সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘ছয়টা সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তারা তিনটা টাইম ফ্রেমে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন। আশু করণীয়, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মৌলিক সংস্কারগুলো করার সাথে সাথেই আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় চলে যেতে চাই। অযথা সময়ক্ষেপণ করে ক্ষমতায় থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা এই সরকারের নেই। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে সংস্কার প্রতিবেদনগুলো নিয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করব।
আজ শনিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘কেউ আশু করণীয় বলতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে করণীয় বুঝিয়েছেন। কেউ বুঝিয়েছেন যে সংস্কারগুলো আগামীকাল থেকে শুরু করা যায়। তবে অবশ্যই এই সংস্কারগুলো আগামী নির্বাচনের আগে করা প্রয়োজন বলে উনারা মনে করেন। আশু করণীয় কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, ‘কিছু প্রস্তাব আছে যা নিয়ে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। এমন কিছু কাজ সংস্কার প্রস্তাব আসার আগেই আমরা করে ফেলেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার নির্বাচন পরবর্তী সরকার করবে। আশু করণীয় বিষয়ে আমরা আশা করছি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনের আগেই করা হবে। মধ্যমেয়াদি সংস্কার নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলো কতটা রাজি আছে তার উপরে। অনেক সংস্কার আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোও করেছে। গত ৫৫ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো অনেক ভালো ভালো কাজ করেছে। সমালোচনার সময় আমরা সেগুলো ভুলে যাই। প্রতিটা দলেরই সংস্কার ভাবনা রয়েছে। সংস্কার কমিশনগুলোর যত প্রস্তাব আছে, তা তিনদলীয় জোটের রূপরেখার মধ্যেও ছিল। উনাদের (রাজনৈতিক দল) মধ্যে যদি এই সংশয়টা দূর হয় যে, সংস্কারগুলো আমাদের ক্ষমতায় থাকা দীর্ঘায়িত করার জন্য করা হচ্ছে না, তাহলে অনেক কিছু বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘পাঁচটা কমিশন আশু করণীয় সুপারিশ দিয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন কোনো আশু করণীয় সুপারিশ দেয়নি। কারণ সংবিধান সংস্কারের প্রতিটা প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হবে। অনেক ক্ষেত্রে নতুন আইন করতে হবে। কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন হবে। কিছু বিষয়ে হবে না। ইতোমধ্যে আমরা কিছু আইন করেও ফেলেছি।
এ সময় তিনি সংস্কার কমিশনগুলোর আশু করণীয় সুপারিশগুলো তুলে ধরেন। নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা আশু করণীয় হিসেবে অনেক সুপারিশ দিয়েছেন। কালো টাকা সাদা করার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ করার কথা বলেছেন। দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না এমন সকল ইনডেমনিটি আইন চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করতে বলেছেন।
এ সময় দুর্নীতি নিয়ে নিজের অধীনে থাকা দুইটি মন্ত্রণালয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘সেখানে যারা মন্ত্রী ছিলেন, তারা তাদের অবৈধভাবে উপার্জিত হাজার কোটি টাকা কিছু বেসরকারি ব্যাংকে জমা রেখেছেন, যে ব্যাংকগুলো প্রতিষ্ঠার সঙ্গে উনারা নিজেরা বা তাদের আত্মীয়-স্বজনরা জড়িত। যেগুলো উদ্ধার করতে আমার জান বেরিয়ে যাচ্ছে।’