সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : আমেরিকায় বেড়ে উঠা প্রজন্মকে বাংলা ও বাঙালি কালচারের সাথে জড়িয়ে রাখার সংকল্পে হাজার হাজার উচ্ছ্বল তরুণ-তরুণীর উপস্থিতিতে ২৮ জুন শনিবার ফিলাডেলফিয়া সিটি সংলগ্ন আপার ডারবি পার্কে এক অভাবনীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পরিবেশে দিনব্যাপী আয়োজিত বৈশাখী মেলায় পেনসিলভেনিয়া স্টেটের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রবাসীরা ছুটে আসেন। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. আব্দুল কাদের মিয়া কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পারস্পরিক সহযোগিতার দিগন্ত প্রসারিত থাকলে আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম হবেই। আর এজন্যেই বহুজাতিক এ সমাজে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে উঠা প্রজন্মকে এ ধরনের আয়োজনে আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে।
বৈশাখী মেলা আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারি এবং মিলবোর্ন বরোর মেয়র মাহবুবুল আলম তৈয়ব বিশাল উপস্থিতিকে অভিনন্দিত করে বলেন, এলাকার মানুষেরা প্রিয় মাতৃভূমির ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি এতটাই দরদি যে, অসহনীয় খরতাপ উপেক্ষা করেই সপরিবারে মেলায় এসেছেন। শুধু তাই নয়, এই স্টেটের নির্বাচিত সিনেটর, ফিলাডেলফিয়া সিটির ডেপুটি মেয়র, আপার ডারবির মেয়রসহ অনেকেই এসেছেন প্রবাসীদের এ আয়োজনে। সকলের মধ্যেকার সম্প্রীতির এই বন্ধন অটুট রাখতে পারলে নিকট ভবিষ্যতে বাঙালিরা আরও সাফল্য দেখাতে সক্ষম হবেন।
ডেমক্র্যাটিক পার্টির এই মেয়র আরও বলেন, ভোট যুদ্ধেও আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
পেনসিলভেনিয়ার স্টেট সিনেটর টিম কিয়ারনি প্রবাসীদের কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করে বলেন, তারা শুধু আপার ডারবি কিংবা ফিলাডেলফিয়া সিটির কল্যাণেই নিরন্তর ভাবে অবদান রাখছেন না, গোটা আমেরিকাতেই বিশেষ একটি অবস্থানে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন। সিনেটর টিম কিয়ারনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, বাঙালিদের কর্মকাণ্ড আমাকে এতটাই অভিভূত করেছে যে এখন আমি বাঙালি খাবারেও অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।
এ সময় ফিলাডেলফিয়া সিটির কাউন্সিলওম্যান অ্যাট লার্জ ড. নীনা আহমেদ এবং আপার ডারবি সিটির মেয়র এডোয়ার্ড ব্রাউন নিজ নিজ বক্তব্যে প্রবাসীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন সামনের নির্বাচনে ব্যাপকভাবে সংঘটিত হবার জন্য। পছন্দের প্রার্থীকে বিজয় দিতে পারলেই নিজেদের সমৃদ্ধির পথ আরো সুগম হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
বিশেষ সম্মানীত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন সমাজসেবক মো. ফজলুল হক, মো. জাফরউল্লাহ, বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির সিইও আলিম খান আকাশ, মেলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী সাখাওয়াত হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আজিমউদ্দিন, নূর কবীর রনি, ফারুক আহমেদ, তানভির মাহতাব, জলি দাস, সুরুজ আলম রুবেল প্রমুখ।
কম্যুনিটির কল্যাণে নিরন্তরভাবে কাজের জন্য ‘আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা-প্রেসিডেন্ট মো. কাদের মিয়া, নিরব সমাজকর্মী ইঞ্জিনিয়ার মো. ফজলুল হক, হাজী মো. জাফরউল্লাহকে বিপুল করতালির মধ্যে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় মেলা কমিটির পক্ষ থেকে।
মেলা উপলক্ষে খাবার-পোশাক আর খেলনার অর্ধ শতাধিক স্টলে সারাক্ষণই ভীড় পরিলক্ষিত হয়েছে। অনেকে কেনাকাটা করায় বিক্রেতারাও খুশী। তাপদাহের পরিপ্রেক্ষিতে আম ভর্তা আর ডাবের পানি বিক্রির পাশাপাশি আখের রস তৈরি করে স্বল্পমূল্যে তা বিক্রির ঘটনাটি অনেকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তৃষ্ণার্তদের তৃষ্ণা মেটাতে এর বিকল্প ছিল না।
বেলা গড়ানোর সাথে সাথে ওপচে পড়া নারী-পুরুষের ভীড় ভিন্ন এক আমেজে নেচে উঠে প্রতীক হাসান আর প্রিতম হাসানের গানে। এর আগে চিত্রনায়িকা মৌসুমী এবং স্থানীয় জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী জলিদাস, সালমান খানও সকলকে মুগ্ধ করেন নিজ নিজ পরিবেশনায়। আর এভাবেই গানের মূর্চ্ছনায় অভিভূত হয়ে প্রবাসীরা ঘরে ফিরেছেন।
সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন