নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্ত চায় না এনসিপি

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্ত চায় না জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এমনটিই জানিয়েছেন।

 

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৮ তম দিন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

 

আখতার হোসেন বলেন, বহুদিন ধরে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। অতীতে ফ্যাসিবাদী পদ্ধতিতে একটি আইন করে একচেটিয়াভাবে রাষ্ট্রপতিকে নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। আজ আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এ প্রক্রিয়াটি আর একক সিদ্ধান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

 

আখতার হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতির সমন্বয়ে একটি ৫ সদস্যের সিলেকশন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে এবং রাষ্ট্রপতি সেই নাম অনুযায়ী নিয়োগ দিতে বাধ্য থাকবেন।

 

নির্বাচন কমিশনারদের জবাবদিহিতার বিষয়টি নিয়েও আজকের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, আগে কমিশনারদের আচরণ বা ব্যর্থতার জন্য তাদের জবাবদিহিতার কোনো আইনগত কাঠামো ছিল না। আজকের বৈঠকে সেই ঘাটতি পূরণে একটি নতুন আইন প্রণয়নের প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়েছে।

 

নির্বাচন কমিশন নিয়োগের বিধি সংবিধানে যুক্ত করতে রাজনৈতিক ঐকমত্যকে ঐতিহাসিক বলে মনে করে বলেছেন, অন্যান্য সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—এসব বিধানকে সংবিধানে সন্নিবেশ করতে হবে।

 

তিনি বলেন, শুরুতে ‌‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ (এনসিসি)-এর একটি ৯ সদস্যবিশিষ্ট প্রস্তাব ছিল। তবে পরবর্তীতে সেটি বাদ দিয়ে, এখন ‘নিয়োগ কমিটি’ ভিত্তিক প্রস্তাবনায় আলোচনা হচ্ছে।

 

বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি চায় এসব প্রতিষ্ঠান আইন দ্বারা পরিচালিত হোক, সংবিধানে না আনলেও চলবে। কিন্তু আইন খুব সহজেই বাতিল বা পরিবর্তনযোগ্য। তাই আমরা বলছি, যদি নিয়োগ কমিটির কাঠামো সংবিধানে যুক্ত না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যেকোনো সরকার এককভাবে আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা বদলে ফেলতে পারবে। এটি সংস্কার প্রক্রিয়াকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।

 

সংলাপের ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশনা নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা সম্ভব যদি রাজনৈতিক দলগুলো মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবগুলোতে পিছু হটতে না চায়। কিন্তু যদি সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার চেষ্টা হয়, তাহলে এনসিপি এই প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করবে।

 

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন, পুলিশ, স্থানীয় সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। অথচ এই তিনটি অঙ্গ ছাড়া কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না। আমরা আজ প্রস্তাব দিয়েছি যাতে এই বিষয়গুলো আলোচনার এজেন্ডায় আনা হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘কাইন্দেন না’ বলতেই আরও বেশি কাঁদলেন পলক

» ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্ফালন সহ্য করা হবে না: ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ

» এক চাঁদাবাজ খেদালে আরেক চাঁদাবাজ এসে হাজির হয়: হান্নান মাসউদ

» দুর্ঘটনাকে পুঁজি করে বিএনপি রাজনীতি করে না: মঈন খান

» শিবিরের আসল রূপ দেখতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান: নাছির উদ্দীন

» অতীতের বস্তাপচা ধারায় কোনো নির্বাচন চাই না: শফিকুর রহমান

» প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিমানবাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ

» এক বছর না যেতেই পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

» বাগেরহাটে পিলজংগ ও লখপুরে ইউনিয়ন বিএনপি’র নির্বাচন অনুষ্ঠি

» নরসিংদী পলাশ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাজী জাহিদ, সম্পাদক রনি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্ত চায় না এনসিপি

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্ত চায় না জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এমনটিই জানিয়েছেন।

 

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৮ তম দিন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

 

আখতার হোসেন বলেন, বহুদিন ধরে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। অতীতে ফ্যাসিবাদী পদ্ধতিতে একটি আইন করে একচেটিয়াভাবে রাষ্ট্রপতিকে নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। আজ আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, এ প্রক্রিয়াটি আর একক সিদ্ধান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

 

আখতার হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতির সমন্বয়ে একটি ৫ সদস্যের সিলেকশন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে এবং রাষ্ট্রপতি সেই নাম অনুযায়ী নিয়োগ দিতে বাধ্য থাকবেন।

 

নির্বাচন কমিশনারদের জবাবদিহিতার বিষয়টি নিয়েও আজকের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, আগে কমিশনারদের আচরণ বা ব্যর্থতার জন্য তাদের জবাবদিহিতার কোনো আইনগত কাঠামো ছিল না। আজকের বৈঠকে সেই ঘাটতি পূরণে একটি নতুন আইন প্রণয়নের প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়েছে।

 

নির্বাচন কমিশন নিয়োগের বিধি সংবিধানে যুক্ত করতে রাজনৈতিক ঐকমত্যকে ঐতিহাসিক বলে মনে করে বলেছেন, অন্যান্য সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—এসব বিধানকে সংবিধানে সন্নিবেশ করতে হবে।

 

তিনি বলেন, শুরুতে ‌‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ (এনসিসি)-এর একটি ৯ সদস্যবিশিষ্ট প্রস্তাব ছিল। তবে পরবর্তীতে সেটি বাদ দিয়ে, এখন ‘নিয়োগ কমিটি’ ভিত্তিক প্রস্তাবনায় আলোচনা হচ্ছে।

 

বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি চায় এসব প্রতিষ্ঠান আইন দ্বারা পরিচালিত হোক, সংবিধানে না আনলেও চলবে। কিন্তু আইন খুব সহজেই বাতিল বা পরিবর্তনযোগ্য। তাই আমরা বলছি, যদি নিয়োগ কমিটির কাঠামো সংবিধানে যুক্ত না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যেকোনো সরকার এককভাবে আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা বদলে ফেলতে পারবে। এটি সংস্কার প্রক্রিয়াকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।

 

সংলাপের ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশনা নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা সম্ভব যদি রাজনৈতিক দলগুলো মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবগুলোতে পিছু হটতে না চায়। কিন্তু যদি সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার চেষ্টা হয়, তাহলে এনসিপি এই প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করবে।

 

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন, পুলিশ, স্থানীয় সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। অথচ এই তিনটি অঙ্গ ছাড়া কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না। আমরা আজ প্রস্তাব দিয়েছি যাতে এই বিষয়গুলো আলোচনার এজেন্ডায় আনা হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com