দেলোয়ার হোসেন লাইফ ,বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া এলাকায় হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর পরিকল্পিতভাবে সহিংস জনতা (মব) গঠনের চেষ্টা প্রশাসনের সময়োচিত হস্তক্ষেপে ব্যর্থ হয়েছে।
২৪ মে স্থানীয় কিছু ধর্মব্যবসায়ী বনপাড়া বাজারে এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। তবে তারা ১০০ জনের বেশি লোক জড়ো করতে ব্যর্থ হয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেখানে উপস্থিত হলে অধিকাংশ লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করে, অল্প সংখ্যক লোক সেখানে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এর আগেই হেযবুত তওহীদের নেতৃবৃন্দ বড়াইগ্রাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) মাধ্যমে তাদের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচরে আনেন। বড়াইগ্রাম উপজেলা সভাপতি মো. জাহাঙ্গির আলমের পক্ষে দায়ের করা জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ইমাম কল্যাণ ঐক্য পরিষদ ও ওলামা-মাশায়েখগণ’ নামে একটি সংগঠন পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন মসজিদে উসকানিমূলক লিফলেট বিতরণ করে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। ঐ লিফলেটে সংগঠনটিকে ‘ইহুদি-খ্রিষ্টানদের তৈরি কুফরী মতবাদ’ হিসেবে চিত্রিত করা হয়।
এই গোষ্ঠীর নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন ইমাম বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুতবার আগে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের উত্তেজিত করে তুলছিলেন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রাত সাড়ে আটটার দিকে নাটোর জেলা কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, যাতে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত রাখতে হেযবুত তওহীদের জেলা সভাপতি আব্দুস সবুর খান ও আঞ্চলিক আমির আনিসুর রহমান সাকিব নেতৃত্ব দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
হেযবুত তওহীদের রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি ও মুখপাত্র মসিহ উর রহমান বলেন, “আমরা যা বলি না, করি না সেসব বিষয় আমাদের নামে ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা আলেম সমাজকে আহ্বান জানাই তারা যেন বিভ্রান্তিকর গুজব না ছড়ান এবং হেযবুত তওহীদের প্রকৃত আকিদা যাচাই করেন। ইসলামে মিথ্যা প্রচার হারাম এবং দেশের প্রচলিত আইনেও তা দণ্ডনীয় অপরাধ।”
নাটোর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি আব্দুস সবুর খান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তিনি দ্রুত উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় এনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।