ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ

ছবি সংগৃহীত

 

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় দানা আঘাত হানার শঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ। দানার সম্ভাব্য গতিপথ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে হলেও বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে সাতক্ষীরা উপকূলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে।

 

সারাদিন দেখা মেলেনি সূর্যের। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের অন্তত নয়টি পয়েন্টে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সামান্য জলোচ্ছ্বাসে এসব পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে গোটা জনপদ।

 

সূত্র মতে, শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটির দুটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, দাতিনাখালীর একটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা ও দৃষ্টিনন্দনে ৩০০ মিটার, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কালিনগর, হরিনগর বাজার ও কদমতলায় ৩৫০ মিটার, কৈখালী ইউনিয়নের বৈশখালীতে ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া রমজাননগরের দ্বীপ গ্রাম গোলাখালীর সবটাই ঝুঁকিপূর্ণ।

 

গাবুরার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই আমরা বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। বাঁধ ভাঙার কারণে আমাদের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়।

 

মুন্সিগঞ্জের সেন্ট্রাল কালিনগর গ্রামের জামিলা বেগম বলেন, একবার বাঁধ ভাঙলে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আর কোনো কিছু অবশিষ্ট থাকে না।

 

রমজাননগরের আব্দুল কাদের বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় গোলাখালীর মানুষ খুবই অসহায় হয়ে পড়ে। দ্বীপ হওয়ায় সেখানে কোনো সাইক্লোন শেল্টারও নেই। পানিতে ডুবে থই থই করে।

 

পশ্চিম দুর্গাবাটি গ্রামের মলিনা রানি রপ্তান বলেন, খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে আমাদের বসবাস। আইলার পর থেকে প্রতিবছরই পশ্চিম দুর্গাবাটিতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। আমাদের সবকিছু নদীর মধ্যে। জমি জায়গা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আবার ঝড় আসছে, কি হবে কে জানে।

 

গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, উপকূলের বেশ কিছু পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। পানির চাপ বাড়লে টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।

 

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রস্তুতি নিয়ে শ্যামনগরে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিও ইমরান হোসেন জানান, তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করার জন্য তিন হাজার জিও বস্তা, দুই হাজার প্লাস্টিক বস্তা, ১০ জিও রোল প্রস্তুত আছে। এগুলো দিয়ে এক কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করা যাবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» প্রেস কাউন্সিলের নতুন চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম

» ৯০ দিন অনাদায়ী থাকলেই খেলাপি হবে ব্যাংকঋণ

» জামিন পেলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম উর্মি

» আমি শুধুই ওর হাতের পুতুল: অভিষেক

» হাসনাত-সারজিসের গাড়িবহরে ট্রাকচাপা, যা বললেন জামায়াত আমির

» বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

» যৌথ বাহিনীর অভিযান, দুইজন গ্রেফতার

» সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যের পরও হারলো বাংলা টাইগার্স

» জাপানে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প

» হলমার্কের জেসমিনের জামিন শুনানি ৩ মাস মুলতবি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ

ছবি সংগৃহীত

 

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় দানা আঘাত হানার শঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ। দানার সম্ভাব্য গতিপথ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে হলেও বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে সাতক্ষীরা উপকূলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে।

 

সারাদিন দেখা মেলেনি সূর্যের। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের অন্তত নয়টি পয়েন্টে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সামান্য জলোচ্ছ্বাসে এসব পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে গোটা জনপদ।

 

সূত্র মতে, শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটির দুটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, দাতিনাখালীর একটি পয়েন্টে ২০০ মিটার, গাবুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর সোরা ও দৃষ্টিনন্দনে ৩০০ মিটার, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সেন্ট্রাল কালিনগর, হরিনগর বাজার ও কদমতলায় ৩৫০ মিটার, কৈখালী ইউনিয়নের বৈশখালীতে ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া রমজাননগরের দ্বীপ গ্রাম গোলাখালীর সবটাই ঝুঁকিপূর্ণ।

 

গাবুরার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই আমরা বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। বাঁধ ভাঙার কারণে আমাদের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়।

 

মুন্সিগঞ্জের সেন্ট্রাল কালিনগর গ্রামের জামিলা বেগম বলেন, একবার বাঁধ ভাঙলে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আর কোনো কিছু অবশিষ্ট থাকে না।

 

রমজাননগরের আব্দুল কাদের বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় গোলাখালীর মানুষ খুবই অসহায় হয়ে পড়ে। দ্বীপ হওয়ায় সেখানে কোনো সাইক্লোন শেল্টারও নেই। পানিতে ডুবে থই থই করে।

 

পশ্চিম দুর্গাবাটি গ্রামের মলিনা রানি রপ্তান বলেন, খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে আমাদের বসবাস। আইলার পর থেকে প্রতিবছরই পশ্চিম দুর্গাবাটিতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। আমাদের সবকিছু নদীর মধ্যে। জমি জায়গা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আবার ঝড় আসছে, কি হবে কে জানে।

 

গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, উপকূলের বেশ কিছু পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। পানির চাপ বাড়লে টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।

 

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রস্তুতি নিয়ে শ্যামনগরে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিও ইমরান হোসেন জানান, তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করার জন্য তিন হাজার জিও বস্তা, দুই হাজার প্লাস্টিক বস্তা, ১০ জিও রোল প্রস্তুত আছে। এগুলো দিয়ে এক কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার করা যাবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com