নতুন এক সুপারনোভার সন্ধান

আগে কখনো ছিল না বা দেখা যায়নি, এমন এক সুপারনোভা আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। অনলাইন সায়েন্স এলার্ট এ খবর দিয়ে বলছে, বড় নক্ষত্র সৃষ্টির জন্য সুপারনোভা বিস্ফোরণ অত্যাবশ্যক বলে আমরা মনে করে থাকি। বড় বড় নক্ষত্রদের ভিতরকার জ্বালানি ফুরিয়ে যায়। মাধ্যাকর্ষণের কারণে তার কেন্দ্র ভেঙে যায়। ফলে বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে মনে করে আসছেন যে, কমপক্ষে এক রকমের বৃহৎ নক্ষত্রের জীবনের পরিসমাপ্তি সুপারনোভার মধ্য দিয়ে হয় না।

মনে করা হতো উলফ-রায়েত হিসেবে পরিচিত নক্ষত্রদের কেন্দ্রে ভাঙনের মধ্য দিয়ে তা কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্লাকহোলে পরিণত হয়। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, এসব নক্ষত্র মোটেও সুপারনোভা পর্যায়ে যায় না। উলফ-রায়েত নক্ষত্ররা হলো এখন পর্যন্ত পরিচিত সবচেয়ে ভারি নক্ষত্র।

তারা তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনের শেষপ্রান্তে। কিন্তু ভিতরকার জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়া এবং বিস্ফোরণের পর তাদের বাইরের স্তরগুলো তীব্র শক্তিসম্পন্ন মহাজাগতিক ঝড় সৃষ্টি করে।

এর ফলে চারপাশে ঘিরে থাকা নেবুলাগুলো হিলিয়াম, কার্বন এবং নাইট্রোজেনে আয়নিত হয়। তবে কোনো হাইড্রোজেন এই কাজ করে না। নক্ষত্রটির সারফেসে বা পৃষ্ঠে তখন তাপমাত্রা থাকতে পারে দুই লাখ ডিগ্রি কেলভিন। এর মধ্য দিয়ে এ নক্ষত্রগুলোকে সবচেয়ে উজ্বল তারকা হিসেবে দেখা যেতে পারে। যেহেতু বেশির ভাগ আলোই অতিবেগুনি রশি, তাই খালি চোখে তাদেরকে খুব উজ্বল দেখা যাবে না।

এ প্রক্রিয়ায় উলফ-রায়েত নক্ষত্রদের বাইরের স্তরগুলো বিলীন হলেও এর কেন্দ্রে যে ভর থাকে, তা সূর্য্যরে ভরের চেয়েও বেশি। এরপর তা আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুপারনোভা দশার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এর ভিতরকার জ্বালানি ফুরিয়ে যায়। এর ফলে কেন্দ্রীয় অংশ বিধ্বস্ত হয়ে নতুন এক রকম সুপারনোভা তৈরি করে। তবে কিছু বিজ্ঞানী বিস্ময় প্রকাশ করেছেন উলফ-রায়েত নক্ষত্রদের মৃত্যু হওয়ার পরিবর্তে সে একেবারে শান্ত, স্থির হয়ে যায় কিনা, তা নিয়ে।

সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, ন্যূনতম কিছু উলফ-রায়েত নক্ষত্র সুপারনোভায় পরিণত হয়। বিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে এসএন২০১৯এইচজিপি নামে পরিচিত সুপারনোভার বর্ণালি পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই সুপারনোভাটি আবিষ্কার করেছে জিউকি ট্রানসায়েন্ট ফ্যাসিলিটি। এই সুপারনোভার বর্ণালিতে উজ্বল আলোর বিকিরণ দেখা গেছে। এ থেকে তাতে কার্বন, অক্সিজেন এবং নিয়নের উপস্থিতি থাকার দিকে ইঙ্গিত দেয়। তবে হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম নেই।

বিজ্ঞানীরা ডাটাগুলোর দিকে আরো গভীর মনোযোগ দিলেন। তারা দেখতে পেলেন, কিছু আলোর নিঃসরণ সুপারনোভা থেকে কিছু উপাদান সরাসরি পাঠায় না। পক্ষান্তরে তারা হলো একটি নেবুলা, যা নক্ষত্র থেকে কমপক্ষে ১৫০০ কিলোমিটার দূরত্বে সরে যাচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আরেক দলের ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার জন্য জুলাই বিপ্লব হয়নি: নাহিদ

» বেড়েছে স্বর্ণের দাম

» ‘জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের বড় ব্যর্থতা’

» যারা প্রোফাইল লাল করেছিল তাদের জীবন লাল করে দেবে আ. লীগ, সতর্ক করলেন পার্থ

» উপদেষ্টা পরিষদের যে ‘ফিটনেস’, তা দিয়ে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব নয়: নুর

» ফেব্রুয়ারি-এপ্রিলকে লক্ষ্য রেখে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন: সিইসি

» বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই, আছে ছিনতাইকারী: ডিএমপি কমিশনার

» ইনসাফভিত্তিক মানবিক দেশ প্রতিষ্ঠার এখনই সময়: তারেক রহমান

» গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্য বজায় রাখার ডাক খালেদা জিয়ার

» নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি পরিবর্তন চায় : মির্জা ফখরুল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নতুন এক সুপারনোভার সন্ধান

আগে কখনো ছিল না বা দেখা যায়নি, এমন এক সুপারনোভা আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। অনলাইন সায়েন্স এলার্ট এ খবর দিয়ে বলছে, বড় নক্ষত্র সৃষ্টির জন্য সুপারনোভা বিস্ফোরণ অত্যাবশ্যক বলে আমরা মনে করে থাকি। বড় বড় নক্ষত্রদের ভিতরকার জ্বালানি ফুরিয়ে যায়। মাধ্যাকর্ষণের কারণে তার কেন্দ্র ভেঙে যায়। ফলে বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে মনে করে আসছেন যে, কমপক্ষে এক রকমের বৃহৎ নক্ষত্রের জীবনের পরিসমাপ্তি সুপারনোভার মধ্য দিয়ে হয় না।

মনে করা হতো উলফ-রায়েত হিসেবে পরিচিত নক্ষত্রদের কেন্দ্রে ভাঙনের মধ্য দিয়ে তা কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্লাকহোলে পরিণত হয়। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, এসব নক্ষত্র মোটেও সুপারনোভা পর্যায়ে যায় না। উলফ-রায়েত নক্ষত্ররা হলো এখন পর্যন্ত পরিচিত সবচেয়ে ভারি নক্ষত্র।

তারা তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনের শেষপ্রান্তে। কিন্তু ভিতরকার জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়া এবং বিস্ফোরণের পর তাদের বাইরের স্তরগুলো তীব্র শক্তিসম্পন্ন মহাজাগতিক ঝড় সৃষ্টি করে।

এর ফলে চারপাশে ঘিরে থাকা নেবুলাগুলো হিলিয়াম, কার্বন এবং নাইট্রোজেনে আয়নিত হয়। তবে কোনো হাইড্রোজেন এই কাজ করে না। নক্ষত্রটির সারফেসে বা পৃষ্ঠে তখন তাপমাত্রা থাকতে পারে দুই লাখ ডিগ্রি কেলভিন। এর মধ্য দিয়ে এ নক্ষত্রগুলোকে সবচেয়ে উজ্বল তারকা হিসেবে দেখা যেতে পারে। যেহেতু বেশির ভাগ আলোই অতিবেগুনি রশি, তাই খালি চোখে তাদেরকে খুব উজ্বল দেখা যাবে না।

এ প্রক্রিয়ায় উলফ-রায়েত নক্ষত্রদের বাইরের স্তরগুলো বিলীন হলেও এর কেন্দ্রে যে ভর থাকে, তা সূর্য্যরে ভরের চেয়েও বেশি। এরপর তা আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুপারনোভা দশার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এর ভিতরকার জ্বালানি ফুরিয়ে যায়। এর ফলে কেন্দ্রীয় অংশ বিধ্বস্ত হয়ে নতুন এক রকম সুপারনোভা তৈরি করে। তবে কিছু বিজ্ঞানী বিস্ময় প্রকাশ করেছেন উলফ-রায়েত নক্ষত্রদের মৃত্যু হওয়ার পরিবর্তে সে একেবারে শান্ত, স্থির হয়ে যায় কিনা, তা নিয়ে।

সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, ন্যূনতম কিছু উলফ-রায়েত নক্ষত্র সুপারনোভায় পরিণত হয়। বিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে এসএন২০১৯এইচজিপি নামে পরিচিত সুপারনোভার বর্ণালি পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই সুপারনোভাটি আবিষ্কার করেছে জিউকি ট্রানসায়েন্ট ফ্যাসিলিটি। এই সুপারনোভার বর্ণালিতে উজ্বল আলোর বিকিরণ দেখা গেছে। এ থেকে তাতে কার্বন, অক্সিজেন এবং নিয়নের উপস্থিতি থাকার দিকে ইঙ্গিত দেয়। তবে হাইড্রোজেন বা হিলিয়াম নেই।

বিজ্ঞানীরা ডাটাগুলোর দিকে আরো গভীর মনোযোগ দিলেন। তারা দেখতে পেলেন, কিছু আলোর নিঃসরণ সুপারনোভা থেকে কিছু উপাদান সরাসরি পাঠায় না। পক্ষান্তরে তারা হলো একটি নেবুলা, যা নক্ষত্র থেকে কমপক্ষে ১৫০০ কিলোমিটার দূরত্বে সরে যাচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com