বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের আলোচিত দুই কন্যা জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার সময় তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে উঠার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশ বলছে, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে আদালতের কাগজপত্র দেখে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুই কিশোরীর বাবা ইমরান শরীফ জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে, দুই শিশুকে কখনই তাদের মা জাপানে নিয়ে যেতে পারবেন না। তিনি আরও জানান, এ বছরের মাঝামাঝি দুই শিশুর মা উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছিলেন। সেখানে গ্রীষ্মের ছুটিতে তাদের জাপানে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত তা খারিজ করে দেন। এরপর থেকে দুই শিশু কখনো মা, আবার কখনো বাবার জিম্মায় ঢাকায় বড় হচ্ছিলেন।
ইমরান জানান, আমার কাছে একটি সংবাদ আসে, দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে পালানোর উদ্দেশে বিমানবন্দরে গেছেন তাদের মা। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানালে ওদের আটকে দেয়। এরপর আমি উচ্চ আদালতের নির্দেশনার কাগজপত্র নিয়ে গেলে ফেরত পাঠায় ইমিগ্রেশন পুলিশ।
২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক নাকানো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরানের বিয়ে হয়। তাদের তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শিশুদের বয়স যথাক্রমে ১৩, ১০ ও ৭ বছর।
গত ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। এদিকে ১৮ জুলাই ছোট মেয়েকে তার নানির কাছে রেখে বাংলাদেশে আসেন এরিকো। এ দেশে এসে ১৯ আগস্ট দুই শিশুকে ফেরত নিতে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। ওই রিটের পর এক নির্দেশনায় মায়ের কাছে দুই মেয়েকে রাখার নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত হাইকোর্ট। ওই আদেশের পর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হয়।
এ আপিলের শুনানি শেষে মামলাটি নারি ও শিশু আদালতে তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন, একই সঙ্গে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সঙ্গে সঙ্গে বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্যে বলেছেন আপিল আদালত।