ফসলের ক্ষতি, দিশাহারা হাওরের কৃষক

সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে হাওরের বোরো ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি ঢলের পানির চাপে ভাটি এলাকার বাঁধও এখন ঝুঁকিতে পড়েছে। এদিকে নেত্রকোনায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কাঁচা ধান কেটে ফেলছেন কৃষকরা। 

 

সুনামগঞ্জ : এ পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ১৯টি হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জেলার তাহিরপুর, দিরাই, ধর্মপাশা ও শাল্লা উপজেলায় এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। বছরের একটিমাত্র ফসল তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা এখন হাওরের কৃষক। পুনর্বাসনের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তার দাবি তাদের। সরকারি হিসাবে, ১৯টি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে জেলায় এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকারও বেশি।  জেলা কৃষি বিভাগ এসব ধানের ৪৯ ভাগ কর্তন দেখিয়েছে। তবে তলিয়ে যাওয়া হাওরে কর্তনের পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ দেখানো হয়েছে। কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সরকারি এ তথ্যকে কাল্পনিক আখ্যা দিয়েছেন। তারা বলছেন, ক্ষয়ক্ষতি অন্তত এর ৫ গুণ বেশি। হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেছেন, কৃষকের ফসলের সুরক্ষার জন্য সরকার ১২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এই টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়নি। সময়মতো বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু না করা, জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ, প্রশাসন ও পাউবোর দুর্নীতির কারণে এই বিপর্যয়ের মূল কারণ।

 

নেত্রকোনা : হাওরবাসীর সারা বছরের পরিশ্রমের ফসল শুধু ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় এবার বাধ্য হয়েই কাঁচা ধান কেটে ফেলছেন কৃষকরা। বিক্রিও করছেন পানির দরে। আধা পাকা অবস্থায় কেটে ফেলায় তারা ধান পাচ্ছেন অর্ধেক। ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীর ধনু নদের পানি বেড়ে ফাটল ধরে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধে। ধান পাকার প্রায় এক মাস আগে এমন হুমকিতে সর্বস্ব হারানোর ভয়ে কৃষক আধা কাঁচা পাকা ধান কাটছেন। সেই সঙ্গে হাওর রক্ষায় বাঁধ পাহারা দিয়ে মেরামত কাজ করছেন।

 

এদিকে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত অব্যাহত থাকায় যে কোনো সময় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ‘যাই পাই তাই লাভ’ মনে করে অনেকেই ধান কাটা মাড়াই করছেন। সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নির্বাচন বিলম্বিত হলে জনগণই রাস্তায় নামবে : ফারুক

» ‘জুলাই স্পিরিটের’ প্রতারণাকারীরা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন : শিবির সভাপতি

» শুধুমাত্র ইসরায়েল ছাড়া ভারতের পাশে আজ কেউ নেই : পাকিস্তান

» আমার বিরুদ্ধে মানুষ জঘন্য মিথ্যাচার করছে : আসিফ নজরুল

» আ.লীগ নিষিদ্ধ ইস্যুতে তথ্য উপদেষ্টার ‘কয়েকটি কথা’

» আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশে জনতার ঢল, এখনও চলছে বিক্ষোভ

» প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের জুমার নামাজ আদায়

» আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সাগর গ্রেপ্তার

» আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সংলাপ চান: রাশেদ খান

» আ. লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না, সেটি বিএনপির বিষয় নয় : মঈন খান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ফসলের ক্ষতি, দিশাহারা হাওরের কৃষক

সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে হাওরের বোরো ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি ঢলের পানির চাপে ভাটি এলাকার বাঁধও এখন ঝুঁকিতে পড়েছে। এদিকে নেত্রকোনায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কাঁচা ধান কেটে ফেলছেন কৃষকরা। 

 

সুনামগঞ্জ : এ পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ১৯টি হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জেলার তাহিরপুর, দিরাই, ধর্মপাশা ও শাল্লা উপজেলায় এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। বছরের একটিমাত্র ফসল তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা এখন হাওরের কৃষক। পুনর্বাসনের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তার দাবি তাদের। সরকারি হিসাবে, ১৯টি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে জেলায় এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকারও বেশি।  জেলা কৃষি বিভাগ এসব ধানের ৪৯ ভাগ কর্তন দেখিয়েছে। তবে তলিয়ে যাওয়া হাওরে কর্তনের পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ দেখানো হয়েছে। কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সরকারি এ তথ্যকে কাল্পনিক আখ্যা দিয়েছেন। তারা বলছেন, ক্ষয়ক্ষতি অন্তত এর ৫ গুণ বেশি। হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেছেন, কৃষকের ফসলের সুরক্ষার জন্য সরকার ১২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এই টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়নি। সময়মতো বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু না করা, জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ, প্রশাসন ও পাউবোর দুর্নীতির কারণে এই বিপর্যয়ের মূল কারণ।

 

নেত্রকোনা : হাওরবাসীর সারা বছরের পরিশ্রমের ফসল শুধু ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় এবার বাধ্য হয়েই কাঁচা ধান কেটে ফেলছেন কৃষকরা। বিক্রিও করছেন পানির দরে। আধা পাকা অবস্থায় কেটে ফেলায় তারা ধান পাচ্ছেন অর্ধেক। ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীর ধনু নদের পানি বেড়ে ফাটল ধরে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধে। ধান পাকার প্রায় এক মাস আগে এমন হুমকিতে সর্বস্ব হারানোর ভয়ে কৃষক আধা কাঁচা পাকা ধান কাটছেন। সেই সঙ্গে হাওর রক্ষায় বাঁধ পাহারা দিয়ে মেরামত কাজ করছেন।

 

এদিকে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত অব্যাহত থাকায় যে কোনো সময় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ‘যাই পাই তাই লাভ’ মনে করে অনেকেই ধান কাটা মাড়াই করছেন। সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com