প্যানিক অ্যাটাক: কখন হয়, রোগীর কেমন অনুভূতি হয়?

ছবি সংগৃহীত

 

ব্যক্তিভেদে মানসিকতা একেক জনের একেক রকম হয়ে থাকে। কেউ খুব শক্ত মনের হয়। কেউবা অল্পতে কষ্ট পায়, হতাশ হয়। ভয় আর চিন্তার সমন্বয়ে সৃষ্ট একটি অনুভূতি প্যানিক অ্যাটাক। সচরাচর মানুষ একে পাত্তা না দিলেও মনের স্বাস্থ্যের জন্য এটি মোটেও ভালো কিছু নয়।

প্যানিক অ্যাটাক কী? 

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্যানিক অ্যাটাক হলো এক ধরনের দুশ্চিন্তা। এটি বেশ গুরুতর এবং হঠাৎ করেই তৈরি হয়। কোনো একটি ঘটনা বা বিষয়ে যখন কারো মনে প্রচণ্ড ভয় আর দুশ্চিন্তা মিশেল অনুভূতি সৃষ্টি হয় তখন তাকে প্যানিক অ্যাটাক বলা হয়। এটি একটি মানসিক সমস্যা। এই সমস্যা হলে রোগীর হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। সঙ্গে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, শরীর কাঁপার মতো সমস্যা।

panic1

উদ্বেগের সংক্ষিপ্ত রূপ এটি যা শরীরে ভয়ের অনুভূতি সৃষ্টি করে। প্যানিক অ্যাটাকের কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ হলো- শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত হার্টবিট, মাথা ঘোরা, কাঁপুনি ও পেশীতে টান। কেউ প্যানিক অ্যাটাকের সম্মুখীন হলে তার রোজকার জীবন কঠিন হয়ে পড়ে।

প্যানিক অ্যাটাকের রোগীর কেমন অনুভূতি হয়? চলুন জেনে নিই বিস্তারিত- 

পরবর্তী অ্যাটাকের অপেক্ষা 

প্যানিক অ্যাটাকের সম্মুখীন হওয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবসময় পরবর্তী অ্যাটাকের অপেক্ষায় থাকেন। তাদের মাথায় সবসময় এটি নিয়ে চিন্তা ঘুরপাক খায়।

panic2

ঘরমুখী হওয়ার স্বভাব 

প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীরা এই ভেবে ভয় পেয়ে থাকেন যে তাদের যেকোনো জায়গায় প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে। এজন্য তারা বাড়িতে থাকতে পছন্দ করে। কারণ তারা মনে করে ঘরেই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকবে।

একাকী হয়ে যাওয়া 

নিজেকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং সামাজিকীকরণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করা প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুব স্বাভাবিক স্বভাব। কারণ তারা ভয় পায় যে সবার সঙ্গে মিশলে তারা যেকোনো সময় উদ্বিগ্ন হতে পারে।

panic3

সম্মান হারানো ভয় 

প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবসময় ভয়ে থাকে। তাদের মনে হয় অন্যরা তাদের এই স্বভাব নিয়ে হাসাহাসি করবে এবং তাদের কটু কথা শোনাবে।

প্যানিক অ্যাটাকের পর থেকেই এসব ব্যক্তিদের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয় যে এমন ঘটনা তাদের সঙ্গে বারংবার ঘটতে পারে। এমন ব্যক্তিদের মনে সর্বক্ষণ উদ্বিগ্নভাব চলতে থাকে, যার সঙ্গে যুদ্ধ করা একসময় বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে।

panic4

প্যানিক অ্যাটাক থেকে বাঁচার উপায় 

লম্বা শ্বাস নিন

প্যানিক অ্যাটাক শুরু হলেই লম্বা করে শ্বাস নিন। এরপর ধীরে ধীরে ছাড়ুন। মস্তিষ্ক অক্সিজেন পেতে শুরু করলে আস্তে আস্তে আক্রমণের তীব্রতা কমে আসবে।

পানি পান করুন

শরীরকে শান্ত করে। ঠাণ্ডা পানি স্নায়ুকে শান্ত করতে সাহায্য করে। সম্ভব হলে পানি দিয়ে মুখ ও চোখ পরিষ্কার করে আসুন। এতে শরীর যেমন শান্ত হবে, প্যানিক অ্যাটাকের মাত্রাও আস্তে আস্তে কমে আসবে।

panic5

মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন

একবার প্যানিক অ্যাটাক হলে কিছুক্ষণের মধ্যে পরবর্তী আক্রমণও হতে পারে। প্রথম অ্যাটাকের তুলনায় দ্বিতীয় অ্যাটাক আরও তীব্র হতে পারে। তাই পরবর্তী অ্যাটাকের আগেই নিজেকে মানসিকভাবে বোঝান।

কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলুন

প্যানিক অ্যাটাক হলে মন বিক্ষিপ্ত থাকে। সম্ভব হলে এসময় কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। এতে করে বিক্ষিপ্ত মন শান্ত হবে। এটি প্যানিক অ্যাটাকের সময় সবচেয়ে ভালো কাজ করে।

panic6

পছন্দের কাজ করার চেষ্টা করুন

এসময় যে কাজটি করলে মন শান্ত হয়, সেটি করার চেষ্টা করুন। মন বিক্ষিপ্ত থাকা অবস্থায় কাজ করা অনেকটা অসম্ভবই বটে, কিন্তু পছন্দের গান গাইলে কিংবা কাজ কর;এ প্যানিক অ্যাটাক থেকে দ্রুত প্রশান্তি মেলে। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মধুর ক্যান্টিনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল প্যানেল

» কর্মীদের সুরক্ষায় গার্ডিয়ানের সাথে ব্যাংক এশিয়ার পার্টনারশিপ

» দেশজুড়ে ওয়ালটন প্লাজায় বিশেষ ছাড় উপভোগ করবেন বাংলালিংকের অরেঞ্জ ক্লাবের সদস্যরা

» সিলেটে জীবনরক্ষাকারী যক্ষ্মা চিকিৎসায় আইসিডিডিআর,বি-এর পাশে দাঁড়ালো প্রাইম ব্যাংক

» উদ্ভাবনী আইটি সেবা নিয়ে টেক্সটেকে অংশ নিচ্ছে এক্সেনটেক

» চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে সর্বদলীয় বিক্ষোভ, বুধ-বৃহ্স্পতিবার হরতালের ডাক

» জামালপুরে মহিলা দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

» দেশের সর্বপ্রথম ডিজিটাল এসএমই লোন ‘সাফল্য’ নিয়ে এলো ব্র্যাক ব্যাংক

» উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চলছে ডাকসু নির্বাচন : ডিসি মাসুদ

» ভোট কেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা করছে ছাত্রদল: শিবির সেক্রেটারি

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্যানিক অ্যাটাক: কখন হয়, রোগীর কেমন অনুভূতি হয়?

ছবি সংগৃহীত

 

ব্যক্তিভেদে মানসিকতা একেক জনের একেক রকম হয়ে থাকে। কেউ খুব শক্ত মনের হয়। কেউবা অল্পতে কষ্ট পায়, হতাশ হয়। ভয় আর চিন্তার সমন্বয়ে সৃষ্ট একটি অনুভূতি প্যানিক অ্যাটাক। সচরাচর মানুষ একে পাত্তা না দিলেও মনের স্বাস্থ্যের জন্য এটি মোটেও ভালো কিছু নয়।

প্যানিক অ্যাটাক কী? 

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্যানিক অ্যাটাক হলো এক ধরনের দুশ্চিন্তা। এটি বেশ গুরুতর এবং হঠাৎ করেই তৈরি হয়। কোনো একটি ঘটনা বা বিষয়ে যখন কারো মনে প্রচণ্ড ভয় আর দুশ্চিন্তা মিশেল অনুভূতি সৃষ্টি হয় তখন তাকে প্যানিক অ্যাটাক বলা হয়। এটি একটি মানসিক সমস্যা। এই সমস্যা হলে রোগীর হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। সঙ্গে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, শরীর কাঁপার মতো সমস্যা।

panic1

উদ্বেগের সংক্ষিপ্ত রূপ এটি যা শরীরে ভয়ের অনুভূতি সৃষ্টি করে। প্যানিক অ্যাটাকের কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ হলো- শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত হার্টবিট, মাথা ঘোরা, কাঁপুনি ও পেশীতে টান। কেউ প্যানিক অ্যাটাকের সম্মুখীন হলে তার রোজকার জীবন কঠিন হয়ে পড়ে।

প্যানিক অ্যাটাকের রোগীর কেমন অনুভূতি হয়? চলুন জেনে নিই বিস্তারিত- 

পরবর্তী অ্যাটাকের অপেক্ষা 

প্যানিক অ্যাটাকের সম্মুখীন হওয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবসময় পরবর্তী অ্যাটাকের অপেক্ষায় থাকেন। তাদের মাথায় সবসময় এটি নিয়ে চিন্তা ঘুরপাক খায়।

panic2

ঘরমুখী হওয়ার স্বভাব 

প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত রোগীরা এই ভেবে ভয় পেয়ে থাকেন যে তাদের যেকোনো জায়গায় প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে। এজন্য তারা বাড়িতে থাকতে পছন্দ করে। কারণ তারা মনে করে ঘরেই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকবে।

একাকী হয়ে যাওয়া 

নিজেকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং সামাজিকীকরণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করা প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুব স্বাভাবিক স্বভাব। কারণ তারা ভয় পায় যে সবার সঙ্গে মিশলে তারা যেকোনো সময় উদ্বিগ্ন হতে পারে।

panic3

সম্মান হারানো ভয় 

প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সবসময় ভয়ে থাকে। তাদের মনে হয় অন্যরা তাদের এই স্বভাব নিয়ে হাসাহাসি করবে এবং তাদের কটু কথা শোনাবে।

প্যানিক অ্যাটাকের পর থেকেই এসব ব্যক্তিদের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয় যে এমন ঘটনা তাদের সঙ্গে বারংবার ঘটতে পারে। এমন ব্যক্তিদের মনে সর্বক্ষণ উদ্বিগ্নভাব চলতে থাকে, যার সঙ্গে যুদ্ধ করা একসময় বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে।

panic4

প্যানিক অ্যাটাক থেকে বাঁচার উপায় 

লম্বা শ্বাস নিন

প্যানিক অ্যাটাক শুরু হলেই লম্বা করে শ্বাস নিন। এরপর ধীরে ধীরে ছাড়ুন। মস্তিষ্ক অক্সিজেন পেতে শুরু করলে আস্তে আস্তে আক্রমণের তীব্রতা কমে আসবে।

পানি পান করুন

শরীরকে শান্ত করে। ঠাণ্ডা পানি স্নায়ুকে শান্ত করতে সাহায্য করে। সম্ভব হলে পানি দিয়ে মুখ ও চোখ পরিষ্কার করে আসুন। এতে শরীর যেমন শান্ত হবে, প্যানিক অ্যাটাকের মাত্রাও আস্তে আস্তে কমে আসবে।

panic5

মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন

একবার প্যানিক অ্যাটাক হলে কিছুক্ষণের মধ্যে পরবর্তী আক্রমণও হতে পারে। প্রথম অ্যাটাকের তুলনায় দ্বিতীয় অ্যাটাক আরও তীব্র হতে পারে। তাই পরবর্তী অ্যাটাকের আগেই নিজেকে মানসিকভাবে বোঝান।

কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলুন

প্যানিক অ্যাটাক হলে মন বিক্ষিপ্ত থাকে। সম্ভব হলে এসময় কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। এতে করে বিক্ষিপ্ত মন শান্ত হবে। এটি প্যানিক অ্যাটাকের সময় সবচেয়ে ভালো কাজ করে।

panic6

পছন্দের কাজ করার চেষ্টা করুন

এসময় যে কাজটি করলে মন শান্ত হয়, সেটি করার চেষ্টা করুন। মন বিক্ষিপ্ত থাকা অবস্থায় কাজ করা অনেকটা অসম্ভবই বটে, কিন্তু পছন্দের গান গাইলে কিংবা কাজ কর;এ প্যানিক অ্যাটাক থেকে দ্রুত প্রশান্তি মেলে। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com