ফ্রন্টলাইনকে ড. দেবপ্রিয় ভারতের উচিত আগে মুসলিমদের সঙ্গে আচরণের প্রভাব স্বীকার করা

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে মন্তব্য করার আগে ভারত সরকারের এটা স্বীকার করা উচিত, তাদের নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়- তার একটা প্রতিক্রিয়া অবশ্যই পড়ে।

 

ভারতের পাক্ষিক ম্যাগাজিন ফ্রন্টলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি গত মঙ্গলবার ম্যাগাজিনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। নিরুপমা সুব্রহ্মণ্যমের নেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে গত বছর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন পরবর্তী সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

 

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি ভারতীয় পার্লামেন্টে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর দুই হাজার ৪০০টি এবং ২০২৫ সালে ৭২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ফ্রন্টলাইন ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কি এই পরিসংখ্যানগুলোকে অতিরঞ্জিত বলে মনে করেন কি না।

 

জবাবে বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ ও জননীতি বিশেষজ্ঞ জানান, এই ধরনের ঘটনা হিসাব করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) পলায়নের পর বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটে।

 

দেবপ্রিয় বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী বিশৃঙ্খল ছিল। কিছু সময়ের জন্য, নিরাপত্তার দায়িত্ব সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর হাতে চলে যায়, কিন্তু পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ছিল।

 

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক ধর্মীয় সংখ্যালঘু ঐতিহাসিকভাবে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলকে (আওয়ামী লীগ) সমর্থন করেছে। সুতরাং কিছু ক্ষেত্রে এটি আলাদা করা কঠিন যে, কোনো হিন্দু ব্যক্তির ওপর তাদের বিশ্বাসের কারণে আক্রমণ করা হয়েছিল নাকি তারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সমর্থক ছিল।

 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যেমন হিন্দু এবং বৌদ্ধরা ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠের অংশ। একইভাবে ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যেমন- মুসলমানরা বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই, যখন ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে মন্তব্য করে, তখন তাদের স্বীকার করতে হবে যে, তাদের নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি তাদের আচরণের প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘আমার মা শেখ হাসিনার দলের সংসদ সদস্য ছিলেন এবং আমার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক নিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছিলেন। কিন্তু এই ব্যক্তিগত সংযোগগুলো আমার পেশার এবং বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে না।’

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দেশব্যাপী সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে মানববন্ধন 

» বড়াইগ্রামে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু

» ফ্যাসিস্ট সরকারের নীতি ছিল লুটেপুটে খাওয়া: জোনায়েদ সাকি

» সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি

» ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাৎ

» বাংলাদেশে নাশকতা চালাতে হাসিনাকে সহযোগিতা করছে ভারত: রিজভী

» ৩২ নম্বরে ফুল দেওয়া সেই রিকশাচালকের জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই

» একনেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন

» পাথর লুটের ঘটনায় প্রশাসনের যোগসাজশ ছিল : পরিবেশ উপদেষ্টা

» ভরাডুবির ভয়ে নির্বাচন চাচ্ছে না কিছু খুচরা পার্টি : দুদু

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ফ্রন্টলাইনকে ড. দেবপ্রিয় ভারতের উচিত আগে মুসলিমদের সঙ্গে আচরণের প্রভাব স্বীকার করা

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট : বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে মন্তব্য করার আগে ভারত সরকারের এটা স্বীকার করা উচিত, তাদের নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়- তার একটা প্রতিক্রিয়া অবশ্যই পড়ে।

 

ভারতের পাক্ষিক ম্যাগাজিন ফ্রন্টলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি গত মঙ্গলবার ম্যাগাজিনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। নিরুপমা সুব্রহ্মণ্যমের নেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে গত বছর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন পরবর্তী সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

 

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি ভারতীয় পার্লামেন্টে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর দুই হাজার ৪০০টি এবং ২০২৫ সালে ৭২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ফ্রন্টলাইন ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য কি এই পরিসংখ্যানগুলোকে অতিরঞ্জিত বলে মনে করেন কি না।

 

জবাবে বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ ও জননীতি বিশেষজ্ঞ জানান, এই ধরনের ঘটনা হিসাব করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) পলায়নের পর বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতি ঘটে।

 

দেবপ্রিয় বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী বিশৃঙ্খল ছিল। কিছু সময়ের জন্য, নিরাপত্তার দায়িত্ব সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর হাতে চলে যায়, কিন্তু পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ছিল।

 

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক ধর্মীয় সংখ্যালঘু ঐতিহাসিকভাবে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলকে (আওয়ামী লীগ) সমর্থন করেছে। সুতরাং কিছু ক্ষেত্রে এটি আলাদা করা কঠিন যে, কোনো হিন্দু ব্যক্তির ওপর তাদের বিশ্বাসের কারণে আক্রমণ করা হয়েছিল নাকি তারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সমর্থক ছিল।

 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যেমন হিন্দু এবং বৌদ্ধরা ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠের অংশ। একইভাবে ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যেমন- মুসলমানরা বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই, যখন ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে মন্তব্য করে, তখন তাদের স্বীকার করতে হবে যে, তাদের নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি তাদের আচরণের প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘আমার মা শেখ হাসিনার দলের সংসদ সদস্য ছিলেন এবং আমার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক নিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছিলেন। কিন্তু এই ব্যক্তিগত সংযোগগুলো আমার পেশার এবং বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে না।’

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com