নিত্যদিনের যে পাঁচ অভ্যাস বাড়িয়ে দিচ্ছে কোলেস্টেরলের মাত্রা

মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। তাইতো ‘কোলেস্টেরল’ শব্দটি শুনলেই ভয় পেয়ে যান অনেকেই। বিষয়টি ভয়ের হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ধরনের কোলেস্টেরল শরীরের জন্য খারাপ নয়।

 

মূলত দুই ধরনের কোলেস্টেরল মেলে মানবদেহে। ‘হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা ‘এইচডিএল’ ও ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা ‘এলডিএল’। এর মধ্যে প্রথমটিকে ভালো কোলেস্টেরল বলে আর দ্বিতীয়টি শরীরের ক্ষতি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে অনিয়ন্ত্রিত জীবনচর্চা ও বেঠিক খাদ্যাভ্যাস এই দ্বিতীয় প্রকারের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকটাই।

চলুন তবে জেনে নেয়া যাক নিত্যদিনের কোন পাঁচ অভ্যাস বাড়িয়ে দিচ্ছে কোলেস্টেরলের মাত্রা-

 

ধূমপান:ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে না, বাড়িয়ে দেয় ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও। পাশাপাশি ধূমপান কমিয়ে দেয় এইচডিএলের মাত্রা। বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। তাছাড়া ধূমপানের ফলে সংবহনতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয় যা কোলেস্টেরলের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

 

স্থূলতা: ‘বডি মাস ইনডেক্স’ যদি ৩০ বা তার বেশি হয়ে যায় তবে, কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে ডায়াবেটিস, ডেকে আনতে পারে হৃদযন্ত্রের সমস্যা। উচ্চ কোলেস্টেরলের সঙ্গে এই ধরনের সমস্যা থাকলে প্রাণের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই। বিশেষজ্ঞদের মতে ওজন কমলে কমতে পারে কোলেস্টেরলের সমস্যাও।

 

মদ্যপান: মদ্যপান মারাত্মক হারে বাড়িয়ে দিতে পারে কোলেস্টেরলের পরিমাণ। নিয়মিত মদ্যপান ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি করে। বিশেষত যাদের অগ্ন্যাশয় ও লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এটি খুবই ঝুঁকি সাপেক্ষ। নারীদের ক্ষেত্রে উচ্চ ট্রাইগ্লিসারইড অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় স্ট্রোকের আশঙ্কা।

 

খাদ্যাভ্যাস: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস, বেশি তেল রয়েছে এমন খাবার বাড়িয়ে দেয় কোলেস্টেরলের মাত্রা। উল্টোদিকে কোলেস্টেরল বাগে আনতে খেতে হবে ওট, কাঠবাদাম। খাওয়া যেতে পারে মাছও। তবে সব কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবারই খারাপ নয়। যেমন ডিমে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান।

 

শরীরচর্চার অভাব: আলস্য ও কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মধ্যে কার্যত একটি চক্রাকার সম্পর্ক রয়েছে। একটি বাড়লে, বৃদ্ধি পাবে অপরটিও। নিয়মিত শরীরচর্চা কমাতে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা। পাশাপাশি শরীরচর্চা করলে নিয়ন্ত্রণে থাকে স্থুলতাও। শরীরচর্চা বলতে কিন্তু শুধু জিমযাত্রা নয়। নিয়মিত হাঁটা, সাইকেল চালানো ও সাঁতারের মতো অভ্যাসও সহায়তা করতে পারে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জনতাকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ মানবিক দেশ গড়তে চান তারেক রহমান

» ‘আর কারও যেন মাগুরার শিশুটির মতো করুণ পরিণতি না হয়’

» শেখ হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিৎ: আমান

» ‘সৌদি অর্থ দেয়নি, দ্বিগুণের বেশি টাকা ব্যয় প্রতিটি মডেল মসজিদে’

» হাসিনাকে ফেরত চাওয়া চিঠির জবাব এখনো দেয়নি ভারত : মুখপাত্র

» জামায়াত শাপলাকে, আওয়ামী লীগ শাহবাগকে প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করেছে: মাহফুজ আলম

» সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে মতামত দেবে বিএনপি : সালাহউদ্দিন

» ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : প্রিন্স

» আগের বিচারগুলো হলে আছিয়াকে এভাবে হারাতে হতো না : সারজিস

» ভূমিকম্পে কাঁপল ইতালি, আতঙ্কে রাস্তায় মানুষ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নিত্যদিনের যে পাঁচ অভ্যাস বাড়িয়ে দিচ্ছে কোলেস্টেরলের মাত্রা

মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। তাইতো ‘কোলেস্টেরল’ শব্দটি শুনলেই ভয় পেয়ে যান অনেকেই। বিষয়টি ভয়ের হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ধরনের কোলেস্টেরল শরীরের জন্য খারাপ নয়।

 

মূলত দুই ধরনের কোলেস্টেরল মেলে মানবদেহে। ‘হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা ‘এইচডিএল’ ও ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা ‘এলডিএল’। এর মধ্যে প্রথমটিকে ভালো কোলেস্টেরল বলে আর দ্বিতীয়টি শরীরের ক্ষতি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে অনিয়ন্ত্রিত জীবনচর্চা ও বেঠিক খাদ্যাভ্যাস এই দ্বিতীয় প্রকারের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকটাই।

চলুন তবে জেনে নেয়া যাক নিত্যদিনের কোন পাঁচ অভ্যাস বাড়িয়ে দিচ্ছে কোলেস্টেরলের মাত্রা-

 

ধূমপান:ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে না, বাড়িয়ে দেয় ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও। পাশাপাশি ধূমপান কমিয়ে দেয় এইচডিএলের মাত্রা। বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। তাছাড়া ধূমপানের ফলে সংবহনতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয় যা কোলেস্টেরলের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

 

স্থূলতা: ‘বডি মাস ইনডেক্স’ যদি ৩০ বা তার বেশি হয়ে যায় তবে, কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে ডায়াবেটিস, ডেকে আনতে পারে হৃদযন্ত্রের সমস্যা। উচ্চ কোলেস্টেরলের সঙ্গে এই ধরনের সমস্যা থাকলে প্রাণের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই। বিশেষজ্ঞদের মতে ওজন কমলে কমতে পারে কোলেস্টেরলের সমস্যাও।

 

মদ্যপান: মদ্যপান মারাত্মক হারে বাড়িয়ে দিতে পারে কোলেস্টেরলের পরিমাণ। নিয়মিত মদ্যপান ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি করে। বিশেষত যাদের অগ্ন্যাশয় ও লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এটি খুবই ঝুঁকি সাপেক্ষ। নারীদের ক্ষেত্রে উচ্চ ট্রাইগ্লিসারইড অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় স্ট্রোকের আশঙ্কা।

 

খাদ্যাভ্যাস: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস, বেশি তেল রয়েছে এমন খাবার বাড়িয়ে দেয় কোলেস্টেরলের মাত্রা। উল্টোদিকে কোলেস্টেরল বাগে আনতে খেতে হবে ওট, কাঠবাদাম। খাওয়া যেতে পারে মাছও। তবে সব কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবারই খারাপ নয়। যেমন ডিমে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান।

 

শরীরচর্চার অভাব: আলস্য ও কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মধ্যে কার্যত একটি চক্রাকার সম্পর্ক রয়েছে। একটি বাড়লে, বৃদ্ধি পাবে অপরটিও। নিয়মিত শরীরচর্চা কমাতে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা। পাশাপাশি শরীরচর্চা করলে নিয়ন্ত্রণে থাকে স্থুলতাও। শরীরচর্চা বলতে কিন্তু শুধু জিমযাত্রা নয়। নিয়মিত হাঁটা, সাইকেল চালানো ও সাঁতারের মতো অভ্যাসও সহায়তা করতে পারে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com