নির্বাচন ইস্যুতে কোনো ব্লেম নিতে রাজি নই, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করবো: সিইসি

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখব বলে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি। নির্বাচন ইস্যুতে যেন আমাদের কোনো ব্লেম না দেওয়া হয়। এজন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখব।

 

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ২টা ২০ মিনিটে তিন সদস্যের প্রতিনিধি নিয়ে সিইসির রুমে প্রবেশ করেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত। তবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সিইসি ছাড়া অন্য কাউকে বৈঠকে রাখা হয়নি। বৈঠক শেষে সিইসি ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত আলাদা আলাদা সংবাদ সম্মেলন করেন।

 

সিইসি বলেন, তারা প্রস্তুতি বুঝতে এসেছিলেন। আমি বলেছি— এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি, বিশেষ ধরনের সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির কথা জানিয়ে আমাদের চিঠি দিয়েছিলেন। রমজানের আগে ভোটের কথা বলেছেন। আমরা প্রস্তুতি জোরদার করেছি।

 

তিনি বলেন, নানা ধরনের টানাপড়েন আছে। সেজন্য হয়তো সময়টা ঠিক করতে একটু সময় লেগেছে। আমরা চেয়েছি আমাদের ওপর যেন প্রস্তুতি পর্যাপ্ত নয়— এই ধরনের ব্লেম যেন না আসে। আমরা কোনো ধরনের ব্লেম নিতে রাজি নই। সেজন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি।

 

সিইসি বলেন, আমাদের দলগুলো দেশের স্বার্থে কাজ করে। শেষ পর্যন্ত তারা একটা সমঝোতায় আসবে দেখবেন। গতকাল থেকে প্রধান উপদেষ্টা আবার বৈঠক শুরু করেছেন। এটাও জানিয়েছি। বিশ্বাস করি একটা সমঝোতা হবে। মব কালচার যেটা উনি জানতে চেয়েছেন। আমি বলেছি ভোটের এখনো দেরি আছে। যারা সব সৃষ্টি করে তারা ভোটের সময় এলাকায় চলে যাবে। আর পাওয়া যাবে না। ঢাকা শহর তো ভোটের সময় খালি হয়ে যায়। তাদের আর পাওয়া যাবে না।

 

তিনি বলেন, চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স গুজব ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। আমি তাকে বলেছি, এই দেশটা গুজবের দেশ এবং তিনি আবার গুজব দূর করতে চাচ্ছেন। আমি তাকে গুজবে কান না দিতে বলেছি। আমরা পুরো নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেছেন, ভোটের দায়িত্বে ৯৫ শতাংশ সরকারের লোকবল এবং ৫ শতাংশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) লোক থাকেন। আমি বলেছি, সরকার যদি এই লোকবলের মাধ্যমে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসে, সেটা এক ধরনের বিষয়। কিন্তু যদি জনগণের পক্ষে ফলাফল আসে, তাহলে এর উদ্দেশ্য সৎ। অতীতে এই ব্যবস্থার অপব্যবহার হয়েছে, এবং তিনি আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন। আমি তাকে আরও বলেছি, সরকারকে বাদ দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, কারণ এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বাজেটসহ সরকারের সহযোগিতা অপরিহার্য। ৯৫ শতাংশ সরকারি লোকবল যে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিচ্ছেন না, তার কারণ সরকারপ্রধান কোনো দলের নন। স্বাধীনভাবে ইসি যেন কাজ করতে পারে, তিনি সেই সহযোগিতা করছেন। আমরা সরকারের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই সহযোগিতা পেয়েছি।

 

সিইসি বলেন, মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠকে কালো টাকার কথা এসেছে, এটা একেবারে বন্ধ করতে তো পারব না। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসেছি, সেটাও জানিয়েছি। আমি আশাবাদী, সর্বশক্তি দিয়ে শেষ পর্যন্ত ফাইট করব। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে সুন্দর নির্বাচন যেন হয়, সেই চেষ্ট করব।

 

তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করব। কানাডা যাব, সেখানে সুবিধা-অসুবিধা জানব। যারা ভোটের দায়িত্বে থাকেন, তারা ভোট দিতে পারে না। এবার সে ব্যবস্থা করব, এটা জানিয়েছি। এক্ষেত্রে আইটি সাপোর্টের পোস্টাল ব্যালটের কথা বলেছি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নুরের ওপর হামলা ‘ন্যাক্কারজনক’, সেনাবাহিনীর নিঃশর্ত দুঃখপ্রকাশের দাবি নাহিদের

» জনগণ জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে চায়: মুহাম্মদ শাহজাহান

» প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে এনসিপির ফুলেল শুভেচ্ছা

» ‘মুজিববাদী বামদের ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক জুনায়েদের

» ভিপি নুরকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর

» ডাকসু নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার

» নির্বাচন ইস্যুতে কোনো ব্লেম নিতে রাজি নই, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করবো: সিইসি

» অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস সেনাপ্রধানের

» জনগণের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে: সেনাপ্রধান

» প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠক ‌‌‘গুজব’: আইন উপদেষ্টা

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নির্বাচন ইস্যুতে কোনো ব্লেম নিতে রাজি নই, শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করবো: সিইসি

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখব বলে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি। নির্বাচন ইস্যুতে যেন আমাদের কোনো ব্লেম না দেওয়া হয়। এজন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখব।

 

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ২টা ২০ মিনিটে তিন সদস্যের প্রতিনিধি নিয়ে সিইসির রুমে প্রবেশ করেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত। তবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সিইসি ছাড়া অন্য কাউকে বৈঠকে রাখা হয়নি। বৈঠক শেষে সিইসি ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত আলাদা আলাদা সংবাদ সম্মেলন করেন।

 

সিইসি বলেন, তারা প্রস্তুতি বুঝতে এসেছিলেন। আমি বলেছি— এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি, বিশেষ ধরনের সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির কথা জানিয়ে আমাদের চিঠি দিয়েছিলেন। রমজানের আগে ভোটের কথা বলেছেন। আমরা প্রস্তুতি জোরদার করেছি।

 

তিনি বলেন, নানা ধরনের টানাপড়েন আছে। সেজন্য হয়তো সময়টা ঠিক করতে একটু সময় লেগেছে। আমরা চেয়েছি আমাদের ওপর যেন প্রস্তুতি পর্যাপ্ত নয়— এই ধরনের ব্লেম যেন না আসে। আমরা কোনো ধরনের ব্লেম নিতে রাজি নই। সেজন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি।

 

সিইসি বলেন, আমাদের দলগুলো দেশের স্বার্থে কাজ করে। শেষ পর্যন্ত তারা একটা সমঝোতায় আসবে দেখবেন। গতকাল থেকে প্রধান উপদেষ্টা আবার বৈঠক শুরু করেছেন। এটাও জানিয়েছি। বিশ্বাস করি একটা সমঝোতা হবে। মব কালচার যেটা উনি জানতে চেয়েছেন। আমি বলেছি ভোটের এখনো দেরি আছে। যারা সব সৃষ্টি করে তারা ভোটের সময় এলাকায় চলে যাবে। আর পাওয়া যাবে না। ঢাকা শহর তো ভোটের সময় খালি হয়ে যায়। তাদের আর পাওয়া যাবে না।

 

তিনি বলেন, চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স গুজব ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। আমি তাকে বলেছি, এই দেশটা গুজবের দেশ এবং তিনি আবার গুজব দূর করতে চাচ্ছেন। আমি তাকে গুজবে কান না দিতে বলেছি। আমরা পুরো নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেছেন, ভোটের দায়িত্বে ৯৫ শতাংশ সরকারের লোকবল এবং ৫ শতাংশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) লোক থাকেন। আমি বলেছি, সরকার যদি এই লোকবলের মাধ্যমে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসে, সেটা এক ধরনের বিষয়। কিন্তু যদি জনগণের পক্ষে ফলাফল আসে, তাহলে এর উদ্দেশ্য সৎ। অতীতে এই ব্যবস্থার অপব্যবহার হয়েছে, এবং তিনি আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন। আমি তাকে আরও বলেছি, সরকারকে বাদ দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, কারণ এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বাজেটসহ সরকারের সহযোগিতা অপরিহার্য। ৯৫ শতাংশ সরকারি লোকবল যে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিচ্ছেন না, তার কারণ সরকারপ্রধান কোনো দলের নন। স্বাধীনভাবে ইসি যেন কাজ করতে পারে, তিনি সেই সহযোগিতা করছেন। আমরা সরকারের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই সহযোগিতা পেয়েছি।

 

সিইসি বলেন, মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠকে কালো টাকার কথা এসেছে, এটা একেবারে বন্ধ করতে তো পারব না। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসেছি, সেটাও জানিয়েছি। আমি আশাবাদী, সর্বশক্তি দিয়ে শেষ পর্যন্ত ফাইট করব। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে সুন্দর নির্বাচন যেন হয়, সেই চেষ্ট করব।

 

তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করব। কানাডা যাব, সেখানে সুবিধা-অসুবিধা জানব। যারা ভোটের দায়িত্বে থাকেন, তারা ভোট দিতে পারে না। এবার সে ব্যবস্থা করব, এটা জানিয়েছি। এক্ষেত্রে আইটি সাপোর্টের পোস্টাল ব্যালটের কথা বলেছি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com