ফাইল ছবি
ডেস্ক রিপোর্ট :রোজা শুরুর আগে হঠাৎ চড়ে যাওয়া মাছ-মাংসের বাজারেও অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে। এমনকি গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে কিছুটা কমতির দিকে মাছের দাম। রমজানের প্রথম দিকের তুলনায় চাহিদা কিছুটা কমে আসায় বাজারে কমতে শুরু করেছে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি থাকলে রমজানে মাছ-মাংসের দাম আর বাড়বে না।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকার বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত রমজানে বাজার চড়া থাকলেও এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া কমতির তালিকায় বেশিরভাগ নিত্যপণ্যই। আজকের বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা, যা রোজার প্রথম দিনে বিক্রি হয়েছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত। এমনকি কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা কমে সোনালি মুরগি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়।এছাড়াও আজকের বাজারে দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।
এদিকে আজকের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
এদিকে কিছুটা কমতির দিকে মাছের বাজারে। রমজানের শুরুর দিকের তুলনায় প্রায় সবধরনের মাছের দাম কমেছে অন্তত ২০-৫০ টাকা। আজকের বাজারে প্রতি কেজি বড় আকৃতির রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা ও দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছর রোজায় শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দাম চড়া থাকলেও এবার অনেকটাই স্বস্তি মিলছে বাজারে। ভোজ্যতেল, বেগুন ও লেবু বাদে প্রতিটি পণ্যের দামই কমতির দিকে। এভাবে সারা বছর থাকলে স্বস্তি ফিরবে বাজারে।
রফিকুল ইসলাম নামক এক ক্রেতা বলেন, আজ ব্রয়লার নিয়েছি ২০০ টাকা কেজিতে। শুনেছি একটু ভেতরে গেলেই ১৯০ টাকায়ও কেনা যায়। শবেবরাতের আগে মুরগির দাম বেড়ে হয়েছিল ২০/৩০ টাকা পর্যন্ত। বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই, স্থিতিশীলতাও নাই। আজ দেখছি কম, আবার কাল সকালেই যে বেড়ে যাবে না তার কোনো ঠিক নেই।
হাবিবুর রহমান নামক আরেক ক্রেতা বলেন, সরকার যদি বাজারের দিকে একটু নজর দেন, তাহলে জিনিসপত্রের দাম আরও কমে যাবে। এখন তো ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে দাম কমায় বাড়ায়। এই সরকারের কাছে আমাদের মতো মানুষের অনেক প্রত্যাশা।
এদিকে মাছ-মাংসের বাজার নিয়ে ক্রেতাদের সন্তুষ্টিতে খুশি বিক্রেতারাও। বিক্রেতারা বলছেন, রোজার মাঝামাঝিতে চলে আসায় সরবরাহের তুলনায় চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। বেচাকেনা কম থাকায় দামও কমতির দিকে। এমন পরিস্থিতি থাকলে রমজানে দাম আর বাড়বে না।
রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়াও বলেন, এ সপ্তাহে মাছের বাজারে দাম কিছুটা নিম্নমুখী, তবে বেচাকেনা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। দাম একটু কম থাকলে সবসময়ই বেচাকেনা ভালো থাকে। অনেক সময় সকালেই সব মাছ বিক্রি হয়ে যায়, আবার বাজার বাড়তি থাকলে বরফ দিয়ে পরদিনও বিক্রি করতে হয়। সূএ: ঢাকা পোস্ট ডটকম