নীল ময়ূরের নাচ দেখতে ভিড়

কুমিল্লার হোমনার একটি খামারে পেখম তুলে নাচছে নীল ময়ূর। আর এই নাচ দেখতে প্রতিদিনই দিনভর ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামে এই খামারের অবস্থান। তরুণ উদ্যোক্তা মো. শাহ আলী এই খামার প্রতিষ্ঠা করেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাবরকান্দি এলাকায় সবাই এক নামে চেনেন ময়ূরের উদ্যোক্তা শাহ আলীকে। মাঠের পাশে তার খামার। এর পরিচর্যায় ব্যস্ত শাহ আলী।

 

দেখা গেল, নীল গলার ময়ূর পেখম খুলে নেচে চলেছে। তবে নতুন লোকজনের ভিড় বেশি হলে লজ্জা পাচ্ছিল ময়ূর। তখন একপর্যায়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয় সে। শাহ আলী ঘাস দিলে তবেই এগিয়ে আসে। ছবি তুলতে গেলে ময়ূর উড়তে শুরু করে। শাহ আলী সাবধান করেন উত্ত্যক্ত না করতে। কারণ ওড়াওড়ি করতে গিয়ে ধাক্কা লাগলে পাখা ভেঙে যেতে পারে।

 

উদ্যোক্তা মো. শাহ আলী বলেন, ২০১৯ সালে প্রথমে শখ থেকে দুটি ময়ূর কিনে আনেন। পরে আনেন আরও পাঁচটি। সেই থেকে ময়ূর বাড়তে থাকে। খামারের অবকাঠামো, ময়ূর, আর খাবার মিলে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে তিনি ২০ লাখ টাকার মতো বিক্রিই করেছেন। খামারে ৩০ লাখ টাকার মতো ময়ূর রয়েছে। শৌখিন মানুষজন এগুলো কিনে পালন করেন। কোনোটির জোড়া ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনোটির জোড়া লাখ টাকা। তিনি আরও জানান, পৈতৃকভাবে তাদের গরুর খামার ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি আবার খামার ব্যবসা শুরু করেন। এর জন্য তিনি ঈদের জামা কেনার টাকাসহ জমানো ১০ হাজার টাকা দিয়ে গরুর-বাছুর কেনেন। সেখান থেকে পুঁজি বাড়িয়ে গরুর খামার করেন। গরু থেকে তিনি ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার পুঁজি করেন। সেই টাকা দিয়েই ময়ূরের খামার করেন। বর্তমানে তার খামারে ১০৮টি ময়ূর আছে। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন ভেড়া ও তিতির পাখিও। 

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেকে লেখাপড়া করে চাকরির জন্য ঘোরেন। কাজ করতে চান না। কিন্তু কাজে কোনো লজ্জা নেই। কাজ মানুষকে সম্মানিত করে। হুট করে অনেক পুঁজি নিয়ে খামার করা ঠিক নয়। ছোট করে শুরু করলে ঝুঁকি কম থাকে। অবস্থা বুঝে খামার বড় করা যায়।’ শাহ আলী বলেন, ময়ূরে পরিশ্রম ও খরচ কম। এরা ঘাস আর দানাদার খাবার খায়।

 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, হোমনার খামারটি জেলার একমাত্র খামার। ময়ূর পালন করে তরুণরা বেকারত্ব দূর করতে পারে। ময়ূরের পাশাপাশি তিতির পাখি ও কোয়েল পালন করেও অনেকে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে ভারত: নীরব

» খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে

» ভিডিও বার্তায় মইন ইউ আহমেদ মুন্নি সাহার লাইভ বিডিআর বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে

» ক্ষমতায় গেলে দেশের সকল ফরম থেকে ধর্মালম্বী অপশন তুলে দেওয়া হবে—- ড. মঈন খান

» পলাশে হামলা ভাংচুরের পর বন্ধ হয়ে গেল জনতা জুটমিল, কর্মহীন হয়ে পড়েছে ৭ হাজার শ্রমিক

» বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার এক সপ্তাহ পরেও যে কারণে পর্যটক নেই

» হাতীবান্ধা রিপোর্টার্স ক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি মোস্তফা সম্পাদক রহিম

» ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইসলামপুর উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধন

» এক্সিম ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার অভিযোগে ১০ জন আটক

» ‘লুকিয়ে রাখা’ পুতিনের দুই ছেলের তথ্য ফাঁস!

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নীল ময়ূরের নাচ দেখতে ভিড়

কুমিল্লার হোমনার একটি খামারে পেখম তুলে নাচছে নীল ময়ূর। আর এই নাচ দেখতে প্রতিদিনই দিনভর ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামে এই খামারের অবস্থান। তরুণ উদ্যোক্তা মো. শাহ আলী এই খামার প্রতিষ্ঠা করেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাবরকান্দি এলাকায় সবাই এক নামে চেনেন ময়ূরের উদ্যোক্তা শাহ আলীকে। মাঠের পাশে তার খামার। এর পরিচর্যায় ব্যস্ত শাহ আলী।

 

দেখা গেল, নীল গলার ময়ূর পেখম খুলে নেচে চলেছে। তবে নতুন লোকজনের ভিড় বেশি হলে লজ্জা পাচ্ছিল ময়ূর। তখন একপর্যায়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয় সে। শাহ আলী ঘাস দিলে তবেই এগিয়ে আসে। ছবি তুলতে গেলে ময়ূর উড়তে শুরু করে। শাহ আলী সাবধান করেন উত্ত্যক্ত না করতে। কারণ ওড়াওড়ি করতে গিয়ে ধাক্কা লাগলে পাখা ভেঙে যেতে পারে।

 

উদ্যোক্তা মো. শাহ আলী বলেন, ২০১৯ সালে প্রথমে শখ থেকে দুটি ময়ূর কিনে আনেন। পরে আনেন আরও পাঁচটি। সেই থেকে ময়ূর বাড়তে থাকে। খামারের অবকাঠামো, ময়ূর, আর খাবার মিলে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে তিনি ২০ লাখ টাকার মতো বিক্রিই করেছেন। খামারে ৩০ লাখ টাকার মতো ময়ূর রয়েছে। শৌখিন মানুষজন এগুলো কিনে পালন করেন। কোনোটির জোড়া ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনোটির জোড়া লাখ টাকা। তিনি আরও জানান, পৈতৃকভাবে তাদের গরুর খামার ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি আবার খামার ব্যবসা শুরু করেন। এর জন্য তিনি ঈদের জামা কেনার টাকাসহ জমানো ১০ হাজার টাকা দিয়ে গরুর-বাছুর কেনেন। সেখান থেকে পুঁজি বাড়িয়ে গরুর খামার করেন। গরু থেকে তিনি ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার পুঁজি করেন। সেই টাকা দিয়েই ময়ূরের খামার করেন। বর্তমানে তার খামারে ১০৮টি ময়ূর আছে। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন ভেড়া ও তিতির পাখিও। 

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেকে লেখাপড়া করে চাকরির জন্য ঘোরেন। কাজ করতে চান না। কিন্তু কাজে কোনো লজ্জা নেই। কাজ মানুষকে সম্মানিত করে। হুট করে অনেক পুঁজি নিয়ে খামার করা ঠিক নয়। ছোট করে শুরু করলে ঝুঁকি কম থাকে। অবস্থা বুঝে খামার বড় করা যায়।’ শাহ আলী বলেন, ময়ূরে পরিশ্রম ও খরচ কম। এরা ঘাস আর দানাদার খাবার খায়।

 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, হোমনার খামারটি জেলার একমাত্র খামার। ময়ূর পালন করে তরুণরা বেকারত্ব দূর করতে পারে। ময়ূরের পাশাপাশি তিতির পাখি ও কোয়েল পালন করেও অনেকে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com