জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারসহ তিনজন গ্রেপ্তার

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট :২০ লাখ টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৩ মার্চ রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর ও নারায়ণগঞ্জে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. সুমন (৩৮), সুলতানা (২৮) ও হানিফ গাজী (৪৮)।

 

গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, একটি এ৪ সাইজের কাগজেই এই জাল টাকা কারবারি চক্র চারটি এক হাজার টাকার নোট তৈরি করত। এরপর নিজেরাই সরবরাহ করত বাজারে।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ২০ লাখ টাকার জাল নোট, আংশিক প্রিন্ট করা ১০০০ টাকা মূল্যমানের ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

 

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন।

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য পাওয়া যায়, সাইনবোর্ড এলাকা হতে কতিপয় জাল টাকার ব্যবসায়ী বেড়িবাঁধ রাস্তা দিয়ে জাল টাকাসহ মাদবর বাজার ঘাটের দিকে যাচ্ছে।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে মাদবর বাজারের বুড়িগঙ্গা গণপাঠাগার সমাজকল্যাণ সংস্থার সামনে বেড়িবাঁধে চেকপোস্ট পরিচালনা করে কামরাঙ্গীরচর থানার একটি টিম।

দুপুর দেড়টার দিকে অটোরিকশাযোগে জাল টাকার ব্যবসায়ীরা পোঁছলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে সুমন, সুলতানা ও হানিফ গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেহ তল্লাশি করে ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের মোট চার লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

 

ডিসি জসীম বলেন, গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় আরেক অভিযানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন কদমতলীর গ্যাস লাইন নামক এলাকায় গ্রেপ্তারকৃত সুমনের ভাড়া বাসা থেকে ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ১৬ লাখ টাকার জাল নোট, এক পাশে প্রিন্ট করা ১০০০ টাকা মূল্যমানের ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জাল নোট (আংশিক প্রিন্ট করা), একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, একটি কালার প্রিন্টার, জাল নোট তৈরির ১০টি ডাইস, তিনটি আঠার কৌটা, জাল নোট তৈরিতে ব্যবহৃত দুটি ফয়েল পেপার রোল, কালার প্রিন্টারের পাঁচটি কালির কৌটা, একটি রাবার কাটার, কাগজ ছিদ্র করার দুটি ভাইস ও জাল নোট তৈরির কাজে ব্যবহৃত এক বস্তা সাদা কাগজ উদ্ধার করা হয়।

 

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিসি লালবাগ বলেন, গ্রেপ্তাররা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের জাল নোট তৈরি করে রাজধানীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রয় করত। তারা আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ জাল নোট তৈরি করে সেগুলো সরবরাহ করার জন্য তাদের হেফাজতে রেখেছিল মর্মে স্বীকার করেছে। ইতোমধ্যে এবারের আসন্ন ঈদকে ঘিরে ২০ লক্ষাধিক টাকার জাল নোট বাজারে সরবরাহ করেছে।

 

গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে ডিসি জসীম উদ্দীন বলেন, জাল টাকা কারবারিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়ে থাকে। এই অপরাধ কিন্তু জামিনযোগ্য না। গ্রেপ্তারদের গতকালই বিজ্ঞ আদালতে পাঠালে আদালত প্রত্যেকের দুই দিন করে পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই জাল নোট তৈরি ও বিক্রয় করার অপরাধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করব, এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা হাসনাতের

» আমরা যারা ফ্যাসিস্ট বিরোধী দল আছি, তারা যেন ঐক্য ধরে রাখি: সারজিস

» সরকারের ইশারাতেই আবদুল হামিদ দেশ ছাড়েন : ভিপি নুর

» পলাশ থানা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন আলম মোল্লা

» ভোটের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চাই: মির্জা ফখরুল

» রাষ্ট্রপতির দেশ ত্যাগের দায় উপদেষ্টাদের নিতে হবে- ওসমান হাদী

» আমাদের লড়াইয়ের মূল বিষয় গণতন্ত্রের সংস্কার, যা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়ছি :মির্জা ফখরুল

» ৯ মাস পরে আব্দুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, এটা সরকারের বড় ব্যর্থতা : সারজিস

» দলের নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে এনসিপি, জানালেন নাহিদ ইসলাম

» জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও পদ ছাড়লেন স্নিগ্ধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারসহ তিনজন গ্রেপ্তার

ছবি সংগৃহীত

 

ডেস্ক রিপোর্ট :২০ লাখ টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৩ মার্চ রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর ও নারায়ণগঞ্জে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. সুমন (৩৮), সুলতানা (২৮) ও হানিফ গাজী (৪৮)।

 

গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, একটি এ৪ সাইজের কাগজেই এই জাল টাকা কারবারি চক্র চারটি এক হাজার টাকার নোট তৈরি করত। এরপর নিজেরাই সরবরাহ করত বাজারে।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ২০ লাখ টাকার জাল নোট, আংশিক প্রিন্ট করা ১০০০ টাকা মূল্যমানের ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

 

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন।

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য পাওয়া যায়, সাইনবোর্ড এলাকা হতে কতিপয় জাল টাকার ব্যবসায়ী বেড়িবাঁধ রাস্তা দিয়ে জাল টাকাসহ মাদবর বাজার ঘাটের দিকে যাচ্ছে।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে মাদবর বাজারের বুড়িগঙ্গা গণপাঠাগার সমাজকল্যাণ সংস্থার সামনে বেড়িবাঁধে চেকপোস্ট পরিচালনা করে কামরাঙ্গীরচর থানার একটি টিম।

দুপুর দেড়টার দিকে অটোরিকশাযোগে জাল টাকার ব্যবসায়ীরা পোঁছলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে সুমন, সুলতানা ও হানিফ গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেহ তল্লাশি করে ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের মোট চার লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

 

ডিসি জসীম বলেন, গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় আরেক অভিযানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন কদমতলীর গ্যাস লাইন নামক এলাকায় গ্রেপ্তারকৃত সুমনের ভাড়া বাসা থেকে ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ১৬ লাখ টাকার জাল নোট, এক পাশে প্রিন্ট করা ১০০০ টাকা মূল্যমানের ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জাল নোট (আংশিক প্রিন্ট করা), একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, একটি কালার প্রিন্টার, জাল নোট তৈরির ১০টি ডাইস, তিনটি আঠার কৌটা, জাল নোট তৈরিতে ব্যবহৃত দুটি ফয়েল পেপার রোল, কালার প্রিন্টারের পাঁচটি কালির কৌটা, একটি রাবার কাটার, কাগজ ছিদ্র করার দুটি ভাইস ও জাল নোট তৈরির কাজে ব্যবহৃত এক বস্তা সাদা কাগজ উদ্ধার করা হয়।

 

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিসি লালবাগ বলেন, গ্রেপ্তাররা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের জাল নোট তৈরি করে রাজধানীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রয় করত। তারা আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ জাল নোট তৈরি করে সেগুলো সরবরাহ করার জন্য তাদের হেফাজতে রেখেছিল মর্মে স্বীকার করেছে। ইতোমধ্যে এবারের আসন্ন ঈদকে ঘিরে ২০ লক্ষাধিক টাকার জাল নোট বাজারে সরবরাহ করেছে।

 

গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে ডিসি জসীম উদ্দীন বলেন, জাল টাকা কারবারিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়ে থাকে। এই অপরাধ কিন্তু জামিনযোগ্য না। গ্রেপ্তারদের গতকালই বিজ্ঞ আদালতে পাঠালে আদালত প্রত্যেকের দুই দিন করে পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই জাল নোট তৈরি ও বিক্রয় করার অপরাধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করব, এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com