ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শংকা থাকলেও এ শংকা কেটে গিয়ে নির্বাচন হবে। নির্বাচনে প্রতীক ব্যাপারটা ভাইটাল কিন্তু ডোমেনেটিং নয়। আগামী ৫ মাসে রাজনীতিতে আরো অনেক কিছুই ঘটবে, যা আমরা এখন কল্পনাও করতে পারছি না। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাস্তবসম্মত নয়। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টির মাধ্যমে নৌকা লাঙ্গলে উঠে পতিত আওয়ামী লীগের ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের লেজ নয়, মাথা।
ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কিছু প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে। তবে এ সব নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল বদলে দেওয়ার মতো প্রভাব ফেলবে না। জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্যের একটা সিলভার লাইন তৈরি হয়েছে। আশা করি এটি বাস্তবায়িত হবে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছোট ছোট দলগুলির একীভূত হবার যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, তা ইতিবাচক। নাগরিক ঐক্য ও গণঅধিকার পরিষদ এমন সিদ্ধান্ত নিলে আমি সেটা সমর্থন করবো। তবে জাতিসংঘের অধিবেশন প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে অনিবন্ধিত দলের একজন সদস্যের অন্তর্ভুক্তি সমর্থনযোগ্য নয়।
শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কপোর্রেশনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে মান্না এসব কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পতিত আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। তারা এখন গণধিকৃত। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। তাই বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে আমি আশা করি ডাকসু-জাকসু নির্বাচনের মতো নিঃসংকোচে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ উৎসবমুখর ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিবে। আদর্শবিহীন রাজনীতি অন্ধ। মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে না পারলে সেই দলের রাজনীতি ব্যর্থ। রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হলে, দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিগণিত হয়। বিগত আওয়ামী সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলেছিল। হাসিনা নিজেকে রাষ্ট্র মনে করে রাজা—বাদশা মনে করতো। দেশের জনগণকে গোলাম বানিয়ে রেখেছিল। হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে রাজা-প্রজা-গোলামের রাজনীতির অবসান ঘটেছে। ফ্যাসিস্টের কবর রচিত হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনার ভয়াল পরিণতি আমরা দেখেছি। যা থেকে সকলের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
কিরণ আরো বলেন, হঠাৎ করে ফ্যাসিস্ট বিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ জনগণকে শঙ্কিত করে তুলছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে কাঙ্খিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে দেশ মহাসংকটে পড়বে। জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসার শঙ্কা দেখা দিবে। তাই নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া আবশ্যক। তবে আসন্ন নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদলে যাতে দুর্নীতির পালা বদল না ঘটে সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন থাকতে হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে “ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না” শীর্ষক ছায়া সংসদে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, সাংবাদিক মাইদুর রহমান রুবেল ও সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।