সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘মানুষকে যদি কেউ বলে—তুমি পোলাও-কোরমা চাও নাকি ভোট দিতে চাও? তখন বাংলাদেশের মানুষ বলবে, আমি ভোট দিতে চাই। না খেয়ে থাকলেও অসুবিধা নেই। ভোটের অধিকার এ দেশের মানুষের রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। তারা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।’
সোমবার (১৬ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। বিএনপি প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
বৈঠকের পর ড. মঈন খান জানান, সারাহ কুকের সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, শিক্ষা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া আগামীতে বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চায়, সে বিষয়ে তাদের প্রত্যাশাও উঠে এসেছে।
নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন দেখতে চায় সবাই। নতুন প্রজন্ম, যারা গত ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, তারা ভোট দিতে চায়। সরকারের পক্ষ থেকে যখন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়, তখন মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। আমি গ্রামে গিয়েও মানুষের এই উচ্ছ্বাস দেখেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোট বাংলাদেশের মানুষের কাছে নববর্ষের উৎসবের মতোই এক উত্সব। মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কখন ভোট দেবে, মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করবে এবং সত্যিকারের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।’
ড. মঈন খান জানান, আলোচনায় ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও কীভাবে উন্নত করা যায়, সে বিষয়েও কথা হয়েছে।
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কোনো দাবি থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো দাবির বিষয় নয়। বরং বাংলাদেশের রাজনীতিকে দাবিদাওয়া আর প্রতিক্রিয়ার এই চক্র থেকে বের হতে হবে। দরকার পারস্পরিক সমঝোতার মনোভাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৩ জুন একটি বৈঠক হয়েছে। আমি ড. ইউনূস সাহেবকে বলেছি—শুধু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দিন, দেশের সব সমস্যা একদিনেই দূর হয়ে যাবে। ১৩ জুনের পর থেকে দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এসেছে। মানুষ আশাবাদী হয়ে উঠেছে, গণতন্ত্র ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছে। এ দেশ গণতন্ত্রের জন্যই সৃষ্টি হয়েছিল।’
গণতন্ত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যতদিন জবাবদিহিতা থাকবে না, ততদিন সরকার প্রধান শক্তিশালী হয়ে যাবেন। সঠিক জবাবদিহিতা থাকলে প্রধানমন্ত্রী নিজেও এভাবে একচ্ছত্র ক্ষমতাধর হয়ে উঠতেন না।’
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এর সূত্রপাত গাজা উপত্যকা থেকে। ইরান-ইসরায়েলের সংঘাত নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশ্ব এক অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ, লাভবান হয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। আমরা শান্তিময় বিশ্ব দেখতে চাই।’