পানি পান করেই বেঁচে আছেন ৪১ বছর

প্রাণির সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য খাবার অপরিহার্য। চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী না হলে অল্প অসুস্থতাতেও মানুষ খুব সহজে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগের আক্রমণও জোরালো হয়। এক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

মানুষ সচরাচর যে ধরনের খাবার খায়, সেগুলো হচ্ছে-শর্করা, প্রোটিন এবং ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার। এ ধরনের খাবার শরীরের জন্য অবশ্যই প্রয়োজন। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্ভর করে ভিটামিন এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের উপর। তবে খাবার না খেয়ে মানুষ কতদিন বাঁচতে পারবেন। খুব বেশি হলে ৩ থেকে ৭ দিন। কারণ নিউট্রিশনের অভাবে তিনি মারা যাবেন।

তবে ৬৩ বছরের এনগন ৪১ বছর পানি ছাড়া কোনো খাবারই খাননি। এমনটাই দাবি করছেন তিনি। একেবারেই সুস্থ আছেন। এই বয়সে তিনি যেসব যোগ ব্যায়াম বা পরিশ্রম করেন তা অনেক কমবয়সী মানুষও করতে পারেন না। এনগন বাস করেন ভিয়েতনামের লং আন প্রদেশে।

j
s24

তিনি ২১ বছর পর্যন্ত সব ধরনের খাবারই খেতেন। ভাত, মাছ, মাংস, সবজি সবকিছুই। তবে এতে তার কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। খাওয়ার পরই তার পেট ব্যথা ও বমি হত। অসুস্থ হয়ে পড়তেন এনগন। রক্ত পরীক্ষায় জানা যায় তিনি রক্তের একটি বিরল রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকরাও এর কোনো চিকিৎসা করতে পারছিলেন না। ধীরে ধীরে অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন। বাঁচার আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন এনগন।

 

ধীরে ধীরে সব ধরনের শক্ত খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে দেন তিনি। শুধু পানিই খেতেন। একজন চিকিৎসক তাকে পানি পান করার পরামর্শ দেন। সামান্য লবণ, চিনি মেশানো পানি পান করতে বলেন। পাশাপাশি ফলের রসও খাওয়ার পরামর্শ দেন তাকে।

অসুস্থতার জন্য ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছিলেন এনগন। ওই চিকিৎসক তাকে এই ডায়েট অনুসরণ করতে বলেন। এতে তার দৃষ্টি বাঁচাতে এবং এমনকি তার রক্তের রোগ নিরাময়েও সহায়তা করবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন। তবে সেই চিকিৎসকের নাম প্রকাশ করেননি এনগন। তিনি দাবি করেন ওই চিকিৎসক তার নাম প্রকাশ না করতে তাকে অনুরোধ করেছিলেন। তিনি এর কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন, যেহেতু এই চিকিৎসার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই তাই তাকে নিয়ে অনেকে সমালোচনা করতে পারে।

 

সেই চিকিৎসক মারা যাওয়ার পরও এনগন তার কথা রেখেছেন। এভাবে চলতে থাকে কিছুদিন। পানি পান করলে তেমন কোনো অসুবিধা হত না। বরং আগের চেয়ে ভালো অনুভব করেন। এরপর থেকে ৪১ বছর আর কোনো খাবারই মুখে তোলেননি এই নারী। পানির সঙ্গে একটু লবণ, চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করেন তিনি।

 

প্রথম প্রথম পরিবারের মানুষ এনগনকে খাবার খেতে জোর করতেন। তবে শক্ত খাবার না খেয়ে এনগন ভালো অনুভব করায় খাবার খেতেই চাইতেন না। পরিবারের মানুষ আশঙ্কা করতেন এনগন হয়তো এভাবে বেশিদিন বাঁচতে পারবেন না। তবে শত চেষ্টা করেও তাকে খাবার খাওয়াতে পারেননি তারা। এক সময় হাল ছেড়ে দেন। খেতেও বলতেন না তারা।

 

 

তবে এতে এনগনের তেমন কোনো অসুবিধাই হচ্ছিল না। বরং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন তিনি। শুধু চিনি, লবণ মেশানো পানি খেয়ে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এজন্য কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খেতে থাকেন। এতে তিনি আরও বেশি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেন।

 

এসবের পাশাপাশি এনগন নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে থাকেন। কঠিন সব ব্যায়াম আয়ত্ত করে ফেলেন। বর্তমানে তিনি লং অ্যান আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, একজন যোগব্যায়াম শিক্ষক। তিনি সবাইকে সবাস্থ্যক্র জীবনযাপনের জন্য নানান পরামর্শও দিয়ে থাকেন। এত বয়স হলেও তেমন কোনো শারীরিক জটিলতা নেই এনগনের।

সূত্র: ওডিটি সেন্ট্রাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২০ ফিলিস্তিনি নিহত

» মাহফুজের মাথায় বোতল নিক্ষেপ, অভিযুক্ত যুবককে খুঁজছে পুলিশ

» অনেকগুলো দাবি নিয়ে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠছে, এই পরিস্থিতির দায় সরকারের: মাসুদ কামাল

» ‘পালানো’র সময় বিমানবন্দর থেকে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আটক

» ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে নগর ভবনে তালা

» ‘সোশ্যাল মিডিয়া হোক দাওয়াত ও সত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যম’: জাহিদুল ইসলাম

» ইসকন-সম্পৃক্ত সংঘবদ্ধ চক্রের ফাঁদে বাংলাদেশের মুসলিম তরুণীরা, বিশেষ বার্তা দিলেন ইলিয়াস

» উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত

» রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিকে লাঞ্ছিত করা অপ্রত্যাশিত, সরকারের আচরণও সন্দেহজনক

» পাথরের কান্না

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পানি পান করেই বেঁচে আছেন ৪১ বছর

প্রাণির সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য খাবার অপরিহার্য। চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী না হলে অল্প অসুস্থতাতেও মানুষ খুব সহজে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগের আক্রমণও জোরালো হয়। এক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

মানুষ সচরাচর যে ধরনের খাবার খায়, সেগুলো হচ্ছে-শর্করা, প্রোটিন এবং ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার। এ ধরনের খাবার শরীরের জন্য অবশ্যই প্রয়োজন। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্ভর করে ভিটামিন এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের উপর। তবে খাবার না খেয়ে মানুষ কতদিন বাঁচতে পারবেন। খুব বেশি হলে ৩ থেকে ৭ দিন। কারণ নিউট্রিশনের অভাবে তিনি মারা যাবেন।

তবে ৬৩ বছরের এনগন ৪১ বছর পানি ছাড়া কোনো খাবারই খাননি। এমনটাই দাবি করছেন তিনি। একেবারেই সুস্থ আছেন। এই বয়সে তিনি যেসব যোগ ব্যায়াম বা পরিশ্রম করেন তা অনেক কমবয়সী মানুষও করতে পারেন না। এনগন বাস করেন ভিয়েতনামের লং আন প্রদেশে।

j
s24

তিনি ২১ বছর পর্যন্ত সব ধরনের খাবারই খেতেন। ভাত, মাছ, মাংস, সবজি সবকিছুই। তবে এতে তার কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। খাওয়ার পরই তার পেট ব্যথা ও বমি হত। অসুস্থ হয়ে পড়তেন এনগন। রক্ত পরীক্ষায় জানা যায় তিনি রক্তের একটি বিরল রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকরাও এর কোনো চিকিৎসা করতে পারছিলেন না। ধীরে ধীরে অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন। বাঁচার আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন এনগন।

 

ধীরে ধীরে সব ধরনের শক্ত খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে দেন তিনি। শুধু পানিই খেতেন। একজন চিকিৎসক তাকে পানি পান করার পরামর্শ দেন। সামান্য লবণ, চিনি মেশানো পানি পান করতে বলেন। পাশাপাশি ফলের রসও খাওয়ার পরামর্শ দেন তাকে।

অসুস্থতার জন্য ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছিলেন এনগন। ওই চিকিৎসক তাকে এই ডায়েট অনুসরণ করতে বলেন। এতে তার দৃষ্টি বাঁচাতে এবং এমনকি তার রক্তের রোগ নিরাময়েও সহায়তা করবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন। তবে সেই চিকিৎসকের নাম প্রকাশ করেননি এনগন। তিনি দাবি করেন ওই চিকিৎসক তার নাম প্রকাশ না করতে তাকে অনুরোধ করেছিলেন। তিনি এর কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন, যেহেতু এই চিকিৎসার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই তাই তাকে নিয়ে অনেকে সমালোচনা করতে পারে।

 

সেই চিকিৎসক মারা যাওয়ার পরও এনগন তার কথা রেখেছেন। এভাবে চলতে থাকে কিছুদিন। পানি পান করলে তেমন কোনো অসুবিধা হত না। বরং আগের চেয়ে ভালো অনুভব করেন। এরপর থেকে ৪১ বছর আর কোনো খাবারই মুখে তোলেননি এই নারী। পানির সঙ্গে একটু লবণ, চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করেন তিনি।

 

প্রথম প্রথম পরিবারের মানুষ এনগনকে খাবার খেতে জোর করতেন। তবে শক্ত খাবার না খেয়ে এনগন ভালো অনুভব করায় খাবার খেতেই চাইতেন না। পরিবারের মানুষ আশঙ্কা করতেন এনগন হয়তো এভাবে বেশিদিন বাঁচতে পারবেন না। তবে শত চেষ্টা করেও তাকে খাবার খাওয়াতে পারেননি তারা। এক সময় হাল ছেড়ে দেন। খেতেও বলতেন না তারা।

 

 

তবে এতে এনগনের তেমন কোনো অসুবিধাই হচ্ছিল না। বরং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন তিনি। শুধু চিনি, লবণ মেশানো পানি খেয়ে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এজন্য কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খেতে থাকেন। এতে তিনি আরও বেশি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেন।

 

এসবের পাশাপাশি এনগন নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে থাকেন। কঠিন সব ব্যায়াম আয়ত্ত করে ফেলেন। বর্তমানে তিনি লং অ্যান আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, একজন যোগব্যায়াম শিক্ষক। তিনি সবাইকে সবাস্থ্যক্র জীবনযাপনের জন্য নানান পরামর্শও দিয়ে থাকেন। এত বয়স হলেও তেমন কোনো শারীরিক জটিলতা নেই এনগনের।

সূত্র: ওডিটি সেন্ট্রাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com