বলতে এসো না ভালোবাসি এবং চিঠি দিও

ছবি সংগৃহীত

 

আয়শা সাথীর কবিতা :

বলতে এসো না ভালোবাসি

কখনো বলতে এসো না ‘তোমাকে ভালোবাসি’।
কংক্রিটের দুনিয়ায় তীব্র অনীহা নিয়ে
দূর শুকতারার পানে একবুক কোমল ভালোবাসার
বুভুক্ষিত প্রতীক্ষা নিয়ে তাকিয়ে থাকলে
তখন খোলা চুলে কিছুক্ষণ বসো আমার পাশে।
না! কোনো সান্ত্বনা নয়,
বরং আদরের চাদরে জড়িয়ে বলে দিও—
‘আমার কাছে তামাম দুনিয়ার কোনো কিছুই
আপনার জীবনের চেয়ে দামি নয়।’

মন খারাপের দেশে যখন অকারণেই মন খারাপ হয়
তখন তুমি প্রণয়ের আহ্লাদি বাতাস হও,
চুলে আঙুল ডুবিয়ে
উড়িয়ে দাও দীর্ঘশ্বাস নামক কার্বন-ডাই-অক্সাইড।
আমার অশান্ত হৃদয়ে গড়ে তোলো শান্তি নিকেতন,
প্রেম-পূর্ণতার পরশ মেখে জানিয়ে দিও—
‘আসমান জমিনের কোনো কিছুতেই
আপনি ছাড়া আমি পূর্ণ নই।’

কোনো অভিযোগের অভিলাষ না রেখেই
তুমি না হয় আমার দুঃখ-অভিসার হও,
দায়িত্ব নাও আমার বাউণ্ডুলেপনার
আমার উড়নচণ্ডি স্বভাবের
বিরতিহীন ভালোবাসার অভাবের।
না! না! নিঃস্বার্থে নয়, সেখানে স্বার্থ থাকুক
ভালোবাসা বিনিময়াদি-স্বার্থ।

বলা না বলার মাঝে ভালোবাসা থাকে না।
তুমি কি জানো না, ভালোবাসা থাকে অনুভবে,
পারস্পারিক আবেগে দায়িত্বে, মমতায় কিংবা যতনে!

****

চিঠি দিও

একদিন চলে যাবো শরৎবাবুর ‘দেবদাস’র মতো;
রবিঠাকুরের ‘কৃষ্ণকলি’কে ছেড়ে
জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি নদীটি রেখে।
আমি চলে যাবো
ইমতিয়াজ মাহমুদের গাঢ় অভিমান বুক পকেটে নিয়ে
জসিম উদদীনের ‘কবর’ কবিতার মাটির দিকে,
যে ঘরে অনায়াসেই প্রবেশাধিকার পাবে
হুমায়ূনের ‘কুটু মিয়ার’ কবরের মতো বৃষ্টি-জল।

সেদিন রুদ্রের আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখার জন্য
রেখে যাবো না একটি শব্দও,
আবেগী কণ্ঠে ডাকবো না আর বনলতা সেন।
মানিকবাবুর কুবের মাঝি
সেদিন বাঁধনছেড়া হবে তোমাকে রেখেই।

সুনীলের একশ আটটা নীলপদ্মের বদলে
তোমার তরে রেখে যাবো হেলাল হাফিজের দুঃখ,
শামসুর রাহমানের ‘হৃদয় নিঃসঙ্গ চিল’র মতো
তোমাকেও উপহার দেবো এক আকাশ নিঃসঙ্গতা।
সেলিনার ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ ভেঙে
জহিরের ‘টুনি’র মতো হাজার বছর ধরে
তোমার অন্ত্রে-তন্ত্রে বাজাবো বিষের বাঁশি।
খোঁপায় দেওয়া নজরুলের তারার ফুল ছিনিয়ে
‘অনামিকা’র কণ্ঠে জড়িয়ে দেবো নীল রোদন।

সেদিন সাদাত হোসাইনের ‘কাজল চোখের মেয়ে’র মনে
হয়তো জমবে রবির ‘অনন্তপ্রেম’,
তবু মহাদেব সাহার ন্যায় সেদিন আর বলবো না
‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও’।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চোরাচালান প্রতিরোধে কোস্টগার্ডকে আন্তরিক হয়ে কাজের আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

» সোনারগাঁয়ে হাসিনা-রেহানা-জয়ের নামে মামলা

» হিন্দু ভাইদের উসকানি দিচ্ছে আ’লীগের লোকজন: জামায়াত সেক্রেটারি

» বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না ডিম-ব্রয়লার মুরগি

» একটি মহল অন্তর্বর্তী সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় রাখতে চায় : মির্জা ফখরুল

» ভারতে যাওয়ার সময় কুমিল্লায় আটক আ.লীগ নেতা

» ভারতের বিপক্ষে যেসব মাইলফলকের হাতছানি টাইগারদের

» ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে তারেক রহমানের বিবৃতি

» কেন কাজলকে সহ্য করতে পারতো না শাহরুখপুত্র আব্রাম?

» সাংহাইয়ে শক্তিশালী টাইফুন ‘বেবিনকা’র আঘাত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বলতে এসো না ভালোবাসি এবং চিঠি দিও

ছবি সংগৃহীত

 

আয়শা সাথীর কবিতা :

বলতে এসো না ভালোবাসি

কখনো বলতে এসো না ‘তোমাকে ভালোবাসি’।
কংক্রিটের দুনিয়ায় তীব্র অনীহা নিয়ে
দূর শুকতারার পানে একবুক কোমল ভালোবাসার
বুভুক্ষিত প্রতীক্ষা নিয়ে তাকিয়ে থাকলে
তখন খোলা চুলে কিছুক্ষণ বসো আমার পাশে।
না! কোনো সান্ত্বনা নয়,
বরং আদরের চাদরে জড়িয়ে বলে দিও—
‘আমার কাছে তামাম দুনিয়ার কোনো কিছুই
আপনার জীবনের চেয়ে দামি নয়।’

মন খারাপের দেশে যখন অকারণেই মন খারাপ হয়
তখন তুমি প্রণয়ের আহ্লাদি বাতাস হও,
চুলে আঙুল ডুবিয়ে
উড়িয়ে দাও দীর্ঘশ্বাস নামক কার্বন-ডাই-অক্সাইড।
আমার অশান্ত হৃদয়ে গড়ে তোলো শান্তি নিকেতন,
প্রেম-পূর্ণতার পরশ মেখে জানিয়ে দিও—
‘আসমান জমিনের কোনো কিছুতেই
আপনি ছাড়া আমি পূর্ণ নই।’

কোনো অভিযোগের অভিলাষ না রেখেই
তুমি না হয় আমার দুঃখ-অভিসার হও,
দায়িত্ব নাও আমার বাউণ্ডুলেপনার
আমার উড়নচণ্ডি স্বভাবের
বিরতিহীন ভালোবাসার অভাবের।
না! না! নিঃস্বার্থে নয়, সেখানে স্বার্থ থাকুক
ভালোবাসা বিনিময়াদি-স্বার্থ।

বলা না বলার মাঝে ভালোবাসা থাকে না।
তুমি কি জানো না, ভালোবাসা থাকে অনুভবে,
পারস্পারিক আবেগে দায়িত্বে, মমতায় কিংবা যতনে!

****

চিঠি দিও

একদিন চলে যাবো শরৎবাবুর ‘দেবদাস’র মতো;
রবিঠাকুরের ‘কৃষ্ণকলি’কে ছেড়ে
জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি নদীটি রেখে।
আমি চলে যাবো
ইমতিয়াজ মাহমুদের গাঢ় অভিমান বুক পকেটে নিয়ে
জসিম উদদীনের ‘কবর’ কবিতার মাটির দিকে,
যে ঘরে অনায়াসেই প্রবেশাধিকার পাবে
হুমায়ূনের ‘কুটু মিয়ার’ কবরের মতো বৃষ্টি-জল।

সেদিন রুদ্রের আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখার জন্য
রেখে যাবো না একটি শব্দও,
আবেগী কণ্ঠে ডাকবো না আর বনলতা সেন।
মানিকবাবুর কুবের মাঝি
সেদিন বাঁধনছেড়া হবে তোমাকে রেখেই।

সুনীলের একশ আটটা নীলপদ্মের বদলে
তোমার তরে রেখে যাবো হেলাল হাফিজের দুঃখ,
শামসুর রাহমানের ‘হৃদয় নিঃসঙ্গ চিল’র মতো
তোমাকেও উপহার দেবো এক আকাশ নিঃসঙ্গতা।
সেলিনার ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ ভেঙে
জহিরের ‘টুনি’র মতো হাজার বছর ধরে
তোমার অন্ত্রে-তন্ত্রে বাজাবো বিষের বাঁশি।
খোঁপায় দেওয়া নজরুলের তারার ফুল ছিনিয়ে
‘অনামিকা’র কণ্ঠে জড়িয়ে দেবো নীল রোদন।

সেদিন সাদাত হোসাইনের ‘কাজল চোখের মেয়ে’র মনে
হয়তো জমবে রবির ‘অনন্তপ্রেম’,
তবু মহাদেব সাহার ন্যায় সেদিন আর বলবো না
‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও’।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com