ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভারতে পালিয়ে গেলেও নুরুল হক নুর ও লুৎফর রহমানের ওপর হামলা প্রমাণ করে হাসিনা ও তার দোসররা এখনও সক্রিয়।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি লুৎফর রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
দুদু বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষ আশা করেছিল দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই আমরা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, তা মর্মান্তিক। নুরুল হক নুর ও লুৎফর রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তাদেরকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছে। এ হামলার সঙ্গে জড়িতরা যত বড় ক্ষমতার অধিকারী হোক না কেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াবে, আর গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নির্যাতিতরা হবে বিপদগ্রস্ত।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ১৬ বছর ধরে মানুষের ওপর জুলুম করেছে, লুটপাট করেছে। আর জাতীয় পার্টি তার সমর্থন দিয়ে গেছে। ১৪ দল এখন পর্দার অন্তরালে চলে গেছে। হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু নুর এবং লুৎফরের ওপর হামলা এর মধ্য দিয়ে এই প্রমাণ পেয়েছি হাসিনা এবং তার দোসররা এখনো সক্রিয়।
ভারত বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রকে হত্যায় উৎসাহ দিয়েছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ দেশে যেভাবে লুটপাট করেছে। গুম হত্যা করেছে, গত ৫৪ বছরে এরকম আর কেউ করেনি। আর সেই খুনি গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। শুধু শেখ হাসিনাকেই নয় হাজার হাজার লুটপাটকারীদেরকেও আশ্রয় দিয়েছে দেশটি। দুদু বলেন, ভারত বন্ধুর নামে আমাদের দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়। আমাদেরকে বিপদে রাখতে চায়। আমাদের যখন পানি দরকার তখন তারা দেয় না। আর যখন দরকার নেই তখন তারা বাঁধ খুলে দেয়।
ভারতের উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আমরা ভারতের ধ্বংস চাই না। বন্ধুসুলভ আচরণ চাই। আপনারা গণহত্যাকারী, লুন্ঠনকারীদেরকে আশ্রয় দিয়েছে। আবার বাংলাদেশের বন্ধুত্ব দাবি করছেন; একসঙ্গে তো দুইটা যায় না। হয় বন্ধুত্বের ভূমিকা, নাহলে শত্রুর ভূমিকা পালন করবেন। শত্রুর ভূমিকা পালন করলেও বাংলাদেশের কিছু যায় আসে না। কারণ বাংলাদেশ গত এক বছরে দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হয়।
সমাবেশে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠা না হয় এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান যাতে ক্ষমতায় না আসতে পারেন, সেজন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এর জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, সাবেক এমপি জুতি, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি এবং জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবিরসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।