জাল কাগজে ঋণের অর্থ আত্মসাতের মামলায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশি পিতা-পুত্র গ্রেফতার

ছবি সংগৃহীত

 

ভুয়া ট্যাক্স রিটার্নসহ বেকার হওয়া শ্রমিকদের পুনর্বহালের জন্য পিপিপি (প্যা চেক প্রটেকশন প্রোগ্রাম) কর্মসূচিতে মিলিয়ন ডলারের অধিক হাতিয়ে নেয়ার মামলায় নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনের দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফবিআই কর্তৃক ব্যাপক তদন্তের পর ৫ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারকৃতরা হলেন নূরুস সাফা (৬৫) এবং তার পুত্র মইদুল সাফা (৩৪)।

 

ব্রুকলীন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এরিক গঞ্জালেজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাকে চাঙ্গা করার অভিপ্রায়ে পিপিপি লোন মঞ্জুর করা হয় খুবই সহজ শর্তে। সেই সুযোগ নিয়ে পিতা-পুত্রের মালিকানাধীন রাহিল কন্ট্রাক্টিং ইনক’র নামে পিপিপি লোনের আবেদন করা হয়। আবেদনের সাথে জাল কাগজপত্র ছাড়াও ট্যাক্স রিটার্নের ভুয়া ডকুমেন্টও সাবমিট করা হয়। ট্যাক্স রিটার্নের জাল কাগজ তৈরির সময় ট্যাক্স প্রস্তুতকারির স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছিল বলে তদন্তে উদঘাটিত হয়। এরপর ফেডারেল গভর্নমেন্ট পিপিপি লোন হিসেবে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭৭ ডলার ৫০ সেন্ট মঞ্জুর করে। এ অর্থ ঐ কন্সট্রাকশন ফার্মের ব্যাংক একাউন্টে জমা হবার পরই তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করা হয়।

 

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আরও জানান, লোনের অর্থ ড্র করার পরই তারা নিউজার্সিতে ভুরহীস এবং পাইন হীল এলাকায় ৫ বেডরুমের দুটি বাড়ি ক্রয় করেছেন মোট ৩৯৩৬৭০ ডলারে। একইসময় ২০২১ মডেলের একটি বিএমডব্লিউ এম৫ স্পোর্টস সিডান গাড়ি ক্রয়ের ডাউন প্যামেন্ট হিসেবে ৭১ হাজার ডলার দিয়েছেন। তদন্তে আরও উদঘাটিত হয়েছে যে, ঋণের অবশিষ্ট অর্থ ব্যয় করা হয়েছে ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য। অর্থাৎ পিপিপি লোনের অর্থ ব্যয় করার একটি শর্তও তারা পালন করেননি বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর পিতা-পুত্রকে ব্রুকলীন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডিনা ডগলাসের এজলাসে হাজির করা হলে উভয়কে জামিন প্রদান করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ হচ্ছে ৩০ অক্টোবর। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুরি, জালিয়াতি এবং ব্যবসার ভূয়া কাগজপত্র সংরক্ষণের গুরুতর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

 

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সন্তান নুরুস সাফা ইতিপূর্বে উত্তর আমেরিকাস্থ সন্দ্বীপ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। জানা গেছে, করোনাকালিন লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়ানোর অভিপ্রায়ে ফেডারেল সরকার পিপিপি লোন বরাদ্দ করেছিল। খুব সহজশর্তে এই লোন মঞ্জুর করা হয় বেকার হওয়া শ্রমিক/কর্মচারিগণের বকেয়াসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাড়া/মর্টগেজ পরিশোধ করার জন্য। প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করাও যাবে। কিন্তু নিউইয়র্ক অঞ্চলের অনেক প্রবাসী জাল-কাগজ এবং ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে পিপিপি লোন হিসেবে মোটা অংক ড্র করেছেন বলে এফবিআইনসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছে। ইতিপূর্বে মিশিগান, শিকাগো, ম্যারিল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়াতে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। নিউইয়র্ক সিটিতে একটি বেসমেন্টে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব দেখিয়ে বেশ কয়েক মিলিয়ন ডলারের পিপিপি লোন ড্র করার ব্যাপারেও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারতের মিডিয়া ‘সার্কাস’ দেখাচ্ছে- বললেন সোনাক্ষী

» দুঃখের সঙ্গে বলছি, বিনিয়োগ নিয়ে সার্কাস হচ্ছে : আমীর খসরু

» আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনরতদের শাহবাগে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ছাত্রশিবির

» আ.লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার: তারেক রহমান

» দ্রুত সিদ্ধান্ত না আসলে সারা দেশ থেকে ঢাকা মার্চ : নাহিদ

» সরকার চাইলে ১৯ ধারায় আ. লীগ নিষিদ্ধ করতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

» আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন ছাত্র-জনতা

» বাগেরহাটে আধুনিক ‘পর্যটন মোটেল এ্যান্ড ইয়ুথ ইন উদ্বোধন   

» ইসলামপুরে ওরা ১১জন শহীদ স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

» ই-ক্যাব নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করলো ‘টিম ইউনাইটেড’

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জাল কাগজে ঋণের অর্থ আত্মসাতের মামলায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশি পিতা-পুত্র গ্রেফতার

ছবি সংগৃহীত

 

ভুয়া ট্যাক্স রিটার্নসহ বেকার হওয়া শ্রমিকদের পুনর্বহালের জন্য পিপিপি (প্যা চেক প্রটেকশন প্রোগ্রাম) কর্মসূচিতে মিলিয়ন ডলারের অধিক হাতিয়ে নেয়ার মামলায় নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনের দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফবিআই কর্তৃক ব্যাপক তদন্তের পর ৫ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারকৃতরা হলেন নূরুস সাফা (৬৫) এবং তার পুত্র মইদুল সাফা (৩৪)।

 

ব্রুকলীন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এরিক গঞ্জালেজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাকে চাঙ্গা করার অভিপ্রায়ে পিপিপি লোন মঞ্জুর করা হয় খুবই সহজ শর্তে। সেই সুযোগ নিয়ে পিতা-পুত্রের মালিকানাধীন রাহিল কন্ট্রাক্টিং ইনক’র নামে পিপিপি লোনের আবেদন করা হয়। আবেদনের সাথে জাল কাগজপত্র ছাড়াও ট্যাক্স রিটার্নের ভুয়া ডকুমেন্টও সাবমিট করা হয়। ট্যাক্স রিটার্নের জাল কাগজ তৈরির সময় ট্যাক্স প্রস্তুতকারির স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছিল বলে তদন্তে উদঘাটিত হয়। এরপর ফেডারেল গভর্নমেন্ট পিপিপি লোন হিসেবে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭৭ ডলার ৫০ সেন্ট মঞ্জুর করে। এ অর্থ ঐ কন্সট্রাকশন ফার্মের ব্যাংক একাউন্টে জমা হবার পরই তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করা হয়।

 

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আরও জানান, লোনের অর্থ ড্র করার পরই তারা নিউজার্সিতে ভুরহীস এবং পাইন হীল এলাকায় ৫ বেডরুমের দুটি বাড়ি ক্রয় করেছেন মোট ৩৯৩৬৭০ ডলারে। একইসময় ২০২১ মডেলের একটি বিএমডব্লিউ এম৫ স্পোর্টস সিডান গাড়ি ক্রয়ের ডাউন প্যামেন্ট হিসেবে ৭১ হাজার ডলার দিয়েছেন। তদন্তে আরও উদঘাটিত হয়েছে যে, ঋণের অবশিষ্ট অর্থ ব্যয় করা হয়েছে ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য। অর্থাৎ পিপিপি লোনের অর্থ ব্যয় করার একটি শর্তও তারা পালন করেননি বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর পিতা-পুত্রকে ব্রুকলীন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডিনা ডগলাসের এজলাসে হাজির করা হলে উভয়কে জামিন প্রদান করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ হচ্ছে ৩০ অক্টোবর। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুরি, জালিয়াতি এবং ব্যবসার ভূয়া কাগজপত্র সংরক্ষণের গুরুতর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

 

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সন্তান নুরুস সাফা ইতিপূর্বে উত্তর আমেরিকাস্থ সন্দ্বীপ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। জানা গেছে, করোনাকালিন লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়ানোর অভিপ্রায়ে ফেডারেল সরকার পিপিপি লোন বরাদ্দ করেছিল। খুব সহজশর্তে এই লোন মঞ্জুর করা হয় বেকার হওয়া শ্রমিক/কর্মচারিগণের বকেয়াসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাড়া/মর্টগেজ পরিশোধ করার জন্য। প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করাও যাবে। কিন্তু নিউইয়র্ক অঞ্চলের অনেক প্রবাসী জাল-কাগজ এবং ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে পিপিপি লোন হিসেবে মোটা অংক ড্র করেছেন বলে এফবিআইনসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছে। ইতিপূর্বে মিশিগান, শিকাগো, ম্যারিল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়াতে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। নিউইয়র্ক সিটিতে একটি বেসমেন্টে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব দেখিয়ে বেশ কয়েক মিলিয়ন ডলারের পিপিপি লোন ড্র করার ব্যাপারেও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com