কামরাঙ্গীরচরে এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইনডেপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসান মিসবাহ ও ক্যামেরাপারসন সাজু মিয়াকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন, পদযাত্রা ও সমাবশে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৪টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী, সাংবাদিক সংগঠন, অ্যাক্টিভিস্ট, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
সমাবশে বক্তারা রাজধানীর কামরাঙ্গীচরের এসপিএ রিভার সাইড মেডিকেল সেন্টারে অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহের সময় এ দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তাদের দুই ঘণ্টা আটকে রেখে মারধরের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, ক্লিনিক মালিকের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের মারধরের সময় কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই মিলনও অংশ নেন৷ ঘটনার সময় তিনি এই দুই সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ ও অপেশাদারসুলভ আচরণ করেন। যে কারণে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এই সাময়িক বহিষ্কার যথেষ্ট নয়, তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। এছাড়া ওই হামলার ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার এবং আইনের কাঠগড়ায় আনতে হবে। তা না হলে সাংবাদিক সমাজ লাগাতার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
সমাবেশে উপস্থিত সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব আইন বাতিল করতে হবে। সমাবেশে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনেরও সমালোচনা করা হয়।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের প্রস্তাবিত খসড়ায় সাংবাদিক ও সাংবাদিকতার স্বার্থবিরোধী উপাদান থাকায় নিয়ে আমরা শঙ্কিত।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন বলেন, দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত সময়ের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন বৃহত্তর কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনে নামবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তফাজ্জাল হোসেন, দিনাজপুর সাংবাদিক সমিতি, ঢাকার (ডিজেএডি) সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমান, টিসিএর সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ইসাহক, কামরুজ্জামান সোহেল, শ্যামল সাগর, হেমন্ত সাদিক, সাহেদ সিদ্দিকী, মাহবুব আলম, শাকিল হাসান, মিল্টন আনোয়ার ও শাহরিয়ার অণির্বাণ।
এদিকে এ হামলার ঘটনায় করা মামলায় চারজনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন ডা. এইচএম উসমানী, মো. আবুল হাসনাত সুমন, মো. রাসেল হাওলাদার ও ডা. ডি এম এ আবু জাহিদ।
বুধবার চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মোহাম্মদ মোস্তফা আনোয়ার। অন্যদিকে আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন।