ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি এবং প্রাণ-প্রকৃতি—এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয় ব্যতিরেকে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস গ্রহণযোগ্য নয়। পরিবেশকে মূল ধারায় আনতেই হবে।
আজ রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও-এ অনুষ্ঠিত কৃষি উৎপাদন ও প্রাণ-প্রকৃতি সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। ‘উন্নয়ন করলে পরিবেশের ক্ষতি হবেই’—এমন মানসিকতা বদলাতে হবে।
পরিবেশ, বন উপদেষ্টা আরও বলেন, শিল্প দূষণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে গেলে বলা হয়, হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হুমকিতে পড়বে। কিন্তু নদীর উপর নির্ভরশীল লক্ষ মানুষের জীবিকা ও সুপেয় পানির নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যায়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কৃষিজমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে, যা কার্যত দস্যুতা। কৃষিজমি সুরক্ষা আইন পাস করতে কাজ করছে সরকার। না হলে বাংলাদেশে কৃষিজমি থাকবেই না।
পরিবেশ, বন উপদেষ্টা জৈব কৃষির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারে মাটি দূষিত হচ্ছে। আমাদের এখনই জৈব সার উৎপাদন ও বিতরণে উদ্যোগ নিতে হবে। বহুজাতিক কোম্পানির চাপ উপেক্ষা করে আমাদের নিজস্ব কৃষি মডেল গড়ে তুলতে হবে।
পরিবেশ সংরক্ষণে রাষ্ট্র ও ব্যক্তি পর্যায়ে ভোগের ধরন পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা একদিকে বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে অভিযোগ করি, অন্যদিকে অহেতুক এসি-লাইট ব্যবহার করি। কনজাম্পশন প্যাটার্ন এবং পরিবেশ—এই দুইকে একসাথে বিবেচনায় আনতে হবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, মধুপুর শালবন পুনরুদ্ধার প্রকল্প শুরু হয়েছে। ইউক্যালিপটাস গাছ সরিয়ে আবার শালগাছ ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি ফিরিয়ে আনা হবে। টেকসই ভবিষ্যতের জন্য নীতি, আইন ও আচরণে দ্রুত পরিবর্তন আনতেই হবে।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ; মাল্টিমোড গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু; আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব; ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী প্রমুখ।