আতাউর শাহ্, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর রাণীনগরে দিনে-দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে হামলা চালিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুরে উপজেলার নগরব্রিজ এলাকায় মাখলুদ হোসেন (২১) নামে এক কলেজ ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে কয়েক লাখ টাকা ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। বর্তমানে শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এসময় তারা ধারালো খুর দিয়ে মাখলুদের একটি কান কেটে দেয়, কোমড়ে আঘাত ও পাইপ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করে। মারপিটে মাখলুদ রাস্তায় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা ব্যাগে থাকা সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে একজন ভ্যান চালক মাখলুদকে উদ্ধার করে পরিবার ও স্বজনদের খবর দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত মাখলুদ হোসেন উপজেলার চকাদিন (ত্রিমোহনী) ওসমান গুনির ছেলে। সে নওগাঁ সরকারি কলেজের একজন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় মাখলুদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী মাখলুদের মা ফাতেমা জান্নাত বলেন, মাখলুদকে বিদেশ পাঠাবো। তাই সে তার মামার কাছ থেকে সাড়ে পাঁচলাখ টাকা নিয়ে সদর উপজেলার পারবাঁকাপুর গ্রাম থেকে বাড়িতে ফিরছিলো। পথে দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার নগরব্রিজের উপর ৮ থেকে ১০ জন সন্ত্রাসী মিলে মাখলুদের পথরোধ করে হামলা করে। এ সময় তাদের ধারালো খুর দিয়ে মাখলুদের কানে, কোমড়ে আঘাত করাসহ তাকে বেদম মারপিট করে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে রেখে টাকার ব্যাগ নিয়ে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই এলাকার কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ছেলেদের একটি সংঘবদ্ধ দল আছে যারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। তারাই আমার ছেলেকে হয়তো বা পূর্বশত্রুতার জের ধরে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি গরীব মানুষ। এখন এতোগুলো টাকা কিভাবে পূরণ করবো। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে এমন নির্মম ঘটনার সুবিচার প্রার্থনা করছি।
কাশিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবু বলেন, গত ৫ আগস্টে নতুন বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে নগরব্রীজ এলাকার কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ছেলেদের একটি সংঘবদ্ধ দল আত্মপ্রকাশ করেছে। যে দলের সদস্যরা বিভিন্ন সময় সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নানা ভাবে জিম্মি ও হয়রানী করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া তারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় মাখলুদ ছেলের উপর সন্ত্রাসী বর্বর হামলা চালিয়েছে ওই সংঘবদ্ধ দলের সন্ত্রাসীরা। এই বিষয়টি প্রশাসনকে একাধিকবার জানানোর পরও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে তাদের দৌরাত্ম দিন যতই যাচ্ছে উদ্বেগজনক হারে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাফিজ মো. রায়হান বলেন, খবর পেয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতালে পুলিশ গিয়ে তথ্যাদি সংগ্রহ করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।