ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন মোনামি ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল–সমর্থিত প্রার্থীর সঙ্গে তীব্র বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনার পর তিনি ফেসবুকে আবেগঘন এক স্ট্যাটাসে নিজের নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠার কথা তুলে ধরেন।
যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে তখন সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন মোনামির সঙ্গে ছাত্রদল–সমর্থিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শেখ তানভির বারী হামিমের তীব্র বিতর্ক হয়। মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় মোনামি পদত্যাগের হুমকি দিলে হামিম পাল্টা মন্তব্য করেন— “আপনি পদত্যাগ করলে আমার কী যায় আসে?” পরে একাধিক ছাত্রদল কর্মীও উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
ঘটনার পর মোনামি দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে তার কষ্ট প্রকাশ করেন। লোকপ্রশাসন বিভাগের এই শিক্ষক, যিনি ছাত্র আন্দোলনে দেওয়া এক বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন, সরাসরি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে প্রশ্ন করেন।
তিনি লিখেছেন, “আমি কি কখনো পক্ষপাতদুষ্ট ছিলাম? আমি কি কখনো তোমাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চেয়েছি? আমি কি সর্বোচ্চ চেষ্টা করিনি আমার এখতিয়ারের মধ্যে তোমাদের সাহায্য করার? তাহলে আজ কেন এসব অভিযোগ?”
গত আগস্টে সহকারী প্রক্টর হিসেবে যোগ দেওয়া মোনামি জানান, তিনি কেবল প্রিয় শিক্ষাঙ্গনের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন, কোনো প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার ছিল না। নির্বাচন চলাকালে নিরাপত্তা–ইনচার্জ হিসেবে তিনি কঠোরভাবে আচরণবিধি বাস্তবায়ন করেছেন এবং এতে কোনো অনুশোচনা নেই বলেও জানান তিনি।
মোনামি আরও উল্লেখ করেন, তিনি সফলভাবে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসের কর্মসূচি, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান, ১৪ জুলাইয়ের কনসার্ট এবং ৫ আগস্টের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। অথচ এখন তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সহকর্মীকেও অপমানের মুখে পড়তে হয়েছে এবং নিরাপত্তা–ঝুঁকির কারণে তাকে দ্রুত প্রক্টর অফিসে ফিরে যেতে হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, “আমি শুধু একজন শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি অভিযুক্ত, হয়রানির শিকার (ক্যাম্পাসে ও অনলাইনে)। এই কষ্ট আমি কোনোদিন ভুলব না।”
তবে মোনামি নির্বাচন ব্যাহত করতে চাননি। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “তোমরা এতদিন পর এত সুন্দর একটি নির্বাচন করেছো। দয়া করে স্বার্থান্বেষী মহলকে এটা নষ্ট করতে দিও না।”
ঢাবির এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হলো— দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত ডাকসু নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা এখনো প্রবল।