সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক :অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় সেদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরে গতকাল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ৫ম ফরেন অফিস কনসালটেশনে এ আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
এ বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (দ্বিপাক্ষিক-পূর্ব ও পশ্চিম) ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রথম সহকারি সচিব সারা স্টোরি।
পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, কৌশলগত ও আঞ্চলিক বিষয়, অভিবাসন, বেসামরিক সামুদ্রিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা, নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক ফোরামসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে উন্নয়ন কার্যক্রমে চলমান সহযোগিতার জন্য অস্ট্রেলিয়ার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বৈঠকে কৃষি, শিক্ষা, ব্লু ইকোনোমি, জ্বালানি ও তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞ ও কারিগরি সহযোগিতা চাওয়া হয়। এসময় রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে তাদেরকে নিজ প্রত্যাবাসনে অস্ট্রেলিয়ার আরো সক্রিয় ভূমিকা কামনা করা হয়।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকেও অনিয়মিত অভিবাসন, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘবদ্ধ চোরাচালান ও মানবপাচার রোধে বাংলাদেশের সহযোগিতা চাওয়া হয়। এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রশংসা করা হয়। বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিরা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে বৈশ্বিক পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উভয় দেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ততার বিষয় উল্লেখ করে এ সমস্যা মোকাবিলায় অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়।
এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গী, সন্ত্রাস দমনসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বহুপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে এ অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের বিষয়ে উভয় দেশের দৃঢ়তা প্রতিফলিত হয়। এসময় দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং ভবিষ্যত সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়। বৈঠকে দু’দেশের সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করার পাশাপাশি পারস্পারিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উৎসাহ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সফর বিনিময়সহ দু’দেশের নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তাদের নিয়মিত যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়।
বৈঠকে উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ হাইকমিশনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ফরেন অফিস কনসালটেশনের পরবর্তী বৈঠক ২০২৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।