তীব্র এই গরমে যেসব বিষয়ে সতর্কতা জরুরি

প্রতীকী ছবি

 

 

বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।

 

বাংলাদেশের কোথাও কোথাও ইতোমধ্যে তাপমাত্রা ৪২.৫ ডিগ্রিকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

 

আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, কোনও এলাকায় যদি তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাহলে তাকে বলে তীব্র তাপপ্রবাহ।
প্রচণ্ড এই গরমের সময় মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেননা, সার্বিকভাবে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে উঠলে শরীর নিজেকে ঠাণ্ডা করার যে প্রক্রিয়া সেটি বন্ধ করে দেয়। যে কারণে এর বেশি তাপমাত্রা হলে তা যেকোন স্বাস্থ্যবান লোকের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই তীব্র এই গরমে কিছু বিষয়ে সতর্কতা জরুরি।

 

এই গরমে বিপদ এড়াতে কী করবেন, কী করবেন না

যেহেতু তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে, সুতরাং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে এমন চিন্তা মাথায় রেখে আগে থেকেই নিজেকে প্রস্তুত রাখুন।

 

১. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন এবং সব সময় ঘরে বিদ্যমান তাপমাত্রায় থাকা পানি ধীরে ধীরে পান করুন। ঠাণ্ডা ও বরফজাতীয় পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে খুব বেশি ঠাণ্ডা পানি পান করলে মানবদেহের ছোট রক্তনালীগুলো ফেটে যেতে পারে।

২. বাইরে যখন তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রিতে পৌঁছে যায়, তখন আপনি বাইরে থেকে ঘরে ফিরে কখনওই ঠাণ্ডা পানি পান করবেন না। সব সময় ধীরে ধীরে উষ্ণ পানি পান করুন।

 

৩. যদি বাইরে থাকার সময় হাত-পা রোদের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে বাসায় ফিরেই তড়িঘড়ি হাত-পা ধোবেন না। এক্ষেত্রে গোসল বা হাত-পা ধোঁয়ার আগে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।

 

৪. তীব্র গরমের এই সময়ে যতটা সম্ভব বাইরে বের না হওয়াই ভাল। বিশেষ করে বেলা ১১টার পর থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। এই সময়ে ঘরে থাকাই ভাল।

 

৫. জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হলে ছাতা, টুপি সঙ্গে রাখুন। পা ঢাকা জুতা ও হাল্কা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন। স্কিন টাইট বা সিন্থেটিক কিছু পরবেন না।

৬. তৃষ্ণার্ত বোধ না করলেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি পান করুন। সব সময় পানীয় সঙ্গে রাখুন।

৭. শরীরে অস্বস্তি হলে ওআরএস স্যালাইনে পান করতে পারেন। বাড়িতে শরবত, ফলের রস, লাচ্চি বানিয়েও পান করতে পারেন। এভাবে শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখতে হবে।

৮. বাইরে বের হলে বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না। যাদের পেশার জন্য রাস্তায় রোদে থাকতেই হবে, তারা কিছু সময় অন্তর ছায়া বা ঠাণ্ডায় থাকার চেষ্টা করুন।

৯. যারা বেশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকেন, যাদের কনকনে ঠাণ্ডা পানি পানের প্রবণতা থাকে এবং গরম থেকে বেরিয়েই দীর্ঘ সময় এসি ঘরে কাটান তাদের অসুখ চট করে ধরে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রচণ্ড গরম থেকে এসে এসি ঘরে ঢোকার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আবার এসি থেকে বেরিয়েও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে।

১০. হিট স্ট্রোক ও হিট ক্র্যাম্প এড়াতে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ছায়ায় বা অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা জায়গায় নিয়ে যান। চোখেমুখে পানির ঝাপটা দিন। পারলে ঠাণ্ডা পানিতে গা স্পঞ্জ করিয়ে দিন।

১১. পুরনো বা বাসি খাবার এড়িয়ে চলুন।

১২. প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করুন।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ঈদ উল আযহা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষন ও সীমান্ত দিয়ে পুশইন প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বিজিবি

» সৌদির সাথে মিল রেখে জামালপুরে ২০ গ্রামে ঈদুল আযহা উদযাপন

» আমিরাতে ঈদুল আজহা উদযাপন

» সীমান্তে গরু চোরাচালান কমলেও হত্যা থামেনি : আজাদ মজুমদার

» দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান

» এবার নিরাপত্তা নিয়ে শতভাগ কনফিডেন্ট আছি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা

» বিপুল পরিমাণ মাদকসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার

» ঢাকার একটি ঈদ জামাতও নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার

» তারুণ্যনির্ভর আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত জয়

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

তীব্র এই গরমে যেসব বিষয়ে সতর্কতা জরুরি

প্রতীকী ছবি

 

 

বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।

 

বাংলাদেশের কোথাও কোথাও ইতোমধ্যে তাপমাত্রা ৪২.৫ ডিগ্রিকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

 

আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, কোনও এলাকায় যদি তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাহলে তাকে বলে তীব্র তাপপ্রবাহ।
প্রচণ্ড এই গরমের সময় মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেননা, সার্বিকভাবে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে উঠলে শরীর নিজেকে ঠাণ্ডা করার যে প্রক্রিয়া সেটি বন্ধ করে দেয়। যে কারণে এর বেশি তাপমাত্রা হলে তা যেকোন স্বাস্থ্যবান লোকের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই তীব্র এই গরমে কিছু বিষয়ে সতর্কতা জরুরি।

 

এই গরমে বিপদ এড়াতে কী করবেন, কী করবেন না

যেহেতু তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে, সুতরাং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে এমন চিন্তা মাথায় রেখে আগে থেকেই নিজেকে প্রস্তুত রাখুন।

 

১. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন এবং সব সময় ঘরে বিদ্যমান তাপমাত্রায় থাকা পানি ধীরে ধীরে পান করুন। ঠাণ্ডা ও বরফজাতীয় পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে খুব বেশি ঠাণ্ডা পানি পান করলে মানবদেহের ছোট রক্তনালীগুলো ফেটে যেতে পারে।

২. বাইরে যখন তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রিতে পৌঁছে যায়, তখন আপনি বাইরে থেকে ঘরে ফিরে কখনওই ঠাণ্ডা পানি পান করবেন না। সব সময় ধীরে ধীরে উষ্ণ পানি পান করুন।

 

৩. যদি বাইরে থাকার সময় হাত-পা রোদের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে বাসায় ফিরেই তড়িঘড়ি হাত-পা ধোবেন না। এক্ষেত্রে গোসল বা হাত-পা ধোঁয়ার আগে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।

 

৪. তীব্র গরমের এই সময়ে যতটা সম্ভব বাইরে বের না হওয়াই ভাল। বিশেষ করে বেলা ১১টার পর থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। এই সময়ে ঘরে থাকাই ভাল।

 

৫. জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হলে ছাতা, টুপি সঙ্গে রাখুন। পা ঢাকা জুতা ও হাল্কা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন। স্কিন টাইট বা সিন্থেটিক কিছু পরবেন না।

৬. তৃষ্ণার্ত বোধ না করলেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি পান করুন। সব সময় পানীয় সঙ্গে রাখুন।

৭. শরীরে অস্বস্তি হলে ওআরএস স্যালাইনে পান করতে পারেন। বাড়িতে শরবত, ফলের রস, লাচ্চি বানিয়েও পান করতে পারেন। এভাবে শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখতে হবে।

৮. বাইরে বের হলে বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না। যাদের পেশার জন্য রাস্তায় রোদে থাকতেই হবে, তারা কিছু সময় অন্তর ছায়া বা ঠাণ্ডায় থাকার চেষ্টা করুন।

৯. যারা বেশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকেন, যাদের কনকনে ঠাণ্ডা পানি পানের প্রবণতা থাকে এবং গরম থেকে বেরিয়েই দীর্ঘ সময় এসি ঘরে কাটান তাদের অসুখ চট করে ধরে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রচণ্ড গরম থেকে এসে এসি ঘরে ঢোকার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আবার এসি থেকে বেরিয়েও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে।

১০. হিট স্ট্রোক ও হিট ক্র্যাম্প এড়াতে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ছায়ায় বা অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা জায়গায় নিয়ে যান। চোখেমুখে পানির ঝাপটা দিন। পারলে ঠাণ্ডা পানিতে গা স্পঞ্জ করিয়ে দিন।

১১. পুরনো বা বাসি খাবার এড়িয়ে চলুন।

১২. প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করুন।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com