দেশে মাদকাসক্ত মানুষের পরিমাণ ৮০ লাখের বেশি। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই যুবক। এই ৮০ শতাংশের মধ্যে আবার ৪৮ শতাংশ শিক্ষিত, আর ৪০ শতাংশ নিরক্ষর।’
রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের কি মনে আছে সেই ঐশির কথা কিংবা কেরানীগঞ্জের সেই পরিবারটির কথা? কী ভয়াবহ মাদকের ছোবল ছিল পরিবারগুলোর ওপর। মাদকের এই ছোবল থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হলে পরিবারের মাধ্যমে পরিবর্তন হতে হবে। পরিবার সচেতন হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। মনে রাখবেন, মাদকের সঙ্গে জড়িতদের শেষ গন্তব্য কিন্তু কারাগার অথবা ধুঁকে ধুঁকে তাদের মরতে হবে।
তিনি বলেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই ইয়াবা সেবন করে, এরপর আছে হেরোইন। এখন আইসবার এসেছে। এসব মাদকের কারবার লাভজনক হওয়ায় যুবসমাজ ঝুঁকে পড়ছে। আমাদের নিজেদের কর্তব্য পালন করতে হবে। এ জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে ভয়াবহতা অপেক্ষা করছে। সচেতনার মাধ্যমেও পরিবর্তন সম্ভব।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, এখন ১০ শতাংশ মানুষ সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। কেউ প্রথমেই মাদকে আসক্ত হয় না, প্রথমে সিগারেটে টান মারে, পরে অন্যকিছু বা গাঁজা খেয়ে সে শূন্যে ভেসে বেড়ায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, জিরোটলারেন্স। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন রয়েছে ২০৪১, যেখানে মাদকমুক্ত উন্নত দেশ গড়ার। মাদক থেকে বাঁচতে পারলে সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না।
মন্ত্রী বলেন, আমরা ডোপ টেস্টের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি। ব্যাপকভাবে ডোপ টেস্ট করার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যে যুবকই আক্রান্ত হবে তাকে আমরা হাসপাতালে পাঠাবো। সরকারি চাকরি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেও আমরা ডোপ টেস্ট করাবো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মাদক নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলাপ হচ্ছে। তারা আমাদের যথেষ্ঠ সহযোগিতা করছে। তবে ভয়াল মাদক আসে মিয়ানমার থেকে। দেশটির সঙ্গে আলাপ হলে অনেক কথা বলে, নিয়ন্ত্রণ করবে বলে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই করে না দেশটি। নাফ নদী পার হলেই মিয়ানমার, সে রুট দিয়ে আসে মাদক, আবার দুর্গম পাহাড় থেকে মাদক আসে। দেশটি থেকে মাদক যাতে ঠেকানো যায় এজন্যই আমরা বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করছি। এটা প্রতিরোধে আমরা হেলিকপ্টার দিয়েছি বিজিবিকে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন।