মেহেরুজ্জামান সেফু: বলুনতো মৃত মানুষের সাথে জীবিত মানুষের কি প্রেম হতে পারে? প্রেম জাগতিক নাকি আধ্যাত্মিক? এমন সব রহস্য ঘেরা প্রশ্নের উত্তর যে অস্বাভাবিক হবে সেটি হয়তো আমরা স্বাভাবিক ভাবেই বুঝতে পারছি। এইসব প্রশ্ন শোনার পর হয়তো সাথে সাথেই উত্তরগুলো জানার জন্য আমাদের মন কৌতুহলী হয়ে উঠবে। আর সেই কৌতুহল মেটাতে পড়তে হবে অতিপ্রাকৃত থ্রিলার ঘরানার উপন্যাস ‘দ্য ব্ল্যাক মুন’।
নিমগ্ন দুপুরের লেখা অতি প্রাকৃত রহস্যময় এই বইটি গ্রন্থ মেলা ২০২২ এ পাওয়া যাচ্ছে শিখা প্রকাশনীর ৪০৫, ৪০৬, ৪০৭ এবং ৪০৮ নং স্টলে। এটি লেখিকার লেখা পঞ্চম বই এবং প্রথম উপন্যাস।
এর আগেও দুপুর তিনটি একক কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন এবং একটি কবিতা সংকলন ‘অঙ্কিত অঙ্কুর’ সম্পাদনা করেছেন৷ এই সংকলনে বাংলাদেশের কিছু স্বনামধন্য গীতিকবি এবং কিছু কবিদের একই মলাটে উপস্থাপন করা হয়েছে।
পূর্বের চারটি বই সম্পর্কে দুপুর জানান, ‘এই কাব্যগ্রন্থ গুলো আমার হৃদয়ের খুব কাছের। কারণ লোকে আমায় কবি বলে ডাকে।’
লেখালেখিটা বেশ উপভোগ করেন তিনি। লেখালেখি নিয়ে নিমগ্ন জানান, ‘লেখালেখিটা হচ্ছে আমার অক্সিজেন। আর অক্সিজেন না থাকলে তো বেঁচে থাকা অসম্ভব। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লিখে যেতে চাই।’
দুপুর ‘দ্য ব্ল্যাক মুন’ সম্পর্কে বলেন, ‘বই হচ্ছে বিনোদনের সুস্থ মাধ্যম। আমরা তো আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে অনেক ব্যস্ত থাকি। ব্যস্ততা আমাদেরকে হাঁপিয়ে তোলে। হাঁপিয়ে ওঠা এই জীবন থেকে বের হওয়ার জন্য আমাদের একটা ঘোর প্রয়োজন। আমার এই বইটা হচ্ছে মূলত একটা ঘোর। এটা পাঠককে কল্পনার জগৎ থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে।’
লেখিকা আরো জানান, ‘এই বইটা অতিপ্রাকৃত রহস্য নিয়ে লেখা। আমরা কিন্তু মানুষ। আমাদের ভিতরে যে আত্মাটা আছে এটাই কিন্তু অতি প্রাকৃত বিষয়ের একটা বড় প্রমান। সুতরাং আত্মা যদি না থাকতো তাহলে আমাদের এই শরীরের কোন দাম থাকতো না। আমদের শারীরিক কাঠামোর ভেতর বয়ে চলেছি মহাজাগতিক আদেশ। এই মহাজাগতিক আদেশ এবং আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া এমন সব ঘটনা যেগুলোর আমরা ব্যাখ্যা পাই না। সেই ব্যাখ্যা খুঁজতে হলে এই বইটা পড়তে হবে।’
নিমগ্ন দুপুর, তরুণ প্রজন্মের একজন লেখিকা। নিজে তরুণ হয়ে চাইছেন অন্য তরুণরাও যেন লেখালেখি করেন। তাই তাদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দিতে কার্পন্য করেননি তিনি।
তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের মাথায় হুটহাট অনেককিছু চলে আসে। আমাদের সাথে সাথে তা লিখে ফেলা উচিত তবে এটা সাথে সাথেই যে প্রকাশ করতে হবে তা নয়। লিখে সেটা আগে নিজের কাছে রাখতে হবে। কারণ আমাদের মাথায় যেটা আসছে আমাদের মনে হচ্ছে সেটা ঠিক আছে। কিন্তু আমরা নিজেরাই যখন আবার ১০ থেকে ১৫ দিন পর সেটা পুনরায় দেখবো তখন নিজের কাছেই অনেক ভুল ধরা পড়বে। নিজেই বুঝতে পারবো যে এই জায়গা গুলোতে সংশোধন করতে হবে৷ এই জন্য আসলে প্রথমে প্রচুর পড়তে হবে। লেখালেখিকে শুধুই লেখালেখি নয়, সাধনা হিসেবে নিতে হবে৷’
এবারের বই মেলায় কেমন সাড়া ফেলছে ‘দ্য ব্ল্যাক মুন’? এমন প্রশ্নের উত্তরে দুপুর জানান, ‘আলহামদুলিল্লাহ, বইটাতে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমি স্টলে থাকা অবস্থায় দেখেছি যারা বই কিনতে এসেছে এবং এই বইটি হাতে নিচ্ছে তারা আর বইটি রেখে যাচ্ছে না।’
পাঠকের সাড়া আপনার মাঝে কেমন অনুভূতির সঞ্চার করছে কিংবা আনন্দ দিচ্ছে? দুপুর বলেন, ‘লেখক লেখালেখি করেই মূলত পাঠকদের জন্য। আর পাঠক যখন উৎসাহ নিয়ে সেটা পড়েন এবং কিনে নেন তখনকার অনুভূতি ঠিক বোঝানো যায় নাহ। ভিন্ন এক আনন্দ কাজ করে নিজের মধ্যে। এবং যে অনুপ্রেরণার সৃষ্টি হয় তা আমাদের লেখকদের সামনের দিনে লিখে যাওয়ার শক্তি বা রসদ যোগায়।’ সূএ:বাংলাদেশ জার্নাল