ঠাকুরগাঁওয়ে বন্ধ হোটেল-রেস্তোরাঁ, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

ঠাকুরগাঁও শহর ও বাণিজ্যিক এলাকার অনেক রোজাদার খাবারের অভাবে সেহেরি খেতে পারেননি বলে জানা গেছে। খাবার না পেয়ে তারা শুধু পানি খেয়ে রোজা রেখেছেন। জেলাজুড়ে চলমান হোটেল-রেস্তোরাঁ-বেকারির শ্রমিক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘট ঘিরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

 

বুধবার  দুপুরে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় তারা হোটেলের জরিমানা বাতিল ও আটক শ্রমিকদের মুক্তি দাবি করেন।

ব্যবসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরের জেলা থেকে ঠাকুরগাঁও আসেন মানুষজন। এদের মধ্যে রোজাদারদের বড় অংশই সেহেরির জন্য হোটেলের ওপর নির্ভর করেন। এছাড়া শহরে স্থায়ী-অস্থায়ীভাবে বসবাসকারীদের অনেকে সেহেরির জন্য হোটেল বা রেস্তোরাঁর ওপর নির্ভর করেন। তবে আগেরদিন রাতে হঠাৎ হোটেল শ্রমিক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন তারা।

 

অসুস্থ ভাইকে নিয়ে পাশের উপজেলা থেকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন আব্দুল জব্বার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো ক্যানটিন নেই। এখানে সেহেরির সময় খাবার দেওয়া হয় না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা আমার মতো প্রায় ৪০০ স্বজন সেহেরির জন্য হোটেলের ওপর নির্ভরশীল। তবে ধর্মঘটের কারণে আজ কেউ সেহেরি খেতে পারেননি।

 

এদিকে দুই হোটেল শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অতুল কুমার পাল।

 

হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক ও বেকারি শ্রমিক নেতারা জানান, নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর অধীন ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’ পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার। পরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শহরের চৌরাস্তার হোটেল গাওসিয়া ও হোটেল রোজের ম্যানেজার প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার রুবেল হোসেন ও গাওসিয়া হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁওয়ে সব হোটেল-রেস্তোরাঁ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে হোটেল ও শ্রমিক সমিতি। জেলার বেকারিগুলোতে শ্রমিক না থাকার শঙ্কায় বেকারিও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিকরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ১০০৩ জন আসামি গ্রেফতার

» মা হারালেন আমার দেশ সম্পাদক

» গ্লোবাল সুপার লিগে ডাক পেলেন সাকিব, খেলবেন রংপুরের বিপক্ষে

» স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করলেন স্বামী

» আমরা রাজনীতি করতে চাই জনমানুষের স্বার্থে: আখতার হোসেন

» ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই

» আওয়ামী লীগ এখন ইতিহাস নয়, প্রাগৈতিহাসিক উপাখ্যান: রনি

» বিচার ও সংস্কারের পর স্থানীয় নির্বাচনের দাবি জামায়াতের

» ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টির ১৫ বছরের আমলনামা

» প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক থেকে জুলাইয়ের শেষ কারণ— ‘প্রশ্ন নয় প্রশংসা করতে এসেছি’

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঠাকুরগাঁওয়ে বন্ধ হোটেল-রেস্তোরাঁ, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

ঠাকুরগাঁও শহর ও বাণিজ্যিক এলাকার অনেক রোজাদার খাবারের অভাবে সেহেরি খেতে পারেননি বলে জানা গেছে। খাবার না পেয়ে তারা শুধু পানি খেয়ে রোজা রেখেছেন। জেলাজুড়ে চলমান হোটেল-রেস্তোরাঁ-বেকারির শ্রমিক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘট ঘিরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

 

বুধবার  দুপুরে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় তারা হোটেলের জরিমানা বাতিল ও আটক শ্রমিকদের মুক্তি দাবি করেন।

ব্যবসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরের জেলা থেকে ঠাকুরগাঁও আসেন মানুষজন। এদের মধ্যে রোজাদারদের বড় অংশই সেহেরির জন্য হোটেলের ওপর নির্ভর করেন। এছাড়া শহরে স্থায়ী-অস্থায়ীভাবে বসবাসকারীদের অনেকে সেহেরির জন্য হোটেল বা রেস্তোরাঁর ওপর নির্ভর করেন। তবে আগেরদিন রাতে হঠাৎ হোটেল শ্রমিক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন তারা।

 

অসুস্থ ভাইকে নিয়ে পাশের উপজেলা থেকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন আব্দুল জব্বার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো ক্যানটিন নেই। এখানে সেহেরির সময় খাবার দেওয়া হয় না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা আমার মতো প্রায় ৪০০ স্বজন সেহেরির জন্য হোটেলের ওপর নির্ভরশীল। তবে ধর্মঘটের কারণে আজ কেউ সেহেরি খেতে পারেননি।

 

এদিকে দুই হোটেল শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অতুল কুমার পাল।

 

হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক ও বেকারি শ্রমিক নেতারা জানান, নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর অধীন ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’ পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার। পরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শহরের চৌরাস্তার হোটেল গাওসিয়া ও হোটেল রোজের ম্যানেজার প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় রোজ হোটেলের ম্যানেজার রুবেল হোসেন ও গাওসিয়া হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁওয়ে সব হোটেল-রেস্তোরাঁ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে হোটেল ও শ্রমিক সমিতি। জেলার বেকারিগুলোতে শ্রমিক না থাকার শঙ্কায় বেকারিও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিকরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com