ফাইল ছবি
অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে এ কাজটি না করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
সোমবার (২১ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ আহ্বান জানান তিনি।
সারজিস আলম লেখেন, ‘বিভিন্ন দলের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি, নেতাকর্মীদের নিয়ে হাসপাতালে দগ্ধ আহতদের দেখতে যাওয়া আজকের জন্য দয়া করে বন্ধ করুন। আপনি হয়তো জানেন না আপনার অজান্তে এই পরিদর্শন কারও মৃত্যুর কারণও হতে পারে। প্লিজ।’
কমেন্টবক্সে এমন আহ্বানের কারণও উল্লেখ করেছেন তিনি।
এনসিপির এ নেতা লেখেন, ‘আপনি হয়তো ভালো নিয়তে গিয়েছেন। কিন্তু আপনার আশপাশে এমন অসংখ্য নেতাকর্মী আছেন যে আপনার সামনে ফুটেজ খেতে গিয়েছে, আপনাকে নিজের চেহারা দেখাতে গিয়েছে, রাজনৈতিকভাবে একটু এগিয়ে থাকতে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে গিয়েছে, কেউ হয়তো নিজের সাংগঠনিক সক্ষমতা দেখাতে গিয়েছে। এই সামগ্রিক বিষয়গুলো রাস্তায় জ্যাম তৈরি করতে পারে, হাসপাতালে পৌঁছাতে দেরি হতে পারে, একজন ডাক্তার, নার্স, ব্লাড ডোনার, স্বেচ্ছাসেবক কিংবা চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কারও পৌঁছাতে সামান্যতম দেরি একটা জীবন কেড়ে নিতে পারে। যেটা হয়তো আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘দগ্ধ হওয়ার পরও যে সব রোগী বেঁচে যায়, তারা পরবর্তীতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকেন ইনফেকশন বা জীবাণু সংক্রমণের কারণে। কারণ আমার-আপনার চামড়া দিয়ে জীবাণু সহজে ঢুকতে পারে না কিন্তু পুড়ে যাওয়া রোগীর চামড়া উন্মুক্ত ব্যাকটেরিয়ার জন্য। জীবাণু সংক্রমিত হয়ে multisystem organ dysfunction পর্যন্ত যেতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের হাসপাতালগুলোর পরিবেশও জীবাণুর প্রবেশের জন্য সহায়ক। তাই second বা third degree বার্নের রোগীদের পরবর্তীতে মৃত্যুঝুঁকি থেকে বাঁচানো আরেকটা বিরাট যুদ্ধ। এখন যদি রোগীর বেড সাইডে বা এমনকি ওই ইউনিটে অহেতুক ভিআইপিরা যান সেটা পুড়ে যাওয়া রোগীর জন্য উল্টো ক্ষতি। ভিআইপি ঘিরে প্রটোকল, মিডিয়া, উৎসুক জনতা তো আছেই। বার্ন রোগীর চিকিৎসার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ রোগীকে কমপ্লিকেশন থেকে বাঁচানো। তার ওপর অধিকাংশ আক্রান্ত ৭-১৫ বছর বয়সের মধ্যে। হাসপাতালে এদের দেখতে না গিয়ে আপনি রাজনীতিতে একটু পিছিয়ে পড়লেও মানুষ হিসেবে নিশ্চিত এগিয়ে থাকবেন।’