এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট: পবিত্র মাহে রমজান ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। গার্মেন্টস ও কাপড়ের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়, ফুটপাতের দোকানিগুলোতেও কমতি নেই ক্রেতাদের। তবে তীব্র গরমের কারনে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।এদিকে জমজমাট বেচাকেনার সাথে পাল্লা দিয়ে বখাটেদের উৎপাতও চলছে বলে অভিযোগ পরিবার পরিজন নিয়ে বাজারে আসা প্রায় ক্রেতাদের। তবে প্রশাসনের কঠোর তৎপরতায় বখাটেরা তেমন সুবিধা করতে পারছেনা বলেও জানান স্থানীয়রা।এবারে মন কেড়েছে পাকিস্তানি কাওয়ালি করাচি মেয়েদের পোশাক, পাশাপাশি চাহিদার কমতি নেই পাকিস্তানি থ্রিপিচ, ইন্ডিয়ান থ্রিপিচ, সারারা, গারারাসহ বিভিন্ন নামের নানান রঙের পোশাক। গত বছরের চেয়ে প্রতিটি পোশাকে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত দোকানগুলোতে একইভাবে চলছে কেনাবেচা, বাজার মনিটরিং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ক্রেতা বিক্রেতাদের সুবিধার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাখা হচ্ছে নজরদারি, মাঠে থাকছে সার্বক্ষনিক স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের মনিটরিং টিম।
সরেজমিন খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন সহ একটি পৌরসভার প্রানকেন্দ্র মোরেলগঞ্জ বাজার, আসন্ন ঈদুল ফিতরকে ঘিরে দোকানগুলোতে বাড়ছে কেনাকাটার ভিড়, প্রতিনিয়ত প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ থেকে নারী পুরুষেরা দল বেধে আসছেন এ শহরে কেনাকাটার জন্য। শুক্রবার শহরের কাপুড়িয়া পট্টি সড়কের দুই প্রান্তে প্রায় অর্ধ শতাধিক কাপড় ও গার্মেন্টস দোকানগুলোতে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়। পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও কমতি নেই কোনো অংশে।এবারে শাড়ি কাপড়ের দোকানে বেশি বিক্রয় হচ্ছে দেশি প্রিন্টের ছাপা শাড়ি, ৬শ থেকে ১ হাজার টাকা দামে। চাহিদা রয়েছে কাঞ্জিবরন ১৫’শ থেকে ২ হাজার টাকায়, তানাবানা ৩ হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়, স্কাট ফোরাক সর্বনিম্ন ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, ওয়ান পিচ টু পিচ ফোরাক ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা, সারারা গারারা ২৫ শ থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, প্রতিটি গার্মেন্টসের দোকানে মেয়েদের পোশাক ফ্রক আইটেম যেমনি রয়েছে বেশি কাটতিও তেমনি বেশি, দেশীয় টাঙ্গাইল শাড়ি ৫শ থেকে ১২শ টাকা, সিল্ক ৮শ থেকে ১৫শ টাকা, পুরুষের পোশাকের ক্ষেত্রে আমানত শাহ্ লুঙ্গির চাহিদা রয়েছে বেশি সর্বোচ্চ সাড়ে ছয় হাজার টাকা সর্বনি¤œ ১৬’শ থেকে ১৭’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, পাশাপাশি ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে তালুকদার লুুঙ্গিও বিক্রি হচ্ছে ৬শ থেকে ৬৫০ টকায়। একইভাবে মেয়েদের পোষাকে আনারকলি ২ হাজার থেকে ২২’শ টাকায়। শিশুদের ক্ষেত্রে নায়রা পোশাকের চাহিদা রয়েছে বেশি, বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকায়। পাঞ্জাবির চাহিদারও কমতি নেই। শেখসাদি, ভাংচুর পাঞ্জাবি ১৫ শ থেকে ২ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ছেলেদের হাফ চিকুঞ্জি পাঞ্জাবি ১২ শ থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ফুটপাতের দোকানগুলোতে ও নিম্নআয়ের মানুষের রয়েছে ভিড়। মেয়েদের সুতির ফ্রক এখানে বিক্রি হচ্ছে, সর্বনি¤œ ৭’শ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫শ টাকায়।
বিক্রেতা রনি গার্মেন্টস মালিক নুরুজ্জামান শিকদার, মিনা গার্মেন্টসের শাহারিয়ার মিনা ,আইরিন গার্মেন্টস মালিক মনিরুল ইসলাম,রিয়াদ গার্মেন্টস মালিক রিয়াদ হোসেন খলিফা বলেন, ঈদের কেনাকাটা এবারে অনেকটা আগেই শুরু হয়েছে, চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক, দামের ক্ষেত্রে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে গত বছরের চেয়ে প্রতিটি পোশাকে সামান্য ৫০ থেকে ১শ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাপড় বিক্রেতা দেবনাথ বস্ত্রালয়ের মালিক অসীম দেবনাথ বলেন, ঈদ উপলক্ষে এ বছরে এক সপ্তাহ পূর্ব থেকেই কেনাবেচা গার্মেন্টসের দোকানগুলোতে বেড়েছে তবে কাপড়ের দোকানে বিক্রয় হচ্ছে কম, দামের ক্ষেত্রে গতবারের চেয়ে তেমনটা বাড়েনি । এদিকে ফুটপাতের বিক্রেতা সিরাজমিয়া , হাবিব শেখ, সরোয়ান খান, রফিক হাওলাদার, রাজ্জাক হাওলাদার, নজুমিয়াসহ একাধিক দোকানদাররা বলেন,শিশুদের পোশাক তাদের দোকানগুলোতে বেশি চলছে, দামের ক্ষেত্রেও অপেক্ষাকৃত কমদামে পাচ্ছে, গার্মেন্টসের দোকান থেকে যে পোষাকটি ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকায় কিনছে একই পোশাক তাদের দোকান থেকে ৫ শ থেকে ৭শ টাকায় কিনতে পারছে ক্রেতারা।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ রাকিবুল হাসান বলেন, ইদুল ফিতর উপলক্ষ্যে দোকানগুলোতে ক্রয় বিক্রয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং এর জন্য ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশনায় একটি আনসার টিম ও পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি পেট্রোল টিম বাজারে অবস্থান করছেন।