বর্তমানে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই

সংগৃহীত ছবি
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী :কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা কথায় কথায় রাস্তায় নেমে যাচ্ছে, ভাঙচুর করছে। এর বড় কারণ বর্তমানে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই। একসময় ছাত্রসংগঠনগুলো শক্তিশালী ছিল। ছাত্ররা এই সংগঠনের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাত।

এখন ছাত্রসংসদও নেই। কার্যকর ছাত্রসংসদ থাকলে শিক্ষার্থীরা এর মধ্য দিয়ে তাদের বক্তব্যগুলো প্রকাশ করতে পারত। ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাতে পারত। ছাত্রসংসদের নেতারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও ছাত্রদের যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারত। কিন্তু এখন ছাত্রদের সামনে সেই সুযোগগুলো নেই।

 

বাংলাদেশ যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন কিন্তু এমন ছিল না। ১৯৯১ সালের পর যখন আমরা গণতন্ত্রের মধ্যে এসেছি, তখন থেকেই ছাত্রসংগঠন ও ছাত্রসংসদ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। অথচ ছাত্রসংসদ একটি নির্বাচিত সংসদ।

 

ছাত্ররাই তাদের ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করে। ফলে তারা ওই নির্বাচিত সংসদে তাদের সমস্যা নিয়ে যেতে পারে।

 

এ ছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে— সহিষ্ণুতার অভাব। এর বড় কারণ গত ১৬ বছরের একদলীয় শাসন। এই সময়ে মত প্রকাশের বা কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না।

 

অনেকটা স্বৈরশাসনের সংস্কৃতি ছিল। আর এই সময়ে তাদের যে ছাত্রসংগঠন ছিল তা হিংস্র হয়ে পড়ে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তরণে তিনটি বিষয় খুবই প্রয়োজন। প্রথমত, আমাদের দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হওয়াটা খুব জরুরি। যাতে তাদের রাস্তায় নামতে না হয়। তারা ছাত্রসংসদের মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। আর তৃতীয় যে বিষয়টি দরকার তা হচ্ছে, ছাত্রসংগঠনগুলো শক্তিশালী হওয়া। তবে ছাত্রসংগঠন এমন হতে হবে, তারা যেন ক্ষমতাসীন দলের লেজুড়বৃত্তি না করে। সেটা মোটেও বাঞ্ছনীয় না। আর এগুলোর মধ্য দিয়েই ছাত্ররা তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক মতামত প্রকাশ করতে পারবে।

লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ঈদ উল আযহা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষন ও সীমান্ত দিয়ে পুশইন প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বিজিবি

» সৌদির সাথে মিল রেখে জামালপুরে ২০ গ্রামে ঈদুল আযহা উদযাপন

» আমিরাতে ঈদুল আজহা উদযাপন

» সীমান্তে গরু চোরাচালান কমলেও হত্যা থামেনি : আজাদ মজুমদার

» দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান

» এবার নিরাপত্তা নিয়ে শতভাগ কনফিডেন্ট আছি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা

» বিপুল পরিমাণ মাদকসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার

» ঢাকার একটি ঈদ জামাতও নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার

» তারুণ্যনির্ভর আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত জয়

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বর্তমানে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই

সংগৃহীত ছবি
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী :কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা কথায় কথায় রাস্তায় নেমে যাচ্ছে, ভাঙচুর করছে। এর বড় কারণ বর্তমানে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই। একসময় ছাত্রসংগঠনগুলো শক্তিশালী ছিল। ছাত্ররা এই সংগঠনের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাত।

এখন ছাত্রসংসদও নেই। কার্যকর ছাত্রসংসদ থাকলে শিক্ষার্থীরা এর মধ্য দিয়ে তাদের বক্তব্যগুলো প্রকাশ করতে পারত। ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাতে পারত। ছাত্রসংসদের নেতারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও ছাত্রদের যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারত। কিন্তু এখন ছাত্রদের সামনে সেই সুযোগগুলো নেই।

 

বাংলাদেশ যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন কিন্তু এমন ছিল না। ১৯৯১ সালের পর যখন আমরা গণতন্ত্রের মধ্যে এসেছি, তখন থেকেই ছাত্রসংগঠন ও ছাত্রসংসদ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। অথচ ছাত্রসংসদ একটি নির্বাচিত সংসদ।

 

ছাত্ররাই তাদের ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করে। ফলে তারা ওই নির্বাচিত সংসদে তাদের সমস্যা নিয়ে যেতে পারে।

 

এ ছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে— সহিষ্ণুতার অভাব। এর বড় কারণ গত ১৬ বছরের একদলীয় শাসন। এই সময়ে মত প্রকাশের বা কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না।

 

অনেকটা স্বৈরশাসনের সংস্কৃতি ছিল। আর এই সময়ে তাদের যে ছাত্রসংগঠন ছিল তা হিংস্র হয়ে পড়ে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তরণে তিনটি বিষয় খুবই প্রয়োজন। প্রথমত, আমাদের দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হওয়াটা খুব জরুরি। যাতে তাদের রাস্তায় নামতে না হয়। তারা ছাত্রসংসদের মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। আর তৃতীয় যে বিষয়টি দরকার তা হচ্ছে, ছাত্রসংগঠনগুলো শক্তিশালী হওয়া। তবে ছাত্রসংগঠন এমন হতে হবে, তারা যেন ক্ষমতাসীন দলের লেজুড়বৃত্তি না করে। সেটা মোটেও বাঞ্ছনীয় না। আর এগুলোর মধ্য দিয়েই ছাত্ররা তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক মতামত প্রকাশ করতে পারবে।

লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com