ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না করার পায়তারা চলছে, শিগগিরই টের পাবেন: মাসুদ কামাল

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না করার যে একটা পায়তারা চলছে এবং সেই পায়তারা যে বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা খুব শিগগিরই আপনারা টের পাবেন। কাজেই যারা নির্বাচনের ঘোষণা শুনে ভেবেছিলাম নির্বাচনটা হবে, এখন সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।

 

মাসুদ কামাল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, তাঁর অফিস থেকে অফিস থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতিও নেওয়া শুরু করেছে।

 

কিন্তু এর মধ্যেই দেখলাম এনসিপির নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না। এনসিপির এই নেতাকে উদ্দেশ করে মাসুদ কামাল বলেন, আপনি কে, আপনি কি নির্বাচন কমিশনের কেউ, আপনি কি সরকারের কেউ, আপনি কি সরকারের এমন কোন ব্যক্তি যিনি প্রধান উপদেষ্টার চেয়েও বেশি বোঝেন অথবা বেশি ক্ষমতা রাখেন? কেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না সে বিষয়ে উনি একটা ব্যাখ্যা দিলেন— জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে, হত্যার বিচার করতে হবে, সংস্কার করতে হবে। এগুলো না করলে নির্বাচন তারা হতে দিবেন না। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন হতে না দেওয়ার মতো সক্ষমতা কি এনসিপি অথবা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর আছে?

 

তিনি বলেন, এই বক্তব্য দেওয়ার ঠিক একদিন আগে উনারা গিয়েছিলেন মার্কিন দূতাবাসে।

 

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে এনসিপি নেতারা বৈঠক করেছেন। এদের মধ্যে ছিলেন, নাহিদ ইসলাম, আতার হোসেন এবং তাসনিম জারা। রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে তারা প্রায় এক ঘণ্টা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। এগুলো নিয়ে এনসিপির সঙ্গেই বৈঠক কেন? এনসিপি কি এই সময় সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল? এই নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী? তারা কি আমাদের নির্বাচন করে দিবে?

 

মাসুদ কামাল আরো বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পরদিন কেন হুঙ্কার দিলেন এনসিপি নেতা? যুক্তরাষ্ট্র কি এদের মাধ্যমে কোন চাপ দিচ্ছে? তারা কি কোন দিক নির্দেশনা দিচ্ছে? তাহলে কি আমি ভাববো পরের দিন যে তারা ঘোষণা করলেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না, এটা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মিটিং থেকে নির্দেশনা পেয়েই তারা এটা বললেন?

 

তিনি আরো বলেন, যেদিন এনসিপি নেতারা বললেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না, ঠিক সেই একই দিন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে আরো দুজন ব্যক্তি গিয়েছিলেন। তারা হলেন— আলী রিয়াজ এবং মনির হায়দার। আলী রিয়াজ সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহসভাপতি। মঙ্গলবার তিনি এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্য ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তারা দুইজনেই যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক। বাংলাদেশের হয়ে তারা তাদের নিজেদের দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন, শুনতে গেছেন আর কী কী করলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করা যাবে।

 

কারণ তারা যখন নাগরিকত্ব নিয়েছেন, তখন তো শপথ করেছেন যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করবেন। মাসুদ কামাল আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উপর চেপে বসেছে। তারাই দিক নির্দেশনা দিচ্ছে যে দেশ কিভাবে চলবে। তারা আগেও এভাবে চেষ্টা করেছে। তারা বলে দিচ্ছে যে কিভাবে দেশ চালাতে হবে এবং যারা এখন দেশ দেশের চালিকাশক্তির জায়গায় আছে তাদের ডেকে ডেকে মিটিং করছে।…ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না করার যে একটা পায়তারা চলছে এবং সেই পায়তারা যে বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা খুব শিগগিরই আপনারা টের পাবেন। কাজেই যারা নির্বাচনের ঘোষণা শুনে ভেবেছিলাম নির্বাচনটা হবে, এখন সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা রাজনীতি করবেন তাদের পদত্যাগ করা উচিৎ : আসিফ মাহমুদ

» আল্লামা সাঈদীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

» ভালুকায় বিদেশি মদ-অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার বাহাদুর

» ডাকসু নির্বাচনে ভোটার হলেন নাহিদ ইসলাম

» গুলশানের চাঁদাবাজির ঘটনায় উপদেষ্টা জড়িত কিনা, স্পষ্ট করা দরকার: সালাহউদ্দিন আহমদ

» ড্রোন প্রশিক্ষণ নিতে চীনে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল

» রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ২১৪৯ মামলা

» ২৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন মাইলস্টোনের শিক্ষিকা মাহফুজা

» উল্কাবৃষ্টি কেন হয়?

» দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না করার পায়তারা চলছে, শিগগিরই টের পাবেন: মাসুদ কামাল

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না করার যে একটা পায়তারা চলছে এবং সেই পায়তারা যে বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা খুব শিগগিরই আপনারা টের পাবেন। কাজেই যারা নির্বাচনের ঘোষণা শুনে ভেবেছিলাম নির্বাচনটা হবে, এখন সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।

 

মাসুদ কামাল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, তাঁর অফিস থেকে অফিস থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতিও নেওয়া শুরু করেছে।

 

কিন্তু এর মধ্যেই দেখলাম এনসিপির নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না। এনসিপির এই নেতাকে উদ্দেশ করে মাসুদ কামাল বলেন, আপনি কে, আপনি কি নির্বাচন কমিশনের কেউ, আপনি কি সরকারের কেউ, আপনি কি সরকারের এমন কোন ব্যক্তি যিনি প্রধান উপদেষ্টার চেয়েও বেশি বোঝেন অথবা বেশি ক্ষমতা রাখেন? কেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না সে বিষয়ে উনি একটা ব্যাখ্যা দিলেন— জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে, হত্যার বিচার করতে হবে, সংস্কার করতে হবে। এগুলো না করলে নির্বাচন তারা হতে দিবেন না। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন হতে না দেওয়ার মতো সক্ষমতা কি এনসিপি অথবা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর আছে?

 

তিনি বলেন, এই বক্তব্য দেওয়ার ঠিক একদিন আগে উনারা গিয়েছিলেন মার্কিন দূতাবাসে।

 

ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে এনসিপি নেতারা বৈঠক করেছেন। এদের মধ্যে ছিলেন, নাহিদ ইসলাম, আতার হোসেন এবং তাসনিম জারা। রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে তারা প্রায় এক ঘণ্টা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। এগুলো নিয়ে এনসিপির সঙ্গেই বৈঠক কেন? এনসিপি কি এই সময় সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল? এই নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী? তারা কি আমাদের নির্বাচন করে দিবে?

 

মাসুদ কামাল আরো বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পরদিন কেন হুঙ্কার দিলেন এনসিপি নেতা? যুক্তরাষ্ট্র কি এদের মাধ্যমে কোন চাপ দিচ্ছে? তারা কি কোন দিক নির্দেশনা দিচ্ছে? তাহলে কি আমি ভাববো পরের দিন যে তারা ঘোষণা করলেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না, এটা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মিটিং থেকে নির্দেশনা পেয়েই তারা এটা বললেন?

 

তিনি আরো বলেন, যেদিন এনসিপি নেতারা বললেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না, ঠিক সেই একই দিন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে আরো দুজন ব্যক্তি গিয়েছিলেন। তারা হলেন— আলী রিয়াজ এবং মনির হায়দার। আলী রিয়াজ সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহসভাপতি। মঙ্গলবার তিনি এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্য ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তারা দুইজনেই যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক। বাংলাদেশের হয়ে তারা তাদের নিজেদের দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন, শুনতে গেছেন আর কী কী করলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করা যাবে।

 

কারণ তারা যখন নাগরিকত্ব নিয়েছেন, তখন তো শপথ করেছেন যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করবেন। মাসুদ কামাল আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উপর চেপে বসেছে। তারাই দিক নির্দেশনা দিচ্ছে যে দেশ কিভাবে চলবে। তারা আগেও এভাবে চেষ্টা করেছে। তারা বলে দিচ্ছে যে কিভাবে দেশ চালাতে হবে এবং যারা এখন দেশ দেশের চালিকাশক্তির জায়গায় আছে তাদের ডেকে ডেকে মিটিং করছে।…ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না করার যে একটা পায়তারা চলছে এবং সেই পায়তারা যে বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা খুব শিগগিরই আপনারা টের পাবেন। কাজেই যারা নির্বাচনের ঘোষণা শুনে ভেবেছিলাম নির্বাচনটা হবে, এখন সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com