ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার ও ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন সাংবাদিকতার জন্য অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, প্রচলিত মিডিয়া থেকে বহুগুণ বেশি তথ্য ডিজিটাল মিডিয়াকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করছে। তথ্য-উপাত্ত পাঠক ও দর্শকের কাছে অডিও-ভিডিও কিংবা প্রিন্ট ভার্সনে গ্রহণযোগ্য করে উপস্থাপনের বিষয়টিও স্মার্ট যুগের সাংবাদিকতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
রোববার (২১ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ‘থার্ড জার্নালিজম স্টুডেন্টস ফেস্ট-২০২৩’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
বাংলাদেশ জার্নালিজম স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সভাপতি মো. হেদায়েতুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাকিব আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট মানুষের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, স্মার্ট মানুষ মানে পোশাকে বা আচার-আচরণে নয়, স্মার্ট মানুষ হচ্ছে ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারের দক্ষতা সম্পন্ন মানুষ।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭২ সালে সাংবাদিকতা যখন শুরু করি তখন লাইব্রেরিতে কাজ করতে হয়েছে। এখন লাইব্রেরিতে যাওয়ার দরকার হয় না, সার্চ ইঞ্জিন ব্রাউজিং করে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৮৭ সালের ১৬ মে শীশার হরফের পরিবর্তে কম্পিউটারে বাংলা লেখার অভিযাত্রা শুরু করি। তখন কাগজের পত্রিকার বাইরে ছিল বেতার এবং বিটিভি। আজকের বাংলাদেশ সে অবস্থায় নেই। যে ডিজিটাল যন্ত্রে যুক্ত সে নিজেই সাংবাদিক।
মন্ত্রী বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা মনে করে মানুষের স্বল্পতা তারা প্রযুক্তি দিয়ে পূরণ করবে। কিন্তু আমাদের জন্য হচ্ছে, মানুষের বিকল্প প্রযুক্তি নয়। বরং আমরা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবো এবং ব্যবহার করবো। অর্থাৎ প্রযুক্তি ও মানুষের মিশেলে আমাদের এগুতে হবে।
ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কে চলার দক্ষতা নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল তৃণমূল জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। এবছর ঈদযাত্রায় রেলের সব টিকিট অনলাইনে ক্রয়, জমির পর্চা এবং করোনাকালে ডিজিটাল সংযোগের মাধ্যমে মানুষের অচল জীবন সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় মোবাইল ফোনের ফোরজি নেটওয়ার্ক আমরা পৌঁছে দিয়েছি। দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে গেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ এবং তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে আইটিইউ এবং ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে বঙ্গবন্ধুর রোপণ করা বীজকে চারা গাছে রূপান্তর করেন।