সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক : তারা ভেবেছিল কয়েকটি আসনের লোভ দেখিয়ে আমাদের কিনে নেবে। কিন্তু যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে, তাদেরকে কেনার সাধ্য বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের নেই—সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত এক পথসভায় এমনই দৃঢ় উচ্চারণ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (১২ জুলাই) সাতক্ষীরার শহীদ আসিফ চত্বরে এনসিপির প্রধান পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাতক্ষীরা সফর ঘিরে নানা প্রস্তুতি শেষে এদিন নেতাকর্মীদের এক বৃহৎ সমাবেশ ঘটে।
পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির সাতক্ষীরা জেলার সমম্বয়ক কামরুজ্জামান বুলুর সভাপতিত্বে এবং উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলামের সঞ্চালনায় পথসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মেজবাহ কামাল ও চিকিৎসক তাসনীম জারা, সামান্তা সারমিন। এছাড়া মঞ্চে স্লোগান দেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট আমরা জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে দরজা খুলে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম—আসুন, জাতীয় সরকার গঠন করি, দেশটাকে পুনর্গঠন করি। কিন্তু তারা সে প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। তারা শুধু বলেছিল, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চাই, তারপর ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন চাই। ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা ছাড়া দেশের সংস্কারে তাদের কোনো আগ্রহ আমরা দেখতে পাইনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই না দেশের ভেতরে আর কোনো শত্রু তৈরি হোক। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়তে চাই। এখনও আমাদের দরজা খোলা আছে—নির্বাচনের ভাগ-বাটোয়ারা নয়, চাই দেশ গঠনের সাহসী উদ্যোগ। তবে এবার যদি সেই দরজা বন্ধ হয়, তাহলে জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।
সাতক্ষীরার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা উপকূলের মানুষ। ঘূর্ণিঝড় আর দুর্যোগের মধ্যেও দেশকে পাহারা দিয়েছেন। অথচ এখানকার মানুষ এখনও রেললাইনের সুবিধা পায়নি। ৫৪ বছরেও সাতক্ষীরায় রেললাইন পৌঁছায়নি—এটি লজ্জাজনক।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগের যে অব্যবস্থা সাতক্ষীরায় বিদ্যমান, তা পরিবর্তনের সময় এখনই। জলবায়ু পরিবর্তন, উপকূল সুরক্ষা এবং সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় নাগরিক পার্টি সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। সাতক্ষীরার মাটি ও মানুষের অধিকার রক্ষাই হবে আমাদের অগ্রাধিকার।
সাতক্ষীরায় এনসিপির সফরের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারা জুলাই ২০২৪ সালের আন্দোলনে আহত ও নিহত পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শহীদ আসিফ চত্বরে অনুষ্ঠিত পথসভা শেষে তারা নিউ মার্কেট হয়ে হাটের মোড় পর্যন্ত একটি পদযাত্রা করেন।