপাতি মাদ্রাসা সংলগ্ন পুলটি ভেঙ্গে পড়ায় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ’ শিক্ষার্থীর ক্লাশ বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকার পর মেরামতের অভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। পুলটি পুন:নির্মান কিংবা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই।
সরেজমিনে জানা গেছে, বারইখালী খালের উপর নির্মিত এ জনগুরুত্বপূর্ন পুলটি নড়বড়ে অবস্থায় কয়েকবছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে এলাকার দুই পাড়ের লোকজন ও শিক্ষার্থীরা চলাচল করে আসছিল। বিকল্প কোন পথ না থাকায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসলেও বর্তমানে তাও বন্ধ। তাছাড়াও পুলটিতে চলাচলের জন্য ছিলোনা কোন ধর্নির ব্যবস্থা। শিশুরা অভিভাবক ছাড়া পরাপার ও মাদ্রাসা -স্কুলে আসতে পারেনি। পুলটির খাম্বাগুলো নেই। বাঁশ খুটি দিয়ে ধরে রাখার বিফল চেষ্টা। এতো ঝুঁকির মধ্যে ও ইতোপূর্বে মোটর সাইকেল সহ যানবাহন চলাচল করতো। মোরেলগঞ্জ থেকে তেতুলবাড়িয়া বাজার হয়ে জিউধরা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে যাবার এটাই সহজ পথ।এপুলের দুপাড়ে রয়েছে এইচভিএস হাজী নূরউদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, হেফজখানা, মসজিদ, ইসলামি পাঠাগার সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। রয়েছে সাইক্লোন সেল্টার কাম বিদ্যালয়।রয়েছে মাদ্রাসা সংলগ্ন ৫০ হাজার লিটারের বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহের ট্যাংকি। যা থেকে অত্র এলাকার লোকজন পানীয়জল সংগ্রহ করে।
স্থানীয়ভাবে বহুবার নিজস্ব উদ্যোগে পুলটি জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে চালচলের ব্যবস্থা করা হলেও গত বর্তমানে পুলটি মাঝবরাবর ভেঙে পড়ছে। এখন এ পুলটি সম্পূর্ণ চলাচলের অযোগ্য। হামাগুড়ি দিয়ে অনেকে এখনো চলাচল করছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইভা, জাবের, সাথী, রাব্বি জানায়,পুলটি এখন মরনফাঁদে পরিনত হয়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় কোন দূর্ঘটনা। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য গোলাম মোস্তফা জানান,তিনি পুল পেরিয়ে আসার সময় পাশ্ববর্তী খালে পড়ে গিয়ে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। পারাপারের সময় যাত্রী নিয়ে খালে পড়ে যায় একাধিক মোটরসাইকেল চালক।
বারইখালী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, পুলটি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এখানে জরুরীভাবে ব্রিজ নির্মান করা প্রয়োজন। নিশানবাড়ীয়া ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম জানান, পুলটি সচল রাখতে নিজস্ব উদ্যোগে একাধিকবার মেরামতের চেষ্টা করা হয়েছে।
এলজিআরডি দপ্তর থেকে পুলটি নির্মানে মাপজোঁক করা হয়েছে। কিন্তু নির্মানে দীর্ঘসূত্রিতার কারনে পুলটি এখন পুলটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মাদ্রাসা সুপার আব্দুল লতিফ, সহ-সুপার মুহাম্মদ মেহেদী হাসান, বুরহানে সুলতান জানান,পুলটি ভেঙে পড়ায় ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। হামাগুড়ি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষক -শিক্ষার্থীদের পারাপার হতে হয়। জনগুরুত্বপূর্ণ বিধায় এখানে ব্রিজ প্রয়োজন।
উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, এটা একটি জনগুরুত্বপূর্ণ পুল। তাই এখানে ব্রিজ নির্মানে জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে নির্মান করা হবে।